সাবেক দুই মন্ত্রীর ছেলে–বোনসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি
Published: 1st, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রারসহ পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার এ–সংক্রান্ত অফিসে আদেশ জারি করেন উপাচার্য ওমর ফারুক ইউসুফ।
অব্যাহতি পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আফছারুল আমীনের ছেলে মাহিদ বিন আমীন ও সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদের বোন আইরিন সুলতানাও রয়েছেন। চিকিৎসক মাহিদ বিন আমীন সহকারী রেজিস্ট্রার এবং চিকিৎসক আইরিন সুলতানা উপ–কলেজ পরিদর্শক ছিলেন।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার চিকিৎসক হাসিনা নাসরীন, সহকারী রেজিস্ট্রার এ এম শাহদাত হোছাইন ও সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবু মোহাম্মদ মাসুদ। হাসিনা নাসরীন নোয়াখালীর পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদ উল্লাহ খানের বোন। শাহদাত ও মোহাম্মদ মাসুদ ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন বলে জানা গেছে।
অব্যাহতি আদেশে লেখা হয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত চতুর্থ সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত কর্মকর্তার নিয়োগ ও পদোন্নতি সংবিধি ২০২২–এর ধারা ১৪–এর ২৪ উপধারা অনুযায়ী চাকরি থেকে অব্যাহত দেওয়া হলো।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপাচার্য ওমর ফারুক ইউসুফকে ফোন করা হলে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অব্যাহতি পাওয়া সহকারী রেজিস্ট্রার মাহিদ বিন আমীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কালও অফিস করেছি। পরে আজ চিঠি পেলাম। এখন দেখি কী করা যায়।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষক–জনবল নিয়োগসহ ৪ দাবিতে ময়মনসিংহ আইএইচটি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
ময়মনসিংহের ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) শিক্ষক ও জনবল নিয়োগসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার সকালে পাঠ কার্যক্রম বন্ধ রেখে একাডেমিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি করা হয়।
নগরের মাসকান্দা এলাকায় আইএইচটির অবস্থান। কোনো জনবল নিয়োগ না হলেও বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদের অধীনে ল্যাবরেটরি ও রেডিওলজি বিভাগে ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি ও পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে তিনটি ব্যাচে ১৫৬ শিক্ষার্থী আছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে শুরু থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন মোহাম্মদ ছাইফুল ইসলাম খান। গত ৪ মার্চ তিনি ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন হিসেবে বদলি হন। এরপর প্রশাসনিক দায়িত্বে আর কেউ নেই। তবে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষক সপ্তাহে দুই দিন করে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
ক্যাম্পাসে আছে একটি চারতলা একাডেমিক ভবন, একটি পুরুষ ও একটি নারী আবাসিক হল ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আবাসন। পুরো চত্বরে ঘাস বড় হয়ে জঙ্গলময় পরিস্থিতি। একাডেমিক ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে আছে প্যাকেটবন্দী কিছু জিনিসপত্র। নিচতলার একটি কক্ষকে শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সেখানে কিছু চেয়ার ও একটি টেবিল রয়েছে। এ ছাড়া পুরো ভবনে কক্ষ থাকলেও নেই আসবাব ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিভাগভিত্তিক কোনো শিক্ষক না থাকায় ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ প্রায় ছয় মাস। ছাত্রদের জন্য ব্যবহারিক কোনো যন্ত্রপাতি ও ক্লাসে পর্যাপ্ত আসবাব, যেমন চেয়ার, টেবিল ও বেঞ্চ নেই। হলে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো আসবাব, বিছানা, চেয়ার ও টেবিল নেই; নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী। ২৫ জুন বেলা ১১টার দিকে ৯ লাখ টাকা বকেয়ার কারণে ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। পরে অবশ্য আবার সংযোগ দেওয়া হয়। এমন অবস্থায় শিক্ষাজীবন নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকা শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন।
আজ পাঠ কার্যক্রম বর্জন করে সকাল ১০টা থেকে প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবনের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের চারটি দাবির মধ্যে আছে, অবিলম্বে অধ্যক্ষ ও শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে, বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সব সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন ও মানসম্মত ক্যাম্পাস করতে হবে এবং ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আজ মানববন্ধনের পর স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে স্মারকলিপি ও পরে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মুফিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন১৫৬ শিক্ষার্থী থাকলেও নেই কোনো শিক্ষক–কর্মচারী ৮ ঘণ্টা আগেশিক্ষার্থী দেবী দেবনাথ বলেন, ‘সরকারের আছে আমাদের প্রশ্ন, যদি শিক্ষার সুব্যবস্থা না দিতে পারে, তাহলে এত টাকা খরচ করে, এত সুন্দর ভবন কেন করা হলো। ভর্তি হওয়ার সময় অনেক টাকা খরচ করে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হয়েছি। আমরা যদি জানতাম, এখানে এসে ক্ষতি হবে, তাহলে ভর্তি হতাম না। রাষ্ট্র কেন আমাদের এত ক্ষতি করল? আমাদের সঙ্গে একপ্রকার দুর্নীতি করা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মিছবাহ উদদীন আহমদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষকসহ অন্যান্য জনবল কাঠামো অনুমোদন ও নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান।