ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর জন্য বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এ সময়ের মধ্যে তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া না হলে ঢাকা অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।  

মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে ডিএসসিসি’র নগর ভবনের সামনে চলমান ষষ্ঠ দিনের অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন ঢাকাবাসীর পক্ষে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক সচিব মশিউর রহমান। 

মশিউর রহমান বলেন, “বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার ঘোষণা না এলে আমরা ঢাকাকে অচল করে দেব। নগরবাসীর অধিকার প্রতিষ্ঠার এই লড়াই আমরা থামাব না।”

আরো পড়ুন:

বৃষ্টি মাথায় কাকরাইলে তিন কারাখানার শ্রমিকদের অবস্থান

নগর ভবনের সামনে ইশরাক সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচি

এর আগে, আজ সকাল ১০টা থেকেই নগর ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তারা নগর ভবনের প্রধান ফটকের সামনে একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান বাজিয়ে কর্মসূচি আন্দোলন করেন। এসময় ইশরাক সমর্থকদের অনেকেই মঞ্চে বক্তব্যে দেন। 

বক্তারা বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিকে দায়িত্ব না দেওয়া গণতন্ত্রের প্রতি চরম অবজ্ঞা। আমরা তা মেনে নেব না।

গত বুধবার থেকে চলা এই অবস্থান কর্মসূচির ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে নগর ভবন। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের দাপ্তরিক কার্যক্রম। এতে বিপাকে পড়েছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। ঢাকার নাগরিকদের জন্য ২৮টি গুরুত্বপূর্ণ সেবা দিয়ে থাকে ডিএসসিসি, যার মধ্যে পরিচ্ছন্নতা, জন্মনিবন্ধন, কর আদায়, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, মশক নিধনসহ বিভিন্ন জরুরি সেবা রয়েছে।

সেবা নিতে এসে দুর্ভোগে পড়া একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা সানাউল জক বলেন, “জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য এসেছিলাম। এসে দেখি, অফিস পুরো বন্ধ। কেউ কোনো তথ্যও দিচ্ছে না।”

আন্দোলনকারীরা জানান, বুধবার সকাল ১০টা থেকে একই স্থানে আরো বৃহৎ পরিসরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। 

ডিএসসিসির পাঁচটি কর্মচারী ইউনিয়ন এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নগর সেবায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, “যখন জনগণের ভোটে নির্বাচিত মেয়রকে দায়িত্ব না দিয়ে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত আসে, তখন আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমরা নগর সেবা বন্ধ রেখে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাব।”

জানা গেছে, ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মালি, জল সরবরাহ এবং নির্মাণ বিভাগের কর্মচারীরাও কর্মবিরতিতে অংশ নেবেন। এতে নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ঢাকা/এএএম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এসস স নগর ভবন র ড এসস স র জন য র স মন ইশর ক

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় হামলা, ৭৫ শতাংশ ত্রাণ প্রবেশে বাধা

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সর্বশেষ হামলায় অন্তত ৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া প্রতিশ্রুত ত্রাণের মাত্র এক-চতুর্থাংশ গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। অর্থাৎ মোট ত্রাণসামগ্রীর প্রায় ৭৫ শতাংশই এখনো আটকে রেখেছে দেশটি। 

গাজা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা। 

আরো পড়ুন:

পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের

ইসরায়েলের পার্লামেন্টে পশ্চিম তীর দখলের বিল পাস

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (১ নভেম্বর) টানা পঞ্চমদিনের মতো গাজায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও খান ইউনিসের আশপাশের এলাকায় হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।

এদিকে ত্রাণ প্রবেশেও বাধা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গাজা সরকার জানিয়েছে, ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৩ হাজার ২০৩টি বাণিজ্যিক ও ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে মাত্র ১৪৫টি ট্রাক প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে, যা যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে নির্ধারিত দৈনিক ৬০০ ট্রাকের মাত্র ২৪ শতাংশ।

শনিবার এক বিবৃতিতে গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর জানায়, ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ ও বাণিজ্যিক পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে বাধা দিচ্ছে। এর ফলে ২৪ লাখেরও বেশি মানুষের মানবিক সংকট ভয়াবহভাবে বেড়েছে। আর এর দায় সম্পূর্ণ ইসরায়েলের।’

এই অবস্থায় গাজার পক্ষ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে- যাতে তারা ‘কোনও শর্ত বা বিধিনিষেধ ছাড়াই’ ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ত্রাণ রুট পরিবর্তনের কারণে কার্যক্রম মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, “এখন কনভয়গুলোকে মিসরের সীমান্তঘেঁষা ফিলাডেলফি করিডর হয়ে উপকূলীয় সংকীর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা দিয়ে যেতে হচ্ছে, যা যানজট ও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে ত্রাণ কার্যক্রমকে অত্যন্ত ধীর করে দিয়েছে।” তিনি আরও জানান, ত্রাণ কার্যক্রম কার্যকরভাবে চালু রাখতে অতিরিক্ত সীমান্তপথ ও অভ্যন্তরীণ রুট খোলা অত্যন্ত জরুরি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২২২ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫৯৪ জন আহত হয়েছেন। অনেক আহত ব্যক্তি পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসা না পাওয়ায় পরিস্থিতি আরো অবনতি হচ্ছে। হাসপাতালগুলো বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সার্জিক্যাল সরঞ্জামের ঘাটতিতে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

গাজা কর্তৃপক্ষ বলছে, যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় হতাহতের সংখ্যা ও ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ায় মানবিক সংকট ভয়াবহভাবে বাড়ছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ