আজিজুল ফকিরের পূর্বপুরুষরা কৃষক। ছোটবেলা থেকেই তাই কৃষির সঙ্গে নিবিড় যোগ তাঁর। পারিবারিকভাবেই নানা ধরনের শাকসবজি চাষ করেন। বছর তিনেক আগে আজিজুলের জীবনের মোড় বদলে দেয় ইউটিউব। সেখানে ভিডিও কনটেন্টে কচুর লতি চাষের পদ্ধতি দেখে তিনি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। দুই বছরের মধ্যে নিজেকে সফল চাষি হিসেবে গড়ে তুলেছেন। 

আজিজুলের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চৌরাপাড়ায়। তাঁর বাবা আব্দুল করিম ফকির। আজিজুল (৩৫) বলেন, অন্যান্য কৃষিপণ্য চাষাবাদ করে তেমন লাভ হচ্ছে না। কিন্তু দুই বছর ধরে কচুর লতি চাষ করে বেশি লাভ পেয়েছেন। যদিও গত বছরের তুলনায় এবার তাঁর জমির পরিমাণ কম। 

এই চাষি জানান, কচুর লতির মৌসুম চলে বছরের ছয়-সাত মাসজুড়ে। জানুয়ারিতে জমিতে বীজ ফেলা হলে জুন-জুলাইয়ের মধ্যে লতি তুলে বাজারে বিক্রি করা যায়। 

আজিজুল ফকির চলতি মৌসুমে ৪০ শতাংশ জমিতে লতি চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকার লতি বিক্রি করেছেন। আরও যে পরিমাণ আছে, তা বিক্রি করে ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। 

গত মৌসুমে বসতবাড়ির পাশের জমি বর্গা নিয়ে কচুর লতি চাষ শুরু করেন। বীজ বোনা থেকে পরিচর্যার সব কৌশল শিখেছেন ইউটিউব থেকে। একাই জমির দেখভাল করেন। ভালো ফলনের জন্য রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সারও ব্যবহার করেন। 

আজিজুল ফকিরের অভিযোগ, এই ফসল উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে কোনো পরামর্শ কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাননি। তারা সহায়তা করলে আরও বেশি জমিতে চাষ করতে চান। 

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেকের ভাষ্য, অনেক সময়ই কৃষকরা বিচ্ছিন্নভাবে চাষাবাদ করে থাকেন। যে কারণে হয়তো দুয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ হয় না। ওই কৃষক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আজ জ ল চ ষ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামের ফিশারি ঘাটে ক্রেতা বেশি, মাছ কম

সামনে মাছের স্তূপ। চারপাশ ঘিরে আছেন ক্রেতারা। মাঝখানে দাঁড়িয়ে নিলামে দাম হাঁকছেন বিক্রেতা। ক্রেতারা চুপ হয়ে গেলে সর্বোচ্চ দাম আবার বলছেন বিক্রেতা। ক্রেতারাও একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ধাপে ধাপে বাড়াচ্ছেন দাম। এই চিত্র চট্টগ্রামের মাছের বৃহত্তম আড়ত নগরের ফিশারি ঘাটের।

প্রতিদিন ভোররাত থেকে এখানে বিক্রির উদ্দেশ্যে মাছ নিয়ে আসেন জেলেরা। কর্ণফুলীর তীরঘেঁষা এ বাজারে নদীর পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছও ওঠে। তবে গত কয়েক দিন সাগর উত্তাল থাকায় আজ বুধবার সকালে মাছের সরবরাহ কম দেখা গেছে এ বাজারে। আড়তদার ও জেলেরা জানান, আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় মাছ তেমন নেই। বিশেষ করে ইলিশের দেখা মিলছে হাতেগোনা।  

আড়তদারেরা বলছেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী এখনো মাছ আসছে না ঘাটে। ছোট আকারের মাছ পাওয়া গেলেও বড় মাছ হাতেগোনা। বাজারে লইট্টা, বোয়াল, কোরাল, রুপচাঁদা, কই, কাতলা, পোয়া—এসব মাছ আসছে। তবে সংখ্যা কম। অধিকাংশ মাছ আকারে ছোট। ক্রেতাদের চাহিদা থাকলেও ইলিশের সরবরাহ খুবই কম।

ফিশারি ঘাটের মূল বেচাকেনা হয় ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টার মধ্যে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টায় ফিশারি ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতার উপচে পড়া ভিড়। তবে ক্রেতা অনুপাতে মাছ তেমন নেই। ঘাটের একটি স্থানে ক্রেতাদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে দাম হাঁকছেন মোহাম্মদ সেলিম। তাঁর সামনে লইট্টা মাছের স্তূপ। ক্রেতাদের তর্ক চলছে দাম নিয়ে। একজনের চেয়ে অন্যজন কিছুটা বাড়িয়ে দাম হাঁকছেন। ৫ হাজার ৮০০ টাকা তিনবার হাঁক দিয়ে ক্রেতার কাছে মাছ বুঝিয়ে দিলেন সেলিম।  

চট্টগ্রামের ফিশারি ঘাটে মাছ কিনতে ক্রেতাদের ভিড়। আজ সকালে তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ