ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশনে চাকরি করতে চাইলে
Published: 26th, May 2025 GMT
ডেভেলপমেন্ট খাতে বিশেষ করে ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশনসে ক্যারিয়ার করতে চাইলে শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস জরুরি।
এই খাতে কাজ করতে হলে যেতে হয় দূরদূরান্তে, রোদে, বৃষ্টিতে, পাহাড়-জঙ্গলে। মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয়, কখনো কমিউনিটির গল্প তুলতে, কখনো ক্রাইসিস নিয়ে কাজ করতে, কখনো বা হাই লেভেল মিশন কাভার করতে। তাই যদি ভাবেন যে শুধু এসি রুমে বসে কাজ করবেন, আর সবখানে ফোর-হুইলারে যাওয়া-আসা করবেন, তাহলে এই ক্যারিয়ার আপনার জন্য না।
আরও পড়ুন৪৭তম বিসিএস পরীক্ষা: বিষয়ভিত্তিক মডেল টেস্ট-৩২৪ মে ২০২৫তবে শুধু শরীর ফিট থাকলেই হবে না, লাগবে মানসিক শক্তিও। এই ধরেন, বান্দরবানের কোনো রিমোট জায়গায় কাজ করতে গেলেন, যেখানে নেটওয়ার্কও নেই। সারা দিন পর একটুখানি সিগন্যাল পাওয়া মাত্রই ঢাকার অফিস থেকে মেসেজ—কালকের মধ্যে একটা ক্রাইসিস সলভ করতে হবে। এই মুহূর্তে আপনি অফিসের হয়ে বান্দরবানে, নাকি ঘুরতে মালয়েশিয়ায়, তা কারও মাথাব্যথা না। তাই মানসিকভাবে প্রস্তুত না থাকলে এমন পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়া স্বাভাবিক। পাশাপাশি নতুন আইডিয়া, স্টোরিটেলিং বা ক্যাম্পেইনের জন্য দরকার পজিটিভ মাইন্ডসেট। তাই যদি ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কাজ করতে চান, আজ থেকেই নিজের যত্ন নেওয়া শুরু করুন, শরীর আর মন ফিট না থাকলে এই দিকে পা না বাড়ানোই ভালো।
এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে হলে দরকার তিনটি এইচ: হেড, হার্ট ও হ্যান্ড অর্থাৎ মাথা, মন আর হাত।
আরও পড়ুনপল্লী বিদ্যুতে বড় নিয়োগ, ২ পদে নেবে ২১৫০ জন১৬ মে ২০২৫মাথা:ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কাজ মানেই সময়োপযোগী পরিকল্পনা আর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। তাই জানতে হবে আমার আশপাশে কী ঘটছে, দেশের বাইরে কী চলছে। এর মানে এই নয় যে সাধারণ জ্ঞানের বই নিয়ে বসে থাকতে হবে! বরং রিলস-এ সময় কম দিয়ে, সময় কাজে লাগাতে হবে। দেশি-বিদেশি নিউজ পোর্টাল নিয়মিতভাবে পড়তে হবে। পাশাপাশি মিশতে হবে মানুষের সঙ্গে, তৈরি করতে হবে স্ট্রং নেটওয়ার্ক।
মন: এই সেক্টরের মূলেই আছে মানুষ আর তার চারপাশের পরিবেশ। এখানে কাজ করতে হলে মানুষের প্রতি সহানুভূতি থাকা জরুরি।
হাত: মন আর মাথা থাকলেই হবে না, দরকার দক্ষতা। এই সেক্টর অনেক বড়, সেখানে আপনার জায়গা কোথায়, সেটা খুঁজে বের করতে হবে। ক্লাসরুম থেকে শেখার বাইরে আরও অনেক কিছু শিখতে হয়। আমার ক্ষেত্রে যেমন কমিউনিকেশন, আউটরিচ ও ক্যাম্পেইন এই জায়গাগুলোতেই আমি নিজের অবস্থান গড়ে তুলেছি। অন্য কিছু পারি না, কিন্তু আফসোসও নেই। কারণ, আমি যেটা করি, সেটা ভালোবেসে করি। কাজটি যদি উপভোগ করেন, সেটি হয় প্যাশন। জোর করে করলে সেটা স্ট্রেস। এখন আপনি স্ট্রেস নেবেন নাকি প্যাশন, সেটা আপনার হাতে।
আরও পড়ুনটিসিবিতে নতুন নিয়োগ, ২২ পদের আবেদন অনলাইনে১৪ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড ভ লপম ন ট ক জ করত
এছাড়াও পড়ুন:
‘গণতন্ত্র ব্যর্থ, আধুনিক সভ্যতা ভেঙে পড়েছে’
১০০ বছরে পা রেখেছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার হিসেবে খ্যাত দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় মালয়েশিয়ার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থেকে দেশটির খোলনলচে বদলে দিয়েছেন এই বর্ষীয়ান নেতা। ১০০তম জন্মদিনের প্রাক্কালে নিজের দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানে মাহাথির বলেছেন, গণতন্ত্র যেমন কাজ করেনি, তেমনি আধুনিক সভ্যতাও ব্যর্থ হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
দুই দফায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মাহাথির গণতন্ত্র নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘গণতন্ত্র মানুষের তৈরি একটি পদ্ধতি। এটি নিখুঁত নয়। গণতন্ত্রকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারলে এর থেকে ভালো কিছু পাওয়া যায় না।’ তাঁর মতে, বহুদলীয় গণতন্ত্র বরং দুর্বলতা তৈরি করে।
মাহাথির বলেন, ‘গণতন্ত্রে শুধু দুটি রাজনৈতিক দল থাকলে ভালো হয়। তখন একটি জিতবে, একটি হারবে। এভাবে একটি শক্তিশালী সরকার গঠন সম্ভব। কিন্তু সবাই নেতা হতে চেয়ে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়, সে ক্ষেত্রে কোনো পক্ষই সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় না। তাই গণতন্ত্র বহুক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়।’
চলমান আন্তর্জাতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষাপটে মাহাথির সরাসরি অভিযোগ করেন, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ এক ধরনের গণহত্যা, আর যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়ে তা চালিয়ে যেতে সহায়তা করছে। তিনি আরও বলেন, ‘একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে ক্ষুধা ও যুদ্ধ ব্যবহার করা হচ্ছে, অথচ যুক্তরাষ্ট্র সেই অপরাধীদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। এটা পশ্চিমা সভ্যতার পতনের প্রতিচ্ছবি। আমরা এমন এক সময় পার করছি, যেখানে মানবিক মূল্যবোধ ধ্বংস হয়ে গেছে।’ বিশ্বনেতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মালয়েশিয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
নিজের শতবর্ষের দীর্ঘ জীবনের পেছনে রহস্য কী– এমন প্রশ্নের জবাবে মাহাথির বলেন, ‘অতিরিক্ত খাওয়া-দাওয়া না করাই ভালো। আমি নিয়মিত শরীরচর্চা করি, মস্তিষ্কের ব্যায়াম যেমন– পড়াশোনা করি, লিখি, কথা বলি, বিতর্ক করি, নিজেকে সক্রিয় রাখি।’ এ সময় ৯৮ বছর বয়সী স্ত্রী সিতি হাসমাহকে সারাজীবনের সঙ্গী হিসেবে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেন মাহাথির।
সাক্ষাৎকারে ভবিষ্যতের মালয়েশিয়া ও মুসলিম বিশ্ব নিয়েও নিজের ভাবনা জানিয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তিনি মনে করেন, মালয়েশিয়ার ভবিষ্যতের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুশাসন গুরুত্বপূর্ণ। মুসলিম বিশ্বের বিষয়ে আক্ষেপ করে মাহাথির বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মতো ইস্যুতেও মুসলিম দেশগুলো একমত হতে পারে না। তাই ওআইসিও কিছুই করতে পারে না।’
১৯২৫ সালের ১০ জুলাই তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশ মালয়েশিয়ার কেদাহ প্রদেশে জন্ম হয় মাহাথিরের। পেশায় চিকিৎসক হলেও মাত্র ২১ বছর বয়সেই রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ১৯৬৪ সালে পার্লামেন্টে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন মাহাথির। এর পর ১৯৮১ সালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশটির ইতিহাসে দীর্ঘতম টানা ২২ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর শাসনামলে মালয়েশিয়া অর্থনৈতিকভাবে অভূতপূর্ব উন্নতি লাভ করে। ৮০ বছর বয়স পেরিয়েও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে আবারও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়ে দুই বছর পর পদত্যাগ করেন মাহাথির।