জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট ও আন্দোলন নিয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, “জবি শিক্ষার্থীদের কথা এই সরকার শুনবে। তাদের সংকট নিরসনে আমাদের বারবার বসতে হবে।”

বুধবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.

রেজাউল করিমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল উপদেষ্টা মাহফুজের সঙ্গে বৈঠক করেন।

মাহফুজ আলম বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জবির সংকট সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলোর বিষয়ে কথা বলতে প্রস্তুত। এটা একদিনে সমাধানযোগ্য বিষয় নয়, আমাদের বারবার বসতে হবে। রিলেভেন্ট মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে। বাজেটসহ অন্যান্য দিক থেকেও সমস্যাগুলোর সমাধানে আমরা কাজ করব।”

আরো পড়ুন:

তবে বক্তব্য চলাকালে শিক্ষার্থীরা তার মন্তব্যে অসন্তুষ্ট হয়ে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে উপস্থিত আন্দোলনকারীদের ভিড় থেকে কেউ মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে একটি প্লাস্টিকের বোতল নিক্ষেপ করেন। যদিও কে বা কারা বোতল ছুড়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ঘটনার পর উপদেষ্টা মাহফুজ বক্তব্য বন্ধ করে দেন এবং আর কথা না বলার ঘোষণা দেন।

এদিকে উপদেষ্টার বক্তব্যে অসন্তুষ্ট আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন এবং পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণে আলোচনায় বসেছেন।

লিমন/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অবগত: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপমুখপাত্র টমাস পিগট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি অবাধ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং সব মানুষের জন্য ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করাকে সমর্থন করে। গতকাল মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে তাঁরা অবগত আছেন।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার প্রসঙ্গটি তোলেন। আগের এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র বাংলাদেশের নির্বাচন ও গণতন্ত্রের গুরুত্ব, বিশেষ করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন ওই সাংবাদিক। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপটিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কীভাবে দেখছে, তা জানতে চান তিনি।

জবাবে পিগট বলেন, ‘আমি এতটুকু বলতে পারি, আওয়ামী লীগ এবং এর নেতাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটিকে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে নিষিদ্ধ করেছে, তা আমরা অবগত। আমরা বাংলাদেশে এককভাবে কোনো রাজনৈতিক দলকে অন্য দলের চেয়ে বেশি সমর্থন করি না। আমরা একটি অবাধ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং সব মানুষের জন্য ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করাকে সমর্থন করি। সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং সংগঠনের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে আমরা বাংলাদেশসহ সব দেশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

লস্কর-ই-তাইয়েবার একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সাক্ষাৎ হওয়ার খবর গণমাধ্যমে এসেছে বলে দাবি করেন ওই সাংবাদিক। এ প্রসঙ্গ টেনে তিনি জানতে চান, উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচার এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমে সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকাকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিনিধি হিসেবে পিগট কীভাবে দেখছেন।

জবাবে পিগট বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আবার এক ধাপ পেছনে ফিরে পোডিয়ামে বলা আগের কথাগুলোই পুনরুচ্চারিত করতে চাই। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের ৫০ বছরের বেশি পুরোনো সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে মূল্যবান বলে মনে করি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করার মধ্য দিয়ে সে সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমি আপনার অন্য প্রশ্নের জবাব ইতিমধ্যে দিয়ে দিয়েছি, এখানে আর কিছু যোগ করার নেই।’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে নিয়ে ভারতীয় অনলাইন পোর্টাল ‘নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া’য় প্রকাশিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনের বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২৪ এপ্রিল নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্পর্কে একাধিক মিথ্যা, মানহানিকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যাডভাইজার মিটস টপ লস্কর-ই-তাইয়েবার অপারেটিভ পোস্ট জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর অ্যাটাক’। প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পর লস্কর-ই-তাইয়েবার একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাক্ষাৎ করেছেন, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক।

প্রতিবেদনে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ভুল পরিচয়ে তুলে ধরা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে বৈধভাবে পরিচালিত আলেম ও ইসলামি সংগঠনগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। প্রতিবেদনে যাঁদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা হেফাজতে ইসলামের নেতা, কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তাঁরা যুক্ত নন।

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনামলে হাজার হাজার হেফাজত সদস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও সাজানো মামলার শিকার হন। অন্তর্বর্তী সরকারের বিচার ও আইনি সংস্কারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আসিফ নজরুল তাঁর দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে হেফাজতের এই ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের আবেদন শুনতে হেফাজতের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অবগত: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর