নগর ভবনের সামনে ইশরাক সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচি
Published: 20th, May 2025 GMT
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব হস্তান্তরের দাবিতে নগর ভবনের সামনে হাজারো নেতাকর্মী ৭ম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ১০টার আগে থেকেই নেতাকর্মীরা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিতে যোগ দেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে রাজপথে অবস্থান নেন। আজকে অবস্থান কর্মসূচি চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল, শ্রমিক দলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলররাও এতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছেন।
বিক্ষোভকারীরা নগর ভবনের সামনের মূল সড়কে বসে ‘ইশরাককে মেয়র করো’, ‘ইশরাক তোমার ভয় নাই, নগরবাসী তোমার সাথে’, ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা চলবে না’, ‘ঢাকাবাসীর অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন। তারা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগও দাবি করছেন।
২০২০ সালের ডিএসসিসি নির্বাচনে পরাজিত বিএনপিপ্রার্থী ইশরাক হোসেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে চলতি বছরের ২৭ মার্চ আদালত তাকে বৈধ মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তাকে আনুষ্ঠানিক মেয়র ঘোষণা করে। কিন্তু দীর্ঘ এক মাস পেরিয়ে গেলেও তার শপথ গ্রহণ ও দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। আন্দোলনকারীদের দাবি, আদালতের নির্দেশনা অনুসারে অবিলম্বে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।
রাজধানীর ৫২ নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বলেন, ‘‘ইশরাক ভাই হলো আমাদের জনতার মেয়র। তাকে মেয়র ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। শুরুর দিন থেকেই আমাদের ওয়ার্ডের সভাপতি রবিউল ইসলাম দিপু ভাইয়ের নেতৃত্বে প্রায় শখানেক নেতাকর্মী নিয়ে আন্দোলনে আছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা প্রতিদিনের মতো মাঠে থাকবেন এবং প্রয়োজনে আন্দোলন আরও কঠোর রূপ নেবে।’’
করিম হোসেন নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘ইশরাক হোসেনকে ঘিরে তৈরি হওয়া এই অচলাবস্থা শুধু একটি দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয় নয়, এটি এখন বৃহত্তর রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক প্রশ্নে রূপ নিচ্ছে।’’
‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারের প্রধান মুখপাত্র মশিউর রহমান বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি, তবে সরকার যদি আজকের মধ্যে কোনো উদ্যোগ না নেয়, তাহলে পরিণতির জন্য তারাই দায়ী থাকবে। আদালতের রায়, নির্বাচন কমিশনের গেজেট সব কিছুর পরও দায়িত্ব হস্তান্তর না হওয়া রাষ্ট্রীয় অবহেলার প্রমাণ।”
এদিকে আন্দোলন শুরুর দিন থেকেই নগর ভবনের মূল ফটকে আন্দোলনকারীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। বন্ধ রাখা হয়েছে ডিএসসিসির প্রতিটি রুম, লিফট এবং জনসেবামূলক সকল কার্যক্রম। ফলে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সেবাপ্রত্যাশীরা ফিরে যাচ্ছেন।
আন্দোলনের কারণে গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া ও বঙ্গবাজার এলাকার সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। অফিসগামী মানুষ, সিএনজি ও রিকশাচালক এবং পথচারীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। নগর ভবনের সামনের রাজপথ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
নগর ভবনের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না ঘটে। তবে এখনো আন্দোলন প্রসঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/এএএম//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইশর ক হ স ন অবস থ ন ত কর ম ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী