Samakal:
2025-05-01@04:53:28 GMT

সংবিধান সংশোধন বা বাতিল

Published: 14th, January 2025 GMT

সংবিধান সংশোধন বা বাতিল

আলোচিত জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের খসড়া করেছে সরকার। এতে বিদ্যমান সংবিধানকে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার লালনের দলিল আখ্যা দিয়ে তা সংশোধন কিংবা প্রয়োজনে বাতিলের কথা বলা হয়েছে। যদিও বিএনপি সংবিধান বাতিলের ঘোর বিরোধী। গত ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর ধরে খসড়ায় রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রস্তাব রয়েছে।

অভ্যুত্থানের এক পর্যায়ে জনগণের লড়াইয়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সমর্থনের স্বীকৃতি এবং আত্মমর্যাদা, সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচারের যে আদর্শে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে, তা বাস্তবায়নে সংগঠিত হওয়ার ঘোষণা রয়েছে ঘোষণাপত্রে।

মতামতের জন্য খসড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণঅধিকার পরিষদকে পাঠিয়েছে সরকার। ঘোষণাপত্রের দাবিতে সোচ্চার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেও দেওয়া হয়েছে। বিএনপির দাবি পূরণে খসড়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর গত ১৫ বছরের আন্দোলনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
দলগুলো সমকালকে খসড়া পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গতকাল মঙ্গলবার জানান, ঘোষণাপত্র চূড়ান্তে বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস। ইতোমধ্যে কয়েকটি পক্ষের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে।
সংবিধান সংশোধন ও জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন ও সংবিধান সংস্কারের কাজ করবে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের সূত্রপাত করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণাপত্রের দাবিতে প্রথম সোচ্চার হয়। পরে ছাত্র নেতৃত্বের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটিও একই দাবি তোলে। অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা ২৮ ডিসেম্বর একযোগে ঘোষণা দেন, বছরের শেষ দিনে শহীদ মিনারে সমাবেশ থেকে ঘোষণাপত্র প্রকাশের। বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তৈরি করে। 

ঘোষণাপত্রের বিষয় কেন সামনে আনা হলো, প্রভাব কী হতে পারে– তা নিয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি দল প্রশ্ন তোলে। সেই সময়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছিল, এর সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক নেই। তবে এক দিন পরই জানায়, সরকার সহযোগিতা করবে। ৩০ ডিসেম্বর ছিল নাটকীয়। সেই রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐকমত্যে ঘোষণাপত্র তৈরি করবে।

রাজনৈতিক সূত্রের খবর, বিএনপির তীব্র আপত্তির কারণেই সরকারকে এ অবস্থান নিতে হয়। অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দল ও সংগঠনকে মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরিয়ে উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। পরে ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তা থেকে ঘোষণাপত্র প্রকাশে সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। দাবির পক্ষে জনমত গঠনে প্রচারপত্র বিলি ও গণসংযোগ করছে ছাত্র নেতৃত্ব।
জাতীয় নাগরিক কমিটির ঘোষণাপত্রের খসড়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা থাকলেও সরকারের খসড়ায় তা রাখা হয়নি।
 
কী আছে খসড়ায়
সাতচল্লিশে ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি, একাত্তরে জনযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাহাত্তরের সংবিধান স্বাধীনতার শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যাশার প্রতিফলনে ব্যর্থ হয়েছিল। পরবর্তী শাসনামলেও রাষ্ট্র এবং প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণে ব্যর্থতা ছিল। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও শাসকগোষ্ঠীর জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়নি।
খসড়ায় বলা হয়েছে, ক্ষমতার সুষ্ঠু রদবদলের রাজনৈতিক ব্যর্থতার সুযোগে ষড়যন্ত্রমূলক ১/১১-এর মাধ্যমে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র আধিপত্যের পথ সুগম হয়। শেখ হাসিনার শাসনামলের গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, দলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন ও পরিবর্তন রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে। বিগত সরকারের আমলে গণবিরোধী একনায়কতান্ত্রিক, মানবাধিকার হরণকারী শক্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুনি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিত করে। শেখ হাসিনার পরিবারের নেতৃত্বে উন্নয়নের নামে দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস ও বিদেশে টাকা পাচার সব সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে।

এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল, ছাত্র, শ্রমিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ গত ১৫ বছর নিরন্তর সংগ্রাম করে জেলজুলুম, গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। বিদেশি রাষ্ট্রের তল্পিবাহক আওয়ামী লীগ ন্যায়সংগত আন্দোলনকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করেছে।
এর পরই খসড়ায় রয়েছে গত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের কথা। বলা হয়েছে, মানুষের ভোটাধিকার এবং প্রতিনিধিত্ব বঞ্চিত করে ছাত্র ও তরুণদের নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয়। সরকারি চাকরিতে একচেটিয়া দলীয় ও কোটাভিত্তিক নিয়োগ চরম বৈষম্য তৈরি করে। এই ধারা বর্ণনার পর জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের কথা রয়েছে খসড়ায়। বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের দমন এবং গণহত্যার পরও দল-মত নির্বিশেষে ছাত্র-জনতা গণবিক্ষোভকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ দেন। অভ্যুত্থান চলাকালে ছাত্রদের ৯ দফা দমনে সরকার নির্মমতা চালায়। ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ জারি করে ব্লক রেইডের মাধ্যমে আন্দোলন গুঁড়িয়ে দিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে অদম্য ছাত্র আন্দোলনে রাজনৈতিক দল, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, শ্রমিক প্রতিষ্ঠানসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়। এক পর্যায়ে জনগণের লড়াইয়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও সমর্থন দেন। ফ্যাসিবাদ বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে জনগণ ঢাকামুখী লংমার্চ করলে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান।
ঘোষণাপত্রের খসড়ায় বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট মোকাবিলায় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায় অভিব্যক্তি রাজনৈতিক এবং আইনি দিক থেকে বৈধ, যুক্তিসংগত ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ছাত্র-জনতার সেই অভিপ্রায় বলে, যে আদর্শে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে, তা বাস্তবায়নে সংগঠিত হলাম।
ভূতাপেক্ষ বাস্তবায়নে সংসদ ভেঙে দিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা এবং সুশাসন, সুষ্ঠু নির্বাচন ও ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রোধে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে ঘোষণাপত্রে। জুলাই গণহত্যা, আওয়ামী লীগ আমলের অপকর্মের বিচারের অঙ্গীকারের মাধ্যমে দ্বিতীয় জনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে।

বিএনপি সময় নিচ্ছে
দলীয় সূত্রের খবর, ঘোষণাপত্রের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিএনপির। সাংবিধানিক সংকট ও শূন্যতা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখিয়ে বিএনপি সংবিধান বাতিলের বিপক্ষে। গত ১৫ বছরের আন্দোলনের স্বীকৃতি দেওয়া হলেও ঘোষণাপত্র নিয়ে সময়ক্ষেপণের নীতি নিয়েছে বিএনপি। দলটি ঘোষণাপত্রের চেয়ে দ্রুত নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে। নেতাদের ভাষ্য, ঘোষণাপত্র নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে নির্বাচন বিলম্বের আশঙ্কা রয়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে যাবে বিএনপি।
খসড়া পেয়েছেন জানিয়ে গতকাল মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিষয়টি এত বেশি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ যে, এক দিনের নোটিশে মতামত সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আলোচনা করেছি; আরও হবে। অন্যান্য দলের সঙ্গেও আলোচনা করব। সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মত নিতে হবে। কারণ, সংবিধানের ব্যাপারেও বহু কথা আছে, যেগুলো আমাদের দেখতে হবে।’

অন্যান্য দল কী বলছে
খসড়া পাওয়ার কথা জানিয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সমকালকে বলেছেন, ‘পর্যালোচনা করে মতামত দেওয়া হবে।’ জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে খসড়া দেওয়া হয়েছে। তাদের মাধ্যমেই মতামত জানাবে নাগরিক কমিটি।’
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ‘অভ্যুত্থানের সব অংশীজনের অবদানের প্রতিফলন থাকতে হবে ঘোষণাপত্রে।’

ছাত্র নেতৃত্ব দ্রুত চায়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, খসড়া পেয়েছি। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাব। সরকার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ ছাড়া ঘোষণাপত্র দিতে দেরি করলে অপেক্ষার কোনো সুযোগ থাকবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে।
এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, শিক্ষক নেটওয়ার্ক, নারী নেটওয়ার্কসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক হবে। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসা হয়নি। দলগুলো ঘোষণাপত্রের বিষয়ে একমত হলেও এতে কী থাকবে, তা নিয়ে কিছুটা দ্বিধান্বিত। প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে বৈঠকে সব চূড়ান্ত হবে। ওই বৈঠকের মাধ্যমে ঘোষণাপত্র জারির তারিখও স্পষ্ট হবে।
মাহফুজ আলম বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সহযোগী ছাড়া অন্য অনেকের সঙ্গে বসা হয়েছে। জাতীয় পার্টিকে ডাকার প্রয়োজন মনে হয়নি। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সঙ্গে বসার সুযোগ রয়েছে। অন্য বাম দলের সঙ্গে বসা হয়েছে।


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র র খসড় য় ব র র খসড় ১৫ বছর চ ত কর ত র জন ব এনপ বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।  

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।

তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।” 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে। 

বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থগিতের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
  • ট্রাম্প কানাডাকে ‘ভেঙে ফেলতে’ চেয়েছিলেন
  • পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
  • হামদর্দের গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা
  • প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট, ইউনিয়ন পরিষদটিতে চার মাস ধরে সব সেবা বন্ধ
  • সংসদে সংরক্ষিত আসন, না তৃণমূল রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ?
  • স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে: