একটি রিট মামলায় দেওয়া রায় বাতিলের দাবিতে আগামীকাল রোববার হাইকোর্টের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন ঢাকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীরা। এদিন সারাদেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করার ঘোষণাও দিয়েছে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ’।

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি দিয়েছে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন। সেখানে আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জোবায়ের পাটোয়ারী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন এখনও শেষ হয়নি। আমাদের প্রথম দাবি ছিল ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়ে। ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের সমস্যার যে সমাধান; সেটি আমরা এখনও দেখতে পাইনি।’

মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিলেও হাইকোর্টের যে রায় আছে, সেটি নিয়ে কোনো ফলাফল তারা পাননি বলে তুলে ধরেন জোবায়ের। তিনি বলেন, ‘এ রায়টি নিয়ে শুনানি করা হয়েছিল, সেদিন রায়টি স্থগিত করা হয়।’

আগামীকাল রোববার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, এই রায়টি সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি করা হোক। এদিন প্রত্যেকটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হবে এবং ঢাকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, আমাদের এই দাবিগুলো দ্রুততম সময় মেনে নিন।’

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো.

মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, ‘ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের রূপরেখার খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। সরকার কারিগরি শিক্ষক তথা ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর ও জুনিয়র ইন্সট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা আশাবাদী, আমাদের এ রূপরেখা সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত হবে।’

ছয় দফা পূরণে দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা গত ১৬ এপ্রিল থেকে রাস্তায় নামেন। সপ্তাহখানেক ধরে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের দাবি বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি গঠন করে। এরপর তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।

তবে পরদিনই সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা আসে তাদের তরফ থেকে।

৭ মে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শাটডাউন কর্মসূচি শিথিল করে ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেও শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণ ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-

১. জুনিয়র ইন্সট্রাকটর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের পদোন্নতি বিষয়ে হাই কোর্টের রায় বাতিলসহ ক্রাফট ইন্সট্রাকটর পদবি পরিবর্তন এবং ওই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করা।

২. ২০২১ সালের বিতর্কিত ক্রাফট ইন্সট্রাকটর নিয়োগের জন্য নিয়োগবিধি অনতিবিলম্বে বাতিল করা, সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে নিয়োগ বাতিল করা ও মামলা করার সঙ্গে জড়িত ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

৩. ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদী অব্যাহত রাখা এবং মানসম্মত পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যক্রম আধুনিক বিশ্বের আদলে প্রণয়ন করা।

৪. উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) পদে চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাস করা শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ আবেদন করতে পারবে না এবং এই পদ সংরক্ষিত করতে হবে।

৫. বেসরকারি খাতে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীদের ন্যূনতম ১০ম গ্রেডের মূল বেতনের সমান অর্থাৎ ১৬০০০ টাকা দেওয়া।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ সম ব শ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তের দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন

১৫ বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান করছেন নিখিল চক্রবর্তী। তবে সরকারিভাবে তিনি কোনো বেতন–ভাতা পান না। এর ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন কাটছে তাঁর। যশোর, মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদেরও একই অবস্থা। প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির দাবিতে আজ বুধবার তাঁরা মানববন্ধন করেছেন। এ ছাড়া একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

আজ সকাল সাড়ে ১০টায় প্রেসক্লাব যশোরের সামনে যশোর, মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে অন্তত ৬০০ শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকেরা মানববন্ধন করেন। পরে তাঁরা জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক তাঁদের আশ্বাস দেন, এটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন।

নিখিল চক্রবর্তী মনিরামপুর অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্মারকলিপি দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে বিনা বেতনে প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান করে যাচ্ছি। কোনো বেতন–ভাতা সরকার থেকে পাই না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন কাটছে। অন্য চাকরিতে যাওয়ার মতো বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নেই। প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্যে শিক্ষকতা শুরু করেছিলাম। সরকার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও দিচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের।’

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ যশোর কমিটির উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ সময় শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকেরা বিভিন্ন দাবি–সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দেন। তাঁরা বলেন, ‘দাবি মোদের একটাই, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিও চাই’, ‘প্রতিবন্ধী অবহেলা নয়’, ‘ন্যায্য অধিকার চাই, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অধিকার চাই’।

মানববন্ধনে সংগঠনটির যশোর শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা সারা দেশে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে অন্তত ১০ বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিক্ষা, থেরাপি ও জীবন দক্ষতা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলো স্বীকৃতি ও অনুমোদনে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে না।’ শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

মানববন্ধনে জানানো হয়, যশোরে প্রায় ১২ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জীবনমান পরিবর্তন ও শিক্ষাদানে ১ হাজার ২০০ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। আর সারা দেশে প্রতিবন্ধীদের ১ হাজার ৭৭২টি অস্বীকৃত বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে প্রায় দুই লাখ নানা ধরনের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এখানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় এসব শিক্ষক–কর্মচারী আর্থিকভাবে দুরবস্থার মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছেন। অনেকে দীর্ঘদিন বিনা বেতনে কাজ করছেন। তাঁরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনের যশোর জেলা শাখার সভাপতি রাজু আহমেদ, সহসভাপতি আবদুল সালাম, সহসম্পাদক মুক্তারুজ্জামান, প্রচার সম্পাদক মমতাজ খাতুন প্রমুখ। পরে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় চত্বরে যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেমিকন্ডাক্টর খাতে ১০ বছরের কর অব্যাহতি ও শুল্কছাড়ের সুপারিশ
  • টেলিকম নীতিমালা একতরফা প্রণয়ন সমীচীন হবে না: মির্জা ফখরুল
  • রাজশাহীতে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবি
  • অন্ধকারের হয়নি অবসান
  • বুলেটের আঘাত ছাপিয়ে যায় সহোদর হারানোর ব্যথায়
  • সাগর-রুনিকে ঘিরে নির্মিত ‘অমীমাংসিত’ পেল ছাড়পত্র
  • সংস্কারের আলোচনা থাকলেও বাস্তব প্রতিফলন নেই: জোনায়েদ সাকি
  • বাকৃবিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ৭.৭১ শতাংশ বাজেট বৃদ্ধি
  • প্রবাসফেরত স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় স্ত্রীর বিচার দাবি
  • যশোরে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তের দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন