ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে কৃষক সোহরাব হোসেন (৩৫) ধান চাষ থেকে সরে আসেন। এই ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন তিনি। তার নিজের কোনো জমি না থাকলেও জমি লিজ নিয়ে ধান চাষবাদ করতেন। ঘূর্ণিঝড়ের ধকল কাটিয়ে উঠে আবারো ধান আবাদের চেষ্টা করেন তিনি। লবণাক্ততার কারণে পুরো ক্ষেত পুড়ে গেছে। বারবার লোকসান গুনে অবশেষে সোহরাব রিকশা-ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করছেন।
সোহরাব হোসেনের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামে। এই গ্রামটির মত আরো অনেক গ্রাম আম্ফানে ক্ষতির মুখে পড়েছিল। সোহরাবের মত বহু কৃষক তাদের পেশা হারিয়েছেন। বহু ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়েছেন। জীবন-জীবিকার ধারাবাহিকতা ওলটপালট হয়ে গেছে অনেক পরিবারের। বহু পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে এলাকা ছেড়ে শহরে চলে গেছেন। তাদেরই একজন আশাশুনির চাকলা গ্রামের ফারুক হোসেন। একই উপজেলার কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার জমি বিক্রি করে খুলনা শহরে চলে এসেছেন। একই গ্রামের মাহবুব হোসেন এলাকা ছেড়ে নড়াইল জেলায় চলে যান। যশোরের কেশবপুরে গেছেন আইয়ুব আলী গাজী।
ভয়াল সেই দিনটি ছিল ২০২০ সালের ২০ মে। আম্ফান বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানে। প্রায় দুই বছর ধরে ঘরবাড়ি, কৃষি জমি পানির নিচে ছিল। বহু মানুষ কয়েক মাস ধরে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করেছিলেন। সেই দিনগুলোর কথা মনে করে আজও শিউরে ওঠেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মানুষেরা।
আরো পড়ুন:
মে মাসে এক থেকে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস
নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজালে’ পরিণত, বন্দরে ২ নম্বর সংকেত
শুধু সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলায় নয়, জেলার শ্যামনগর উপজেলায়ও একই গল্প পাওয়া যায়। খুলনা জেলার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলায়ও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দেখা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা দীর্ঘ। শুধু ঘূর্ণিঝড় আম্ফান নয়, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। ফলে এ অঞ্চলের ধনী কৃষকরা দিনমজুর হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছে। একসময় নিজ জমির ধানে সংসার চললেও এখন তাদের পরিবার চরম সংকটে রয়েছে। তিনবেলা খাবার পাওয়া তাদের জন্য খুবই কঠিন।
আবদুস সাত্তার (৭২) প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। তার বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার কুড়িকাহুনিয়া গ্রামে। এক সময় জমির ফসল তার ঘরে খাবার নিয়ে আসত। আম্ফানের পর আবদুস সাত্তার জমি থেকে উপার্জনের চিন্তা বাদ দেন। তার জমিতে বালির স্তর জমেছে। তার জন্য এখন সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। আবদুস সাত্তার ও তার ছেলেরা একসময় তাদের জমি চাষ করতেন। কিন্তু এখন সবাই দিনমজুর। এক সময় নিজের জমিতে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেছিলেন আবদুস সালাম (৬২)। জমি থেকে উৎপাদিত ধান দিয়ে তার সংসার চলত। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপদগুলো তার সেই সুযোগগুলো কেড়ে নিয়েছে। এখন তার জীবন জীবিকা দিন মজুরি পেশায়। তিনি বলেন, ‘ভূমির উপর নির্ভরতা হারিয়ে আমরা এখন নদীর উপর নির্ভরশীল।’ এর অর্থ, এক সময়ের কৃষি পরিবারগুলো এখন মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বন্যতলা গ্রামে কৃষক আবদুস সালামের বাড়ি। ২০২০ সালের আম্ফানের পর প্রায় এক বছর তার বাড়ি এবং জমি লবণ পানির তলায় ছিল। খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারে বাড়ি ডুবত। তার বাড়িতে এখনো সেই ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন স্পষ্ট। সাইক্লোনে বিপর্যস্ত বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আবদুস সালাম তর্জনী তুলে দেখাচ্ছিলেন তার জমি। তার জমির কোথাও বালুর স্তর জমেছে, জমির ভেতর দিয়ে কোথাও তৈরি হয়েছে নতুন খাল। তার জমির বড় অংশে তৈরি হয়েছে নতুন বেড়িবাঁধ। অনেক জমি নদীর ভাঙনে হারিয়ে গেছে। এক সময় আবদুস সালামের জমি ছিল ১৫০ শতাংশ। এখন অবশিষ্ট আছে মাত্র ২২ শতাংশ। কিন্তু অবশিষ্ট জমিটুকুও অনুৎপাদনশীল হয়ে পড়েছে।
আরেকজন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আমজাদ হোসেন (৬৫)। সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের এই কৃষকের আছে অনেক কৃষি জমি। কিন্তু ঘন ঘন সাইক্লোন এবং উচ্চ জোয়ারের প্রভাবে তার অনেক জমি অনুৎপাদনশীল হয়ে পড়েছে। ২০০৯ সালে সাইক্লোন আইলা এবং ২০২০ সালে আম্ফানের প্রভাবে আমজাদ হোসেনের অধিকাংশ জমি নষ্ট হয়ে গেছে। সাইক্লোন আম্ফানের পরে তার জমি প্রায় দুই বছর লবণ পানির তলায় ছিল।
শুধু আবদুস সালাম অথবা আমজাদ হোসেন নন, জলবায়ু পরিবর্তনের মুখে পড়ে বাংলাদেশের উপকূলের বহু কৃষক জমির অধিকার হারাচ্ছেন। অনেকের জমি ইতিমধ্যে পানির তলায় ডুবে গেছে, অনেকের জমি বিভিন্ন কারণে অনুৎপাদনশীল হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি এই কৃষক পরিবারগুলো জমিতে উৎপাদিত ধানের উপর নির্ভরশীল ছিল। ধান থেকে বাৎসরিক খাবার সংরক্ষণ করতেন। জমিতে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে তারা পরিবারের অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতেন। কিন্তু দুর্যোগ কবলিত বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বহু কৃষকের সেই সুদিন ফুরিয়ে গেছে।
লবণাক্ততার সাথে লড়াই
খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার সুন্দরবন নিকটবর্তী জোড়শিং গ্রামের বাসিন্দা জিল্লুর রহমান (৪৮) বলেন, ‘‘লবণাক্ততা আমাদের জীবন জীবিকায় অনেক পরিবর্তন এনেছে। আগে ধান চাষ ছিল প্রধান জীবিকা। এক সময় এলাকায় প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হতো। ধান কাটার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিক আসতো। কিন্তু এখন এই এলাকার মানুষেরা ধান কাটার জন্য অন্য এলাকায় যান শ্রমিক হিসাবে।’’
আম্ফানের পর ওই এলাকাটি অনেক দিন পানির তলায় ছিল। ২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় আইলার পরে গোটা অঞ্চল লবণাক্ততায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সংকট আরো বেড়েছে আম্ফানের পরে। ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের কৃষি এবং জীবনজীবিকাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের সমীক্ষা অনুসারে, উপকূলীয় ৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার গত দুই বছরে জলবায়ু জনিত বিপর্যয়ের কারণে ভূমি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এবং প্রায় ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবার পরিবার গত দুই বছরে প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতির কারণে আয় হ্রাসের রিপোর্ট করেছে। এছাড়াও, উপকূলীয় মাটির ৫৩ শতাংশ বিভিন্ন স্তরের লবণাক্ততার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। লবণাক্ততার কারণে ফলনের গড় ক্ষতি ২০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। ৪৬ শতাংশ পরিবার পানির লবণাক্ততার কারণে এবং বর্ধিত লবণাক্ততার কারণে উচ্চ খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৪৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ পরিবার একটি উচ্চ খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হয়েছে এবং ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ পরিবার চরম খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।
আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কর্মরত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণের হেড অব প্রোগ্রাম জাহিদ আমিন শাশ্বত বলেন, ‘‘সাইক্লোন আম্ফানে মানুষেরা পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করছে। সরকার এবং এনজিওগুলির উন্নয়ন প্রচেষ্টা রয়েছে। তবে রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে বড় আকারের কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহন করা জরুরি।’’
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পারটিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টের (সিপিআরডি) প্রধান নির্বাহী মো.
নারী প্রধান পরিবারে লড়াই কঠিন
‘‘আমরা নদীর স্রোতের সাথে লড়াই করে টিকে আছি’’, চোখের পানি মুছতে মুছতে এই কথাগুলো বলছিলেন খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার কাটমারচর গ্রামের মরজিনা খাতুন (৫০)। ২০১৫ সালে স্বামী নূরুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর মরজিনা বেগমের লড়াই শুরু হয়। প্রাকৃতিক বিপদগুলো তার লড়াই আরো কঠিন করে দিয়েছে।
‘‘সাইক্লোন আম্ফান আমি জমির অনেক ক্ষতি করেছে। পুরো জমি লবণ পানিতে ডুবেছিল। জমির একাংশ নদীতে ভেঙ্গে গেছে। সাইক্লোন আম্ফানের আগে জমিতে ভালো ফলন হতো। এখন ফলন ভালো হয় না। সংসার চালানোর জন্য নদীতে চিংড়ির পোনা ধরি’’, বলছিলেন মরজিনা খাতুন।
স্বামীর মৃত্যুর পরে মরজিনা বাবার বাড়ি চলে আসেন। বাবার কাছ থেকে পাওয়া জমি চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এক ছেলে এবং দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার। উপার্জনের জন্য মরজিনাকে অনেক লড়াই করতে হয়। ছেলে বাইরে কাজ করলেও সে অসুস্থতার জন্য বেশি রোজগার করতে পারে না। আম্ফানের পরে প্রায় এক বছর এই পরিবারটিকে লবণ পানির সাথে লড়াই করতে হয়েছিল।
কয়রা উপজেলার হাজতখালী গ্রামে দেখা হয় নারী প্রধান পরিবারের প্রধান সুধা রানী সরকারের (৬০) সঙ্গে। ৩০ বছর আগে তার স্বামী হরোচন্দ্র সরকার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। সেই থেকে এক মেয়ে নিয়ে সংসারের বোঝা বহন করছেন সুধা রানী। মেয়েকে বড় করতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে সুধা রানীকে। অভাবের কারণে মেয়েকে এক নিকট আত্মীয়ের কাছে রেখে সুধা রানী খুলনা শহরে বাসাবাড়িতে কাজ করছিলেন। আম্ফানে তার বাড়ি ডুবে ছিল প্রায় এক বছর। স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া সামান্য পরিমাণ জমি চাষ করে সুধার সংসার চলে না। তাই তাকে অন্য কাজ করতে হয়।
আম্ফানের পর খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার হাজতখালী বেড়িবাঁধে অনেক পরিবার বসবাস করেছে। তাদের সকলের বাড়ি এবং কৃষি জমি ছিল লবণ পানির তলায়। সুধা রানী এবং আরো অনেক নারী প্রধান পরিবার ওই বেড়িবাঁধে বসবাস করেছিল। শুধু সাইক্লোন আম্ফান নয়, এই অঞ্চলে ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপদ নারী প্রধান পরিবারগুলোর উপর বেশি আঘাত করে। প্রাকৃতিক বিপদগুলো তাদের সামান্য কৃষি জমি অনুৎপাদনশীল করে দেয়।
আগামীতে আরো সংকট!
ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, ঘন ঘন সাইক্লোন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপদগুলো বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় এবং সেচের পানির অভাবে কৃষিও পড়েছে হুমকির মুখে। ইতিমধ্যে লাখ লাখ লোককে শহরের বস্তিতে বা বিদেশে বাস্তুচ্যুত করেছে। বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক অনুযায়ী, গত দুই দশকে চরম আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম।
ঘন ঘন সাইক্লোনের আঘাতে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের জেলাগুলোর লাখ লাখ মানুষ বিপর্যস্ত। ২০০৭ সালের সাইক্লোন সিডর, ২০০৯ সালের সাইক্লোন আইলা, ২০১৯ সালের সাইক্লোন ফনী, একই বছরের সাইক্লোন বুলবুল, ২০২০ সালের সাইক্লোন আম্ফান, ২০২১ সালের সাইক্লোন ইয়াস এই অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এই সাইক্লোনগুলো মানুষের জীবন জীবিকায় মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। ভূমির ক্ষয়ক্ষতি মানুষদের দুর্দশা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশের উপকূলে ঘন ঘন সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে গত দুই দশকে বহু মানুষ বাড়িঘর স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়েছেন। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টার (আইডিএমসি)-এর ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট ২০২১’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার ২৩০ জন মানুষ। তাদের প্রায় সবাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে উদ্বাস্তু হয়েছেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামীতে বাস্তুচ্যুত মানুষদের সংখ্যা অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের হালনাগাদ গ্রাউন্ডসওয়েল প্রতিবেদন বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ২১ কোটির বেশি মানুষ ঘরছাড়া হতে পারে। এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে রয়েছে চার কোটির বেশি মানুষ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই ১৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফরম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)’র সমীক্ষা বলছে, কর্মসংস্থানের অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব অভিবাসনের অন্যতম কারণ। সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে আইলার কারণে অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যাদের নিজস্ব জমি ছিল না, তারা কাজ না থাকায় থাকতে পারেননি। নদীভাঙন ও আইলার মতো ঘূর্ণিঝড় সাতক্ষীরা (৪০ শতাংশ) এবং খুলনায় (৩৩ শতাংশ) মানুষ গৃহহীন করেছে। সমীক্ষা বলছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত হওয়ার পরে বাসিন্দাদের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার প্রাথমিক কারণ হল ভূমিহীন বা ভূমিহীন হওয়া।
ছবির ক্যাপসন
ছবি ১: কৃষক আব্দুস সালাম ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে তার কৃষিজমি হারিয়েছেন। এখন তিনি একজন দিনমজুর। ছবিটি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বন্যতলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: রফিকুল ইসলাম মন্টু।
ছবি ৩: একক মা সুধা রানী সরকার তার জমি থেকে একই রকম ফলন পান না। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর প্রায় দুই বছর ধরে জমি লবণাক্ত পানির নিচে ছিল। ছবিটি বাংলাদেশের খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার হজতখালী গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: রফিকুল ইসলাম মন্টু।
ছবি ৪: একসময়ের ধনী কৃষক আব্দুস সাত্তার এখন নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ছবিটি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার কুড়িকাহুনিয়া গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: রফিকুল ইসলাম মন্টু
ছবি ৫: আবদুল হামিদ বিকল্প বাঁধের বাইরে তার সব জমি হারিয়েছেন। এখন তিনটি বাঁধের পাশে বসবাস করে। ছবিটি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার দরগাতলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: রফিকুল ইসলাম মন্টু
রফিকুল ইসলাম মন্টু
১৯/০৫/২০২৫
ঢাকা/তারা//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঘ র ণ ঝড় উপক ল প র ক ত ক ব পদগ ল আবদ স স ল ম র শ য মনগর আম ফ ন র প জ বন জ ব ক ন র ব হ কর উপজ ল র ক লবণ প ন র ২০২০ স ল ঘ র ণ ঝড় ক পর ব র শ পর ব র পর ব র র দ ই বছর উপক ল র লবণ ক ত এক সময় গত দ ই কর ছ ল র জন য র জ বন ত হয় ছ অন ক ক র উপর উৎপ দ দশম ক এখন ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানালেন জামায়াত আমির
দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মাদ ইউনূসকে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠক থেকে এ আহ্বান জানান জামায়াত আমির।
রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।
বৈঠকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।