বরিশালে গ্রেপ্তার-আত্মগোপনে আ.লীগ নেতারা, তৃণমূলে হতাশা
Published: 15th, January 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরপরই মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে নিজেরাও আত্মগোপনে চলে গেছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। চেষ্টা করেও যারা দেশত্যাগে ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। দলের দুঃসময়ে নেতাদের পাশে না পেয়ে আতঙ্ক আর হতাশায় দিন পার করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তাদের অনেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে রযেছেন। ফলে দীর্ঘ ১৫ বছর রাজপথ দাঁপিয়ে বেড়ানো নেতাকর্মীরা অজানা শংঙ্কায় দিন পার করছেন।
দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বিনাভোটে সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমিদখল, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জড়িয়ে অনেকে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দেশে আলিশান বাড়ি, গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়লেও অনেকে মোটা অংকের অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। অর্থ সম্পদ ও বাড়ি-গাড়ি ফেলে এতটা আকস্মিকভাবে দেশ থেকে পালাতে হবে, এমনটা তাদের কল্পনায়ও ছিল না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলনে দেশ যখন উত্তাল, ঠিক সেই সময়ে নিজেকে সেইভ জোনে নিতে জুলাই মাসের শেষ দিকে বিদেশে পাড়ি জমান মন্ত্রি-প্রতিমন্ত্রীসহ কয়েক ডজন হেভিয়েট নেতা। শুরুতে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার তালিকায় রয়েছেন বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী লীগের অভিভাবক হিসেবে পরিচিত আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ। শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি এক দফায় রূপ নিলে তড়িঘড়ি করে ছোট ছেলে আশিক আব্দুল্লাহকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান তিনি। আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর অনুপস্থিতি বরিশালের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মিদের হতাশায় ফেলে দেয়। বিগত দিনে যতবারই আওয়ামী লীগের দুঃসময় এসেছে, ততবারই তিনি ভারতে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেছেন। বরিশাল-৪ আসনের এমপি পংকজ দেবনাথও নিরাপদে ভারতে পালিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে।
অনেক চেষ্টা করেও দেশ থেকে পালাতে পারেননি বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বড় ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। এছাড়া আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছোট ভাই বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাতও দেশ থেকে পালাতে পারেননি। বর্তমানে চাচা-ভাতিজা (খোকন-সাদিক) দেশের মধ্যে সুরক্ষিত স্থানে আত্মগোপনে আছেন বলে মনে করছেন তাদের বিশ্বস্তজনেরা।
একইভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুই বারের সংসদ সদস্য তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুছ, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন, বাকেরগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৬ আসনে প্রথমবার নৌকার টিকিট নিয়ে এমপি হওয়া অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুল হাফিজ মল্লিক। সরকার পতনের পর তাদের খোঁজ নেই। এলাকার ঘনিষ্ঠজনরাও তাদের অবস্থান জানেন না।
শুধু এই নেতারা নন, বরিশালের ১০ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ৬টি পৌরসভার মেয়র, এসব এলাকার আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের খোঁজ নেই।
এদিকে, অনেকে ভারতে পালাতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২২ সেপ্টেম্বর সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.
একইভাবে গত ১৪ নভেম্বর বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। ২৬ ডিসেম্বর ঢাকার কাকরাইলের বাসা থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম পোদ্দারকে গ্রেপ্তার করে রমনা থানা পুলিশ।
এছাড়াও বেশ কিছু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার হওয়ায় এবং অধিকাংশ নেতা আত্মগোপনে থাকায় তুণমূলের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হতাশায় পড়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘‘কীভাবে নিজেদের সেইভ করব জানি না। ক্ষমতায় থাকাকালীন শুধু নেতাদের হুকুম পালন করেছি। তারা শত শত কোটি টাকার মালিক হয়ে আত্মগোপনে আছেন, আর আমরা কর্মীরা পালাতে না পেরে মার খাচ্ছি। রাতে ভয়ে নিজ বাশায় ঘুমাতে পারি না। জানি না আগামীতে কী অপেক্ষা করছে।’’
ঢাকা/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ন ত কর ম আসন র স র আওয় ম হয় ছ ন কর ম র উপজ ল করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জিমেইলের জায়গা খালি করার ৫ কৌশল
জিমেইলের স্টোরেজ দ্রুত পূর্ণ হয়ে গেলে গুরুত্বপূর্ণ ই–মেইল প্রাপকের কাছে না পৌঁছে ফিরে আসে বা জিমেইলের বেশ কিছু সুবিধা ঠিকমতো ব্যবহার করা যায় না। ফলে দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে বিঘ্ন ঘটে। জিমেইলে নির্ধারিত স্টোরেজের চেয়ে বেশি জায়গা ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীদের কাছে থেকে অর্থ নিয়ে থাকে গুগল। তবে অর্থ খরচ না করে সহজেই এ সমস্যার সমাধান করা যায়। জিমেইলের স্টোরেজ খালি করার পদ্ধতিগুলো জেনে নেওয়া যাক।
১. ট্র্যাশ ও স্প্যাম খালি করামুছে ফেলা ই–মেইলগুলো সঙ্গে সঙ্গে মুছে যায় না। ট্র্যাশ ফোল্ডারে ৩০ দিন পর্যন্ত থাকে এবং এই সময়েও জিমেইলের জায়গা পূর্ণ থাকে। স্প্যাম ফোল্ডারের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। আর তাই নিয়মিত ট্র্যাশ ও স্প্যাম ফোল্ডারে থাকা ই–মেইলগুলো মুছে ফেলতে হবে।
২. বড় অ্যাটাচমেন্টযুক্ত ই–মেইল মুছে ফেলাই–মেইলের অ্যাটাচমেন্ট সাধারণত সবচেয়ে বেশি জায়গা দখল করে। আর তাই অপ্রয়োজনীয় অ্যাটাচমেন্টযুক্ত ই–মেইলগুলো মুছে ফেলতে হবে। জিমেইলের সার্চ বক্সে has:attachment larger:10M লিখলেই ১০ মেগাবাইটের বেশি আকারের ই–মেইলগুলো দেখা যাবে।
৩. নিউজলেটার ও প্রমোশনাল ই–মেইলের নিবন্ধন বাতিলপ্রমোশনস ট্যাবে জমে থাকা অফার, বিজ্ঞাপন ও নিউজলেটার দ্রুত জায়গা দখল করে রাখে। আর তাই একই ধরনের বার্তা বেশি এলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ই–মেইল সাবস্ক্রিপশন সুবিধা আন সাবস্ক্রাইব করতে হরে।
৪. গুগল ওয়ান স্টোরেজ ম্যানেজার ব্যবহারগুগল ওয়ানের স্টোরেজ ম্যানেজারে ই–মেইল, ড্রাইভ ও ফটোসের স্টোরেজ ব্যবহার এক জায়গায় দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি জায়গা দখল করা অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলো চিহ্নিত করে মুছে ফেলতে হবে।
৫. গুগল ড্রাইভ বা অন্যান্য ক্লাউডের লিংক ব্যবহারবড় ছবি বা ভিডিও সরাসরি ই–মেইলে পাঠানোর বদলে গুগল ড্রাইভ বা অন্যান্য ক্লাউডের লিংক ব্যবহার করলে কম জায়গা দখল করে। আর তাই ছবি বা ভিডিওগুলো জিমেইলের বদলে ড্রাইভ বা অন্যান্য ক্লাউডের লিংকের মাধ্যমে আদান-প্রদান করতে হবে।