রাজশাহী কলেজে হোস্টেল ভাড়া কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 14th, May 2025 GMT
রাজশাহী কলেজে হোস্টেলের সিট ভাড়া কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ মে) দুপুর ১২টার দিকে কলেজের প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি, আগে হোস্টেলের নির্ধারিত সিট ভাড়া ছিল ৫০০ টাকা, এটি বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। বাড়তি এই ভাড়া কমিয়ে আনতে হবে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ‘‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগে ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্যের কারণে হোস্টেলের বিদ্যুৎ বিলসহ নানাখাতে টাকা বকেয়া পড়ে। বর্তমান সময়ে হোস্টেল প্রশাসন পূর্বের সেই বকেয়া পরিশোধের জন্য আবাসিক শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত ভাড়া চাপিয়ে দিয়েছে।’’
এ সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘‘ঢাকা কলেজে সর্বোচ্চ খরচ হলেও ভাড়া নেয়া হয় ৪০০ টাকা। সেখানে দেশসেরা রাজশাহী কলেজে এমন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি চাপ। একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এমন অতিরিক্ত ভাড়া সিট ভাড়া অন্য আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আদায় করা হয় না।’’ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কলেজ প্রশাসনকে আগামী ২২ তারিখ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়।
আরো পড়ুন:
উগ্র আচরণ করায় কুবি শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার
সাম্য হত্যা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ ঢাবি উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি
রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন, ‘‘৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা মুসলিম হোস্টেল সুন্দর করে সাজানোর জন্য সহযোগিতা করছিলাম। তখন প্রশাসন বলেছিল, হোস্টেলের বিদ্যুৎ বিল বাকি আছে এবং বিভিন্ন আনুষাঙ্গিক খরচ দেখিয়ে তারা ভাড়া বৃদ্ধি করেছিল। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছিল, যে ১ বছর পরে এই ভাড়া কমানো হবে। তাহলে কেন ১ বছর পর আমাদের এই দাবি নিয়ে দাঁড়াতে হচ্ছে?’’
কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘এই অতিরিক্ত ভাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য অসহনীয় পর্যায়ে চলে গিয়েছে। তাই হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থীরাসহ কলেজের সকল সাধারণ শিক্ষার্থী এই ভাড়া কমানোর দাবি জানাতে আজকে মানববন্ধনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমর্থন জানিয়ে দ্রুততার সঙ্গে কলেজ প্রশাসন যেন একটি পদক্ষেপ নেয়। তা না হলে প্রতিবাদ চলবেই।’’
মানববন্ধন চলাকালে সেখানে যান অধ্যক্ষ প্রফেসর মু.
এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী জানান, তারা কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী ২২ মে হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঢ ক কল জ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
পুশইন করা ৭৫ বাংলাদেশিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর
ভারতের গুজরাট রাজ্য থেকে তুলে এনে সীমান্ত পথে বাংলাদেশে পুশইন করা ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি তিনজন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় সংবাদ সম্মেলনে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন: ভারতের রেখে যাওয়া ৭৮ জন শ্যামনগর থানায়, আজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর
আরো পড়ুন:
ভারতের হামলায় পাকিস্তানের ১১ সেনা নিহত, আহত ৭৮: আইএসপিআর
যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, গত ৯ মে ভোরের দিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৫ জন বাংলাদেশি এবং তিনজন ভারতীয় নাগরিককে পুশইন করে। তাদের অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরে ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাস করছিলেন। তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুশইন হওয়া ব্যক্তিরা জানায়, গত ২৬ এপ্রিল গভীর রাতে ভারতীয় প্রশাসন তাদের বাসা থেকে আটক করে এবং গত ৯ মে ভোরের দিকে গোপনে সুন্দরবনের মান্দারাড়ি চরে রেখে যায়। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তিরা মান্দারবাড়িয়া চর থেকে মান্দারবাড়ি ফরেস্ট অফিসে গিয়ে আশ্রয় নেন। ফরেস্ট অফিস কোস্ট গার্ডকে অবহিত করে। গত ১০ মে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন পুশইন করা ৭৮ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করে।
আরো পড়ুন: সুন্দরবন দিয়ে ৭৮ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
পুশইন হওয়া ব্যক্তিরা জানায়, ভারতীয় পুলিশ তাদের বস্তিগুলোতে হানা দেয়। তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে নির্যাতন করে। তাদের চোখ বেঁধে একটি সামরিক বিমানে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের অপর একটি সামরিক বিমানে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় স্থানান্তর করে। এখনো তারা তাদের স্ত্রী-সন্তানদের অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পরবর্তীতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জাহাজের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশের সুন্দরবনের একটি জায়গায় রেখে যায়।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, উদ্ধারকৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ১১ মে সাতক্ষীরা শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়। তিন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে উদ্ধারকৃত বাংলাদেশি ৭৫ জনকে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার (৯ মে) ভোর ৪টার দিকে বঙ্গোপসাগরসংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকার মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৮ জনকে রেখে যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সকাল ৯টার দিকে বন বিভাগের মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্পের সদস্যরা রেখে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যান। রবিবার (১১ মে) রাত ১১টার দিকে ৭৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকসহ ৭৮ জনকে শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ