চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পাহাড়ধসে স্থানীয় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় আরও দুই শিশু চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কেইপিজেডের পুরাতন ইটের টিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলো– উপজেলার বৈরাগ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাওলানা নুরুজ্জামানের বাড়ির রহিমের ছেলে রোহান (১২) ও এমরানের ছেলে মিজবাহ (১২)। আহতরা হলো– একই এলাকার মুসতাকের ছেলে সিয়াম (১১) ও হাশেমের ছেলে সিফাত (১২)। তারা সবাই পূর্ব বৈরাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী মো.

ইমরান (১২) বলে, ‘সকাল ৮টার দিকে আমরা ৯ জন পাহাড়ে যাই। এ সময় ছায়ার জন্য আমরা পাহাড়ে নিচে বসি। কয়েকজন পাহাড় কুড়লে ওপর থেকে মাটি ভেঙে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আমি একজনকে মাটি ভেতর থেকে টেনে বের করি। বাকিদের আশেপাশের মানুষ এসে বের করে।’

এ ঘটনায় উদ্ধারকারী মো. রাজু জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাপা পড়া পাহাড় থেকে তাদের উদ্ধার করে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। পরে চিকিৎসক রোহান ও মিজবাহকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্য দু’জনকে চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। 

আনোয়ারা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সকালে আহত অবস্থায় চার শিশুকে আনা হয়। তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দু’জনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হই। 

আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন জানান, এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত না করার বিষয়ে শিশুদের পরিবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ায় লাশ হস্তান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে কেইপিজেডের উপমহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান জানান, আমরা জানতে পারি, বৃহস্পতিবার সাড়ে ৯টার দিকে শিল্প জোনের ভেতর প্রবেশ করে পাখি ধরতে গিয়ে মাটিচাপা পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রতি আমাদের অনুরোধ, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভেতর যেন না আসে। আমরা শিশুগুলোর পরিবারকে মানবিক সহায়তা দেব। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ ঘটন ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

একজন প্রতিশ্রুতিশীল অর্থনীতিবিদ মাহতাব উদ্দিন

বাংলাদেশে অনেক তরুণ ও উদীয়মান অর্থনীতিবিদ আছেন, যাঁরা আমার ছাত্র বা ছাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে মাহতাব উদ্দিন নিঃসন্দেহে অন্যতম সেরা।

মাহতাব বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং সানেমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) গবেষণা পরিচালক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন। বর্তমানে তিনি কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন।

প্রায় এক দশক ধরে একাডেমিক ও নীতি গবেষণার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত আছেন মাহতাব। তাঁর গবেষণার পরিধি ও বৈচিত্র্য প্রশংসনীয়। শ্রমবাজারের গঠন, কর্মসংস্থানের প্রবণতা, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য, অভিবাসনের ধারা ও প্রভাব, প্রবাসী আয়ের ব্যবহার এবং অর্থনীতিতে এর ভূমিকা—এই সব বিষয়ে গবেষণায় তাঁর সুস্পষ্ট দক্ষতা রয়েছে। পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচন কৌশল, সামাজিক বৈষম্য হ্রাস এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরির মতো জটিল নীতিগত প্রশ্ন নিয়েও তিনি গভীর অনুসন্ধানী কাজ করেছেন।

এসব গবেষণার প্রেক্ষাপটে মাহতাব এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), এশিয়া ফাউন্ডেশন, একশনএইড, ব্রিটিশ ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), আন্তর্জাতিক উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র (আইডিআরসি), আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিসহ (ইউএনডিপি) একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পে তিনি গবেষক, বিশ্লেষক এবং নীতিমালা প্রণয়ন সহায়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

একাধিক গবেষণায় মাহতাবের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ আমার হয়েছে। এসব অভিজ্ঞতায় মাহতাবের মধ্যে যে গুণাবলির পরিচয় আমি পেয়েছি, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। তাঁর অধ্যবসায় অবিস্মরণীয়—একটি জটিল গবেষণা প্রশ্নের গভীরে প্রবেশ করে, নানা তথ্যসূত্র সংগ্রহ করে এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে সুসংগত উত্তর বের করে আনার সক্ষমতা তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী। তাঁর বিশ্লেষণী দক্ষতা গভীর ও বহুমাত্রিক—তথ্য ও উপাত্তের ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে উন্নত পরিসংখ্যানপদ্ধতির প্রয়োগ পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে তাঁর দক্ষতা লক্ষ করার মতো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহতাব উদ্দিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ