জব্বারের বলী খেলায় পৃষ্ঠপোষকতা করবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়: ফারুকী
Published: 19th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলা ও কর্ণফুলী নদীর সাম্পান বাইচ আগামী বছর থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজন করা হবে।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী।
আরো পড়ুন: নুসরাত ফারিয়ার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন ফারুকী
আরো পড়ুন:
নুসরাত ফারিয়ার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন ফারুকী
নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করা আমার দায়িত্ব নয়: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
তিনি বলেন, “চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলা একটি শতবর্ষী আয়োজন। এটি চট্টগ্রামের ঐতিহ্য বহন করে। আমরা বলীখেলা উদযাপন কমিটির সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী বছর থেকে জব্বারের বলী খেলা আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ক্যালেন্ডারের সঙ্গে যুক্ত হবে। সেই সঙ্গে সাম্পান বাইচও যুক্ত হবে ক্যালেন্ডারে।”
এসময় উপদেষ্টা পহেলা বৈশাখে সাম্পান বাইচ আয়োজন করতে কমিটিকে অনুরোধ করেন।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে দেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সাংস্কৃতিক ক্যালেন্ডার। যার মাধ্যমে সারা বছর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকা যাবে।
জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে পূর্ণাঙ্গ জাদুঘর হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়ে ফারুকী বলেন, “জিয়া স্মৃতি জাদুঘর ১৬ বছর বন্ধ ছিল। দায়িত্ব নেওয়ার পর জাদুঘরের যে বাজেট ছিল তা দ্বিগুণ করা হয়েছে। যেহেতু জিয়া জাদুঘর, তাই এ জাদুঘরে জিয়াউর রহমানের পুরো জীবনের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হবে। এটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। এর জন্য জিয়াউর রহমানের জীবনী নিয়ে গবেষণা করা দরকার। জাদুঘর সুন্দরভাবে জানানোর জন্য কিউরেটর নিয়োগ করা দরকার।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম এবং জব্বরের বলি খেলা ও সাম্পান বাইচ আয়োজক কমিটির কর্মকর্তারা।
এর আগে, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী জিয়া স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট উপদ ষ ট জ দ ঘর
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগের তদন্ত হোক
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদের জঙ্গিবাদী তৎপরতায় যুক্ত হওয়ার অভিযোগটি গুরুতর বলেই অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন মালয়েশিয়ায় উগ্রবাদী মতাদর্শ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। এরপর আইন ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল শুক্রবার রাতে জানিয়েছেন, তিনজন ইতিমধ্যে দেশে ফিরেছেন এবং তঁাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের জঙ্গিবাদে জড়ানোর ঘটনাকে বিব্রতকর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শুক্রবার কুয়ালালামপুরে সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার পুলিশপ্রধান খালিদ ইসমাইল জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৩৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করার কথা জানান। তাঁর বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে শ্রমিকদের মধ্যে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর মতাদর্শ প্রচার এবং তহবিল সংগ্রহ করে, বাংলাদেশি শ্রমিকদের এমন একটি চক্র ভেঙে দিয়েছে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ। চক্রটি অন্যান্য বাংলাদেশি শ্রমিককে নিশানা করে সদস্য সংগ্রহ করত এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে উগ্র ও চরমপন্থী মতাদর্শ ছড়িয়ে দিত বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।
মালয়েশীয় পুলিশপ্রধানের বক্তব্য সন্দেহমুক্ত নয়। সেখানে অবস্থিত বাংলাদেশি শ্রমিকদের কেউ কেউ তাঁদের ভাষ্য অনুযায়ী জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশে আইএসের সাংগঠনিক ভিত্তি থাকার দাবি সঠিক নয়। তারপরও বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার অভিযোগকে উড়িয়ে না দিয়ে দেশে ফেরত আসা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নিয়েছে। এর সঙ্গে দেশের ভেতরে কেউ থাকলে সেটাও বেরিয়ে আসবে। এর সঙ্গে কেবল বাংলাদেশের ভাবমূর্তির বিষয় জড়িত নয়, লাখ লাখ শ্রমিকের জীবিকার প্রশ্নও আছে। গেল শতকের শেষ দশক ও চলতি শতকের প্রথম দশকে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে জঙ্গিবাদী তৎপরতা বেড়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশেও।
জঙ্গিবাদ বিশ্বব্যাপী প্রবণতা। এ থেকে খুব কম দেশই মুক্ত থাকতে পেরেছে। এখানে দুই ধরনের অতিশয়োক্তি আছে। এক পক্ষ মনে করে বাংলাদেশে ব্যাপক মাত্রায় জঙ্গিবাদী তৎপরতা ছিল। আরেক পক্ষের দাবি, জঙ্গিবাদ বলে বাংলাদেশে কিছু নেই। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার সহজ পথ ছিল যেকোনো তৎপরতা ও ব্যক্তিকে ‘জঙ্গি’ তকমা লাগিয়ে দেওয়া। জঙ্গি ইস্যু কাজে লাগিয়ে তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর দমন–পীড়ন চালিয়েছে। আবার অন্যদিকে ঢাকার পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশে জঙ্গি বলে কিছু নেই, ছিনতাইকারী আছে। ২০১৬ সালের ১ জুলাইয়ে সংঘটিত হোলি আর্টিজানে হামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে তিনি এই উত্তর দেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সেদিন সেই রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে হত্যার যে ঘটনা ঘটেছে, তা কি ছিনতাইকারীরা ঘটিয়েছিল?
মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতার যে অভিযোগ উঠেছে, তাকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। মালয়েশিয়ার অভিযোগ কতটা সত্য, তা যথাযথ তদন্ত করে বের করতে হবে। দেশের কোনো পক্ষ এর সঙ্গে যুক্ত আছে কি না, তা খুঁজে বের করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার। সেখানে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে এই ঘটনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে বাংলাদেশকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও উদ্যোগ নিতে হবে। আবার নিরীহ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়েও সরকারকে সর্বোচ্চ সজাগ থাকতে হবে।
দুই উপদেষ্টার সঙ্গে আমরাও আশাবাদী হতে চাই যে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগ নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, দেশটির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তার নিরসন হবে।