রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক কোনো সংগঠন না রাখার সুপারিশ করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। কমিশন বলেছে, রাজনৈতিক দলের ছাত্র, শিক্ষক ও শ্রমিক সংগঠন, ভ্রাতৃপ্রতিম বা যেকোনো নামেই হোক না কেন, না থাকার বিধান করা যেতে পারে।

বুধবার নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়। এই কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।

কমিশনের সুপারিশে নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে আরও বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিশনের সুপারিশে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন অংশে বলা হয়েছে- ক.

নতুন দল নিবন্ধনের শর্ত শিথিলের লক্ষ্যে ১০ শতাংশ জেলা এবং ৫ শতাংশ উপজেলা/থানায় দলের অফিস এবং ন্যূনতম পাঁচ হাজার সদস্য থাকার বিধান করা। খ. দলের সাধারণ সদস্যদের তালিকা প্রস্তুত করে তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এবং উক্ত তালিকা প্রতিবছর একবার হালনাগাদ করা। গ. আইসিটি (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) আইনে সাজাপ্রাপ্ত সকল ব্যক্তিকে কোনো দলের সাধারণ সদস্য বা কমিটির সদস্য হওয়ার অযোগ্য করা। ঘ. গুরুতর মানবাধিকার (বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, অমানবিক নির্যাতন, সাংবাদিকদের/মানবাধিকারকর্মীর ওপর হামলা, অর্থ পাচার) লঙ্ঘনকারীদের বিষয়ে প্রণীত একটি বিশেষ আইনের অধীনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে সৃষ্ট আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হলে সেসব ব্যক্তিদের কোনো দলের সাধারণ সদস্য বা কমিটির সদস্য হওয়ার অযোগ্য করা। ঙ. দলের সাধারণ সদস্যদের গোপন ভোটে দলের স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল কমিটি নির্বাচিত করা। চ. দলের সাধারণ সদস্যদের গোপন ভোটে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য তিনজনের একটি প্যানেল তৈরি এবং তা থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রদানের বিধান করা।

ছ. দলের সদস্যদের চাঁদা ন্যূনতম ১০০ টাকা ও কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে অনুদান হিসেবে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা নেওয়ার বিধান করা। এ অনুদান ব্যাংকব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রহণের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আয়কর রিটার্নে প্রদর্শনের বিধান করা। জ. দলের তহবিল ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে বিদ্যমান ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিবন্ধিত দলের নিরীক্ষিত আয় ও ব্যয়ের হিসাব বাধ্যতামূলকভাবে নিরীক্ষণের বিধান করা। ঝ. দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র, শিক্ষক ও শ্রমিক সংগঠন, ভ্রাতৃপ্রতিম বা যেকোনো নামেই হোক না কেন, না থাকার বিধান করা। ঞ. দলের যেকোনো নামেই হোক না কেন, বিদেশি শাখা না থাকার বিধান করা। ট. দলের সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য দলের তিন বছরের সদস্য পদ থাকা বাধ্যতামূলক করা। ঠ. প্রতি ৫ বছর পরপর দল নিবন্ধন নবায়ন বাধ্যতামূলক করা। ড. পরপর দুটি নির্বাচনে অংশ না নিলে দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান বাতিল করা।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: থ ক র ব ধ ন কর ব যবস থ র সদস য স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

আমরা আশঙ্কা করছি, এইরকম আরও ঘটনা ঘটতে পারে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ যখন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন দেখছে, সেই সময় আবার নতুন করে দেশের শত্রুরা হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠেছে। গত পরশু একটি হত্যাচেষ্টা হয়েছে। এইরকম ঘটনা আরও ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি যে, এইরকম আরও ঘটনা ঘটতে পারে।’
আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। দিবসটি উপলক্ষে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিএনপির পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের দোসরদের যোগসাজশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, গবেষক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ অনেককেই তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। জাতি তার সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারায়।

বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে মেধাহীন করে দেওয়ার জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। এই দিনে বারবার সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কথা জাতি মনে করবে, স্বাধীনতার চেতনাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তাঁর পক্ষ থেকে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আজ তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এসেছেন। তাঁরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। শপথ গ্রহণ করেছেন যে, যেকোনো মূল্যে দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করবেন। সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবেন। গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ