চাকরি জীবন থেকে অবসর নিচ্ছেন প্রিয় শিক্ষক- এমন খবরে বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। সৃষ্টি হয় আবেগঘন এক পরিবেশ। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে কুলাউড়ার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের মজিরউদ্দিন-খায়রুন্নেছা মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মছদ্দর আলীকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়। দীর্ঘ ৩৪ বছর শিক্ষকতা শেষে অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় বিদায় নেন মছদ্দর আলী।

এদিন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে সম্মাননা স্মারক, উপহার সামগ্রী ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। বিদ্যালয় থেকে শেষ কর্মদিবসে সংবর্ধনা শেষে ফুলেল সজ্জিত গাড়িবহরে মছদ্দর আলীকে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খানমের সভাপতিত্বে ও শিক্ষক রুম্পা দাসের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইফতেখার হোসেন। সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন অবসরপ্রাপ্ত বিদায়ী শিক্ষক মোহাম্মদ মছদ্দর আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সৌরভ গোস্বামী, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.

আব্দুল মুছাব্বির, মদরিছ আলী, দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি সৈয়দ আশফাক তানভীর, প্রধান শিক্ষক আব্দুল মছব্বির শামীম, মন্তাজ আলী, রাজনগর স্কুলের শিক্ষক আব্দুর রসিদ, সহকারী শিক্ষক সুমা রানী দেব, মাজেদা সুলতানা, মো. আব্দুল মুক্তাদির, অভিভাবক আব্দুর রহমান খলিল, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট আব্দুর রহমান, পর্তুগাল প্রবাসী কামরুল হাসান, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাইদ আহমদ চৌধুরী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ব্যবসায়ী লুৎফুর রহমান প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবসরপ র প ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা

বাংলাদেশে পুলিশে পেশাদারি মনোভাব গড়ে না ওঠার জন্য এই বাহিনীকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারকে দায়ী করছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, বিভাজিত সমাজে ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’—এমন নানা তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। যৌথভাবে এ বৈঠক আয়োজন করে প্রথম আলো ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতি। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। একটি প্রবন্ধ তুলে ধরেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অবসরপ্রাপ্ত) ও বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি ইয়াসমিন গফুর।

নিজের পেশাজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বলেন, ‘আমি দুই সরকারপ্রধানের (সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গেই কাজ করেছি। অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেয়ে একটা ভদ্রতা, সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে হয়। দেখা করলে অনেক কথার পরও বা অল্প কথার পরও ‘এ কি আমাদের?’—এমন কথা শুনলে প্রথমেই বিব্রত বোধ করতে হয়।’

সরকারের পরিবর্তনে পুলিশে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে প্রভাবিত হওয়ার উদাহরণ দিয়ে মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘বাড়ি ফরিদপুর যদি হয় বা ফরিদপুরের আশপাশে হয়, কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট হবে না। আবার আরেক সময় বগুড়ায় বাড়ি, ঝিনাইদহে বাড়ি, দিনাজপুরের বাড়ি, তাহলে চাকরিতে নেওয়া যাবে না বা ক্ষেত্রবিশেষে পদোন্নতি হবে না।’ এ ধরনের মনোভাব থেকে বের হতে না পারলে পুলিশ বাহিনীর সংস্কার বা পেশাদারি মনোভাব ফেরানো কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরও আচরণের পরিবর্তন না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে নুরুল হুদা বলেন, ‘এক অদ্ভুত ব্যাপার। এখানে দুই হাজারের মতো লোক মারা গেল। অথচ বিহেভিয়ারে চেঞ্জ নেই।’

দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঠিকভাবে কাজ করতে না পারার অন্তরায় হিসেবে নিয়োগে দুর্নীতি এবং সমাজে বিভাজনকে চিহ্নিত করেন সাবেক এই পুলিশপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এই যে প্রচুর সংখ্যার লোক পয়সা দিয়ে চাকরিতে ঢুকেছে বা এখানে হলে...অনেক পয়সা হয়, এই অ্যাটিচিউড (আচরণ) থাকলে তো ল এনফোর্সমেন্ট (আইনশৃঙ্লা নিয়ন্ত্রণ) মুশকিল। আর ল এনফোর্সমেন্টের আরেকটা বড় জিনিস হচ্ছে আমি যে সমাজে কাজ করতে যাচ্ছি, সেই সমাজ কতখানি বিভাজিত।’

সংস্কারের পটভূমিতে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের কর্মপদ্ধতি জানতে চেয়েছেন নুরুল হুদা। পুলিশ রিমান্ডের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এই গোলটেবিল বৈঠকে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম আকবর আলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি কাজী মো. ফজলুল করীম বৈঠকে অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে
  • পুলিশ লাইনসগুলো গোপন কারাগারে রূপান্তরিত হয়েছিল: নূর খান
  • মাঝে মধ্যে শুনতে হয়, ‘উনি কী আমাদের লোক’: আইজিপি
  • ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা
  • মবের ঘটনা নানাভাবে রাজনীতিকরণ করা হয়: এনসিপি নেতা আদীব