রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
Published: 15th, May 2025 GMT
রাস্তার মাঝে কেউ শুয়ে আছেন, কেউ বসে। কেউ আবার গান গাইছেন। হাতে তালি দিয়ে কেউ অন্যকে উজ্জীবিত রাখছেন। কেউ আবার মেতেছে খোশগল্পে। কেউ দিচ্ছে স্লোগান, কেউ আবৃতি করছে কবিতা- এভাবেই কাকরাইল মসজিদের সামনে ৩ দফা দাবিতে রাত কাটাচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৪টার দিকে কাকরাইল মোড়ে মসজিদের সামনে এভাবেই কর্মসূচিতে পালন করতে দেখা যায়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের অবস্থান কর্মসূচিতে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, শিবির, ছাত্রঅধিকার পরিষদ, ছাত্র ফ্রন্ট, বৈষম্যবিরোধীসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করছে।
সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে অপরকে উজ্জীবিত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘মার যখন খেয়েছি, মার আরও খাবো; অধিকার আদায় না করে ক্যাম্পাসে ফিরবো না।’
জবি শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে সব ক্রিয়াশীল সংগঠনের পাশাপাশি ছাত্রদলও আন্দোলনে আছে। কাকরাইল মসজিদের ভেতর প্রায় ৫ শতাধিক আর বাইরে রাস্তায় অসংখ্য ছেলেপিলে অবস্থান করছে। তারা বিপ্লবের গান করে সময় পার করছে। রাস্তায় যখন নেমেছি, রাস্তা থেকেই সব দাবির ফয়সালা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দাবি ন্যায্য, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের আমরা সব সময় আপোষহীন। আমরা আমাদের দাবি আদায়ে এসেছিলাম যমুনায়। কিন্তু, পুলিশ আমাদের ভাই বোনের ওপর বর্বরভাবে আঘাত করেছে। তারা হাসপাতালে ভর্তি, আমরা দাবি আদায় রাজপথে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রাকিব বলেন, ‘যেহেতু রাজপথে আমরা নেমেছি, অধিকার আদায় না করে আমরা ফিরব না। মার যখন খেয়েছিম মার আরও খাব; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার আদায়ের আমরা আছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহীন আহমেদ বলেন, যেহেতু ক্যাম্পাস ছেড়ে এসেছি, আমাদের দাবি পূরণ না করে আর ক্যাম্পাসে ফিরতে চাই না। তাতে যদি আমাদের আরও এক সপ্তাহ এখানে থাকা লাগে, আমরা তাই থাকবো, ইনশাল্লাহ।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাতে রাস্তায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরাও। রাত ৪টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে অবস্থান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও সাদা দলের সভাপতি অধ্যাপক ড.
অধ্যাপক ড. মোশাররফ সমকালকে বলেন, ‘আমার শিক্ষার্থীরা এখানে আছে, এজন্য আমিও আছি। আমার ছেলেদের রেখে আমি যেতে পারি না। আমাদের দাবি যৌক্তিক।’
শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি হলো-
আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা।
বুধবার সকাল ১১টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লংমার্চে শুরু করে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা। লংমার্চটি গুলিস্থান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসলে ১২টা ৪০ মিনিটে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।
পরবর্তীতে রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ সামনে বিফ্রিং করতে আসেন। তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের কথা সরকার শুনবে। এই সংকটের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অবগত হয়েছেন। এর সমাধানের জন্য বারবার বসতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা।
এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। এখন তারা কাকরাইল মসজিদের সামনে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে আছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম দ র দ ব উপদ ষ ট র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
৯ কোটি টাকা সরকারি অনুদান পাচ্ছে ৩২ চলচ্চিত্র
৩২টি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য ৯ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য এই অনুদান দেওয়া হবে। এর মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রয়েছে ১২টি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ২০টি।
মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান দেওয়া হবে ৭৫ লাখ টাকা। আর স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান দেওয়া হবে ২০ লাখ টাকা করে।
অনুদানের জন্য মনোনীত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো—রবিনহুডের আশ্চর্য অভিযান, মায়ের ডাক, জুলাই, রূহের কাফেলা, পরোটার স্বাদ, খোঁয়ারি, জীবন অপেরা, জলযুদ্ধ, কবির মুখ দ্য টাইম কিপার, কফিনের ডানা, নওয়াব ফুজুন্নেসা ও জুঁই।
অনুদানের জন্য মনোনীত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো—মন্দ-ভালো, ফেলানী, ঝুঁকির মাত্রা, জীবনের গান, হু হ্যাজ মেইড আস ফ্লাই, ভরা বাদর, ১২৩০, বৃন্দারাণীর আঙুল, একটি সিনেমার জন্য, দাফন, সাঁতার, মাংস কম, গগন, অতিথি, বোবা, অদ্বৈত, আশার আলো, গর্জনপুরের বাঘা, হোয়ার দ্য ওয়াটার স্লিপস এবং অপসময়।