ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুনে এক অসাধারণ ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল। পুনের ওয়ানওরিতে বিয়ের অনুষ্ঠানের সময় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে একটি হিন্দু পরিবারের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল একটি মুসলিম পরিবার।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়ানওরি এলাকার একটি হলে এক মুসলিম যুগলের বিয়ে–পরবর্তী অনুষ্ঠান চলছিল। ওই সময় ঠিক পাশেই খোলা মাঠে এক হিন্দু যুগলের বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছিল। সন্ধ্যা ৬টা ৫৬ মিনিটে তাদের ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল।

সংস্কৃতি কাওয়াদে পাতিল ও নরেন্দ্র গালান্দে পাতিলের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল অলংকরণ লনসে সন্ধ্যা ৬টা ৫৬ মিনিটে। কিন্তু হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়।

নরেন্দ্রের পরিবারের এক সদস্য জানান, ওই মাঠের চারপাশে তখন হুলুস্থুল অবস্থা। ঠিক পাশেই একটি মুসলিম যুগলের বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল।

ওই সদস্য বলেন, ‘আমরা তাদের অনুরোধ করি, যেন কিছু সময়ের জন্য আমাদেরকে তাদের হলের অর্ধেক অংশ ব্যবহার করার সুযোগ দেওয়া হয়। সেখানে আমরা “সপ্তপদী” (বিয়ের প্রধান রীতির) অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে চাই।’

মুসলিম পরিবারটি সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে যায় এবং তারা তাদের মঞ্চ ছেড়ে দেয়।

পাতিল পরিবারের ওই সদস্য বলেন, ‘ওই পরিবারের অতিথিরাও মঞ্চে আমাদের ধর্মীয় রীতির আয়োজন করতে সাহায্য করেন। দুই ধর্মের রীতিনীতি ও বিশ্বাসকে সম্পূর্ণ সম্মান জানিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ করা হয়।’

পরে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া উপভোগ করেন। নববিবাহিত মুসলিম দম্পতি মাহিন ও মোহসিন এবং হিন্দু দম্পতি নরেন্দ্র ও সংস্কৃতি মঞ্চে উঠে একসঙ্গে ছবি তোলেন।

এই ঘটনা দুই ধর্মের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সহানুভূতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রইল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র অন ষ ঠ ন পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ