অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আপনারা তো অনেক সংস্কার হাতে নিয়েছেন। তাহলে বিগত সময়ে যারা মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন করেছে, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিসহ মানুষকে বিচারের নামে খুন করেছে, তাদের কালো তালিকা প্রকাশ করুন। আমরা সব অন্যায়ের বিচার দাবি করেছি। সব হত্যার বিচার করতে হবে।”

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে দিনাজপুর গোর-এ শহীদ ময়দান (বড় মাঠে) জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের নামে দেশের মানুষের সঙ্গে তামাশা করেছে। রডের বদলে বাঁশ উপহার দিয়েছে। সিমেন্টের সঙ্গে ছাই মিশিয়ে দিয়েছে। তারা দেশের মানুষদের শান্তিতে থাকতে দেয়নি। দেশের ২৬ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তারা জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম করেছে। তাদের অত্যাচর-নির্যাতনের কারণে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারেনি। গত সাড়ে ১৫ বছর আমরা শান্তিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারিনি।” 

আরো পড়ুন:

নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে: গোলাম পরওয়ার

৯ বছর আগের ঘটনায় ২৮ জনের নামে মামলা

তিনি আরো বলেন, “এই দেশকে আমরা সবাই ভালোবাসি। তবে একটি দল ক্ষমতায় এসে মনে করেছিল, তারাই একমাত্র স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে ভালোবাসে, আর কেউ ভালোবাসে না। মানুষের শরীরের ঘাম ঝরিয়ে ফসল ফলায়, অন্যরা তা চুরি করে বিদেশে পাচার করে।” 

দিনাজপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহ-সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, মাহাবুবুর রহমান বেলাল, কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা সদস্য দেলোয়ার হোসেন, মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাদ্দিস ডক্টর এনামুল হক, সহ-সেক্রেটারি রাজিউর রহমান পলাশ, সাইদুল ইসলাম সৈকত, জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য ও উপজেলা আমির মো. আমিনুল ইসলাম।

ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

একজন প্রতিশ্রুতিশীল অর্থনীতিবিদ মাহতাব উদ্দিন

বাংলাদেশে অনেক তরুণ ও উদীয়মান অর্থনীতিবিদ আছেন, যাঁরা আমার ছাত্র বা ছাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে মাহতাব উদ্দিন নিঃসন্দেহে অন্যতম সেরা।

মাহতাব বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং সানেমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) গবেষণা পরিচালক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন। বর্তমানে তিনি কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন।

প্রায় এক দশক ধরে একাডেমিক ও নীতি গবেষণার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত আছেন মাহতাব। তাঁর গবেষণার পরিধি ও বৈচিত্র্য প্রশংসনীয়। শ্রমবাজারের গঠন, কর্মসংস্থানের প্রবণতা, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য, অভিবাসনের ধারা ও প্রভাব, প্রবাসী আয়ের ব্যবহার এবং অর্থনীতিতে এর ভূমিকা—এই সব বিষয়ে গবেষণায় তাঁর সুস্পষ্ট দক্ষতা রয়েছে। পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচন কৌশল, সামাজিক বৈষম্য হ্রাস এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরির মতো জটিল নীতিগত প্রশ্ন নিয়েও তিনি গভীর অনুসন্ধানী কাজ করেছেন।

এসব গবেষণার প্রেক্ষাপটে মাহতাব এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), এশিয়া ফাউন্ডেশন, একশনএইড, ব্রিটিশ ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), আন্তর্জাতিক উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র (আইডিআরসি), আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিসহ (ইউএনডিপি) একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পে তিনি গবেষক, বিশ্লেষক এবং নীতিমালা প্রণয়ন সহায়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

একাধিক গবেষণায় মাহতাবের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ আমার হয়েছে। এসব অভিজ্ঞতায় মাহতাবের মধ্যে যে গুণাবলির পরিচয় আমি পেয়েছি, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। তাঁর অধ্যবসায় অবিস্মরণীয়—একটি জটিল গবেষণা প্রশ্নের গভীরে প্রবেশ করে, নানা তথ্যসূত্র সংগ্রহ করে এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে সুসংগত উত্তর বের করে আনার সক্ষমতা তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী। তাঁর বিশ্লেষণী দক্ষতা গভীর ও বহুমাত্রিক—তথ্য ও উপাত্তের ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে উন্নত পরিসংখ্যানপদ্ধতির প্রয়োগ পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে তাঁর দক্ষতা লক্ষ করার মতো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহতাব উদ্দিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ