চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বড় স্বপ্ন দেখার উপদেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শিক্ষা-গবেষণায় নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখার তাগিদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় দ্রত শেষ হয়ে যায়। আপনাদের জীবনের একটা অধ্যায় শেষ হবে। শুরু হবে নতুন জীবন। মনে রাখতে হবে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ আমাদের হাতে; আমরা কি ধরনের বিশ্ব, সমাজব্যবস্থা এবং শিক্ষাব্যবস্থা চাই সেটাই মুখ্য।’ 

বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এক সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক ছিলেন ড.

ইউনূস। এখানে থাকতেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ ব্যাংক। পরবর্তীতে পান নোবেল পুরস্কার। এ কারণেই হয়তো অনুষ্ঠানজুড়ে আবেগতাড়িত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যে ধরনের বিশ্ব গড়তে চাই, সেই বিশ্ব গড়ার ক্ষমতা আমাদের আছে, সকল মানুষেরই আছে। কিন্তু আমরা গৎবাঁধা পথে চলে যাই বলে নতুন পৃথিবীর কথা চিন্তা করি না। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যেন সবসময় এটা স্মরণ রেখেই পাঠদান কর্মসূচি ও গবেষণা শিক্ষক ও ছাত্রদের জন্য চালু রাখে। আমরা শুধু খণ্ডিত বিষয়ে গবেষণার জন্য নিয়োজিত নই। আমাদের প্রত্যেকটি বিষয়ের পেছনে একটিই উদ্দেশ্য- সমস্ত বিশ্বকে আমাদের মনের মতো করে সাজানোর জন্য, মনের মতো করে বানানোর জন্য। আমাদের যদি সেই লক্ষ্য না থাকে, তাহলে গন্তব্যবিহীন গবেষণা, গন্তব্যবিহীন শিক্ষায় পরিণত হবে।’ 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইয়াহ্ইয়া আখতারের সভাপতিত্বে এতে শিক্ষা উপদেষ্টা সি. আর আবরার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এস এম ফয়েজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামিম উদ্দীন খান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড কামাল উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।

এবারের সমাবর্তনে ২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা ২২ হাজার ৫৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। অনুষদভিত্তিক অংশগ্রহণের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ। এই অনুষদের ৪ হাজার ৯৮৭ জন, ব্যবসায় প্রশাসনে ৪ হাজার ৫৯৬ জন, সমাজবিজ্ঞানে ৪ হাজার ১৫৮ জন এবং বিজ্ঞান অনুষদে ২ হাজার ৭৬৭ জন অংশ নেন। সমাবর্তনে ৪২ জনকে পিএইচ ডি ও ৩৩ জনকে এম ফিলসহ ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, অতিথি, অভিভাবকসহ প্রায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটে বিশাল এই মিলনমেলায়। 

প্রধান উপদেষ্টাকে ‘ডি লিট’ ডিগ্রি প্রদান: ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদানের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টাকে ‘ডি লিট’ ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ পৃথিবীর ভবিষ্যত আমাদের প্রত্যেকের হাতে। আমরা যেভাবে বিশ্বকে গড়তে চাই সেভাবেই বিশ্ব গড়তে পারি। আমি যেভাবে বলেছি সেভাবে গড়তে হবে এমন কোনো কথা নেই। আমি আমার কথাটা বলে যাচ্ছি। অন্যরা তাদেরটা বলবে। কিন্তু নিজের মনের একটা স্বপ্ন থাকতে হবে এটাই আমার আবেদন। আমি কী ধরনের বিশ্ব চাই, কী ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা চাই, কী ধরনের সমাজ চাই, কী ধরনের দেশ চাই- সবকিছু নিয়ে নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে একটা স্বপ্ন থাকতে হবে। কিন্তু স্বপ্ন না দেখে গর্তের মধ্যে ঢুকে গেলাম, যা আছে মেনে নিলাম, তাহলে কিছুই পাল্টাবে না, কিছুই পরিবর্তন হবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক ড. ইউনূস বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যখন নিজের পরিচয় দেয়, হয়তো নোবেলের জন্য গৌরববোধ করে। কিন্তু চবির গৌরববোধ করার কারণ দুইটা আছে। পুরো কর্মসূচি, যার জন্য নোবেল পুরস্কার, এর গোড়াপত্তন হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। একটি তো আমি ব্যক্তিগতভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছি। তারপর যে গ্রামীণ ব্যাংক সৃষ্টি হলো, এই ব্যাংকের গোড়াতেও আছে চবি।’

‘ব্যবসাকেন্দ্রিক নয়, অর্থনীতি হতে হবে মানুষের জন্য’ এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জোবরা গ্রামের মহিলাদের কাছ থেকে নতুন অর্থনীতি শিখেছি। জোবরা গ্রাম আমার জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দাঁড়িয়ে গেল। আজ পর্যন্ত যা করে যাচ্ছি, তা জোবরা থেকে যা শিখেছি। আজ অর্থনীতি যা পড়াচ্ছি, সেটা ব্যবসার অর্থনীতি, মানুষের অর্থনীতি না। আমাদের মানুষের অর্থনীতি গড়তে হবে। আমাদের অর্থনীতি যদি শুরু করতে হয়, মানুষকে দিয়ে শুরু করতে হবে, ব্যবসাকে দিয়ে নয়। অথচ আমরা ব্যবসাকেন্দ্রিক সভ্যতা গড়ে তুললাম, এটা আত্মঘাতী সভ্যতা, এটা টিকবে না।’

চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ নিজের ভেতরে পরিবর্তন এনে দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৭৪ সালে বিরাট দুর্ভিক্ষ হলো। সবকিছু ওলট-পালট হয়ে গেল। মনের মধ্যে বহু জিজ্ঞাসার সৃষ্টি হল। মনে মনে ভাবলাম, সারা বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ ঠেকানোর ক্ষমতা আমার নাই, আমি চেষ্টা করতে পারি, এই বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্র অংশের, কয়েকটি পরিবারের যদি দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারি, তাহলে সেটা আমার জন্য তৃপ্তির বিষয় হবে যে আমি একটা কিছু করেছি। সে কারণে নজর পড়ল পাশের গ্রাম জোবরার ওপর।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার সবকিছুর বীজ বপন হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে, আর পাশের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে (জোবরা গ্রামে)। এজন্য আমি চবি ও জোবরার কাছে কৃতজ্ঞ। এটা করে যে কোনোদিন একটা নোবেল পুরস্কার পাওয়া যাবে, কখনও মনে আসেনি। তবে লোকজন বলাবলি করেছিল মাঝে মাঝে।’

পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর। দেশের তৃতীয় সরকারি এবং আয়তনের দিক থেকে এটি দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। এ পর্যন্ত এখানে মাত্র চারটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৪ সালে। এরপর ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়, ২০০৮ সালে তৃতীয় এবং ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবর্তনে অংশ নেন ৭ হাজার ১৯৪ জন গ্র্যাজুয়েট। নয়জন শিক্ষার্থী পান চ্যান্সেলর পদক, আর ২৫ জন পিএইচডি ও ১৩ জন এমফিল ডিগ্রি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ব ল প রস ক র আম দ র র জন য মন র ম ইউন স ধরন র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির সার্চ কমিটিতে আ.লীগের সুবিধাভোগী

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সদস্য নবায়ন কার্যক্রমের শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সম্প্রতি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গঠিত সার্চ কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের জায়গা করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের নেতারা। তাদের অভিযোগ, এসব কমিটিতে সদস্য নবায়নের দায়িত্ব পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে গণঅভ্যুত্থানবিরোধী লোকও রয়েছেন। রয়েছেন আওয়ামী লীগের সময়ে নানাভাবে সুবিধা পাওয়া নেতারা। এমনকি অনেকের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের পর সম্পত্তি দখল বিষয়েও তথ্য রয়েছে। 

বিএনপির কয়েক নেতাকর্মীর ভাষ্য, বিতর্কিত নেতাদের কারণে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মী নিয়ে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বাধার মুখে পড়েছে। দ্রুতই এ বিষয়ে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। 

বিএনপি সূত্র জানায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি শ্যামনগর উপজেলা বিএনপি ও শ্যামনগর পৌর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। তখন উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ছিলেন যথাক্রমে সোলাইমান কবির ও গোলাম আলম আলমগীর। পৌর কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ছিলেন যথাক্রমে শেখ লিয়াকত আলী বাবু ও শামসুদ্দোহা টুটুল।

নতুন করে কমিটি গঠনের জন্য তাসকিন আহমেদ চিশতীকে প্রধান করে ২৩ এপ্রিল সংসদীয় আসনের সাংগঠনিক (উপজেলা) কমিটি গঠিত হয়। তাঁর নেতৃত্বে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের জন্য ৪ মে সার্চ কমিটি গঠিত হয়।

উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন সার্চ কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন আবুল কাশেম। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সংসদ সদস্যের পক্ষে লাঠি হাতে ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিয়ারাজ হোসেন বলেন, আবুল কাশেম সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা রিপনের এজেন্ট ছিলেন। 

এ বিষয়ে আবুল কাশেমের দাবি, ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাবের মোড়লের নির্দেশে কিছু সময়ের জন্য কেন্দ্র পাহারায় বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এমন বক্তব্য বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, সপ্তাহ দুয়েক আগে জাবের মোড়ল মারা গেছেন। 

একই ইউনিয়নের সার্চ কমিটির সদস্য নুর ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলীয় সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর তিনি কৃষ্ণা রানী মণ্ডল নামে এক নারীর ওপর নানাভাবে অত্যাচার চালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া প্রদীপ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির জমি দখল করে তিনি পাকা ভবন তৈরি করেছেন। এমন বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে নুর ইসলামের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে বুধবার তিনি সমকালের কাছে দাবি করেন, ইতোমধ্যে অনেক বিষয় মীমাংসা হয়ে গেছে। প্রদীপ মণ্ডলের জমির বিষয়ও কিছুদিনের মধ্যে মীমাংসা করে নেবেন। 

শ্যামনগর পৌরসভার বাদঘাটা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনেছেন একই ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুর ইসলাম। তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের পর ১৭ আগস্ট আওয়ামী লীগের উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ-উজ জামানকে পাহারা দিয়ে উপজেলা পরিষদে নিয়ে যান আমিনুর রহমান। এমনকি চেয়ারম্যানকে নির্দিষ্ট চেয়ারে বসিয়ে ছবি উঠিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন। একই সঙ্গে তিনি (আমিনুর) আস্থা না হারাতে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকের প্রতিও আহ্বান জানান। 

বিএনপির বর্ষীয়ান নেতা নুর ইসলামের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের শাসনামলে আমিনুরের বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়নি। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের এমপি জগলুল হায়দার ও তাঁর ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জহুরুল হায়দারের ছায়াসঙ্গী। তাঁকেও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সার্চ কমিটিতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় দুঃসময়ে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ।

এ বিষয়ে কাউন্সিলর আমিনুর রহমানের দাবি, ‘আমি চেয়ারম্যানকে নিয়ে যাইনি। সেখানে একটা সালিশ চলছিল বলে সাবেক সেনাসদস্য রেজাউল ভাইয়ের সঙ্গে গিয়েছিলাম।’ তিনি ফেসবুকে নিজে থেকে কোনো ছবি দেননি উল্লেখ করে বলেন, অন্য কেউ সেই ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছিল। 

সবচেয়ে বড় অভিযোগটি শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে সদস্য নবায়ন কার্যক্রমের প্রথম ফরমটিই পূরণ করেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের বিরোধিতার অভিযোগ করেছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়মান কবির। তিনি বলেন, সরকার পতনের প্রাক্কালে ৩১ জুলাই উপজেলা পরিষদের হলরুমে ‘সন্ত্রাসবাদ ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি’র সভা হয়। এতে উপস্থিত হয়ে আব্দুল ওয়াহেদ ঘোষণা দেন, শ্যামনগরে আন্দোলনের প্রভাব পড়তে দেওয়া হবে না। সদস্য নবায়ন ও সার্চ কমিটিতে তাঁকে (ওয়াহেদ) জায়গা দেওয়ায় নেতাকর্মী হতাশ। এমন ধারা চলতে থাকলে বিএনপির রাজনীতির প্রতি সাধারণ মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

আব্দুল ওয়াহেদ অবশ্য সমকালের কাছে দাবি করেন, ৩১ জুলাইয়ের সন্ত্রাসবাদ ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন না। বরং অনেক আগে একটি সভায় উপস্থিত হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অত্যাচার-নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ওই সভায় অংশগ্রহণের ছবি ও রেজুলেশনে থাকা সইয়ের উল্লেখ করলে আব্দুল ওয়াহেদ বিষয়টি এড়িয়ে যান। 

এসব অভিযোগ বিষয়ে বক্তব্য জানতে দলের শ্যামনগর উপজেলার সাংগঠনিক টিমের প্রধান তাসকিন আহমেদ চিশতীর মোবাইল ফোনে দফায় দফায় কল দিলেও ধরেননি। সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু বলেন, যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর ও বেশি অভিযোগ ছিল, ইতোমধ্যে তাদের অনেককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ