বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে আবারও রাস্তায় নেমেছেন গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের আট কারখানার শ্রমিকেরা। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকার শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান করবেন তাঁরা।

টিএনজেড গ্রুপের ৮টি কারখানায় কর্মরত ৫ হাজার ২১৯ জন শ্রমিক ও কর্মচারীর মোট বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস ও ভাতা মিলিয়ে প্রায় ৫৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, ঈদুল ফিতরের আগে তাঁরা সাত দিন ধরে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন। ওই সময় শ্রম মন্ত্রণালয়ের মধ্যস্থতায় টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড, অ্যাপারেল প্লাস ইকো, বেসিক ক্লদিং লিমিটেড, বেসিক নিটওয়্যার লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডের শ্রমিকদের ঈদ উদযাপনের জন্য বকেয়া বেতন পরিশোধে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়। আশ্বাস দেওয়া হয় তিন কোটি টাকা পরিশোধের। শেষ পর্যন্ত ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। যাঁরা ওই সময় বকেয়া বাবদ এই অর্থ পেয়েছেন, তাঁরা জনপ্রতি ৯ হাজার ১০০ টাকা পান। আবার অনেক শ্রমিক কোনো অর্থ পাননি। আজকের কর্মসূচিতে অ্যাপারেল প্লাস ইকো, টিএনজেড অ্যাপারেলস, অ্যাপারেল আর্টসহ মোট আটটি কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক অংশ নেন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পুলিশের নিরাপত্তায় মিছিলটি বিজয়নগর থেকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ঘুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে টিএনজেড অ্যাপারেলসের শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বহুবার আলোচনায় বসেছি। আর আলোচনায় বসতে চাই না। আমরা চাই, মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা নিক। সেটি না হলে আগামীকাল থেকে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

সমাবেশে গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, তিন মাস ধরে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। কিন্তু কেউ কোনো পদক্ষেপ নেননি। এখন আর শ্রমিকের দোষারোপ না করে রাষ্ট্রকে দায় নিতে হবে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা আক্তারের সভাপতিত্বে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ৭ মে সব শ্রমিক ও কর্মচারীর বকেয়া বেতন–ভাতা পরিশোধ করা হবে। তবে শ্রমিকদের অভিযোগ, ৭ মে তাঁরা কারখানার সামনে উপস্থিত হলেও কেউ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। পরে বকেয়া বেতন–ভাতার দাবিতে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। পরে পুলিশ তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এতে ২০ জনের বেশি শ্রমিক আহত হন। তাই শ্রম ভবনের সামনে তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র স মন ট এনজ ড পর শ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নিখোঁজের ২৯ ঘণ্টা পর মধুমতী নদী থেকে জেলের মরদেহ উদ্ধার

মাগুরা ও ফরিদপুরের সীমান্তবর্তী মধুমতী নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার ২৯ ঘণ্টা পর আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে মহম্মদপুর উপজেলার পাচুড়িয়া ঘাট এলাকায় ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত শৌখিন খান (৪০) মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পাল্লা চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। গত বুধবার রাত দুইটার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চণ্ডিবিলা মাঝিপাড়া ঘাট এলাকায় ওই সংঘর্ষ হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, শৌখিন খান চার সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে ও এক অসুস্থ ছেলে আছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ১০টার দিকে শৌখিন খান ও হুমায়ুন শেখ নামের একজন স্থানীয় ব্যক্তি চায়না জাল ফেলে মাছ ধরতে নদীতে যান। একই সময় ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের জব্বার মোল্লা, রবিউল মোল্লা ও আরও একজন ব্যক্তি একই এলাকায় মাছ ধরছিলেন। রাত প্রায় পৌনে দুইটার দিকে মাছ ধরা শেষে শৌখিন ও হুমায়ুন বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় শৌখিন খানের নৌকা জব্বার মোল্লার জালের ওপর দিয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জব্বার মোল্লা বইঠা দিয়ে শৌখিনকে আঘাত করলে তিনি নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হন।

নিহত ব্যক্তির চাচাতো ভাই আলী আফজাল বলেন, ‘আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হঠাৎ ঝগড়া বাধিয়ে জব্বার ও রবিউল মোল্লা তাঁকে মেরে পানিতে ফেলে দেন। ভাইয়ের স্ত্রী এখন দুই সন্তান নিয়ে দিশাহারা। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’ এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ভাষ্য পাওয়া যায়নি।

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু ঘটনাটি ফরিদপুরের মধুখালী থানার আওতাধীন, সেহেতু মামলাটি সেখানেই হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ