গাজা উপত্যকা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুরে সুর মিলিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। ‘গাজার যেসব বাসিন্দা উপত্যকাটি ছেড়ে যেতে চান, তাঁদের সে সুযোগ দেওয়ার জন্য’ পরিকল্পনা করতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

১৫ মাস ধরে চলা সংঘাতে বিধ্বস্ত গাজায় ২১ লাখ ফিলিস্তিনি বসবাস করেন। ইসরায়েল কাৎজ বলেন, গাজার বাসিন্দাদের নিজেদের অবস্থান থেকে ‘সরে যাওয়ার এবং অভিবাসনের স্বাধীনতা’ রয়েছে। যেসব দেশ হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের সমালোচনা করেছে, তারা এই ফিলিস্তিনিদের জায়গা দিতে ‘বাধ্য’।

এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, সংঘাত শেষে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ভাষ্যমতে, গাজা পুনর্গঠনের জন্য সাময়িক সময়ের জন্য বাসিন্দাদের সরানো হবে। তবে ট্রাম্প স্পষ্টই বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়াটা হবে স্থায়ী।

ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা নাকচ করে দিয়েছে ফিলিস্তিনি নেতা ও আরব দেশগুলো। তাদের ভাষ্য, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হলে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাকেরি বলেছেন, এটি ফিলিস্তিনকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়ার ইসরায়েলি পরিকল্পনার অংশ।

আরও পড়ুন‘ট্রাম্প একজন উন্মাদ’: যুক্তরাষ্ট্রের গাজা দখলের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনির প্রতিক্রিয়া৪ ঘণ্টা আগে

উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও। ‘যে কোনো ধরনের জাতিগত নিধন এড়ানো জরুরি’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গুতেরেস বলেছেন, ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হবে গাজা।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে সেদিন থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে ৪৭ হাজার ৫৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৬০০ জন। ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ ভবন। হামলার মুখে একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

আরও পড়ুনগাজায় জাতিগত নিধন এড়িয়ে চলতে বললেন জাতিসংঘ মহাসচিব৬ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মতবিনিময় সভা: নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপনে সবার সহযোগিতা আহ্বান

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্‌যাপনে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা সেনানিবাসের ১০ সিগন্যাল ব্যাটেলিয়ন। দুষ্কৃতিকারীর বিষয়ে বা কোনো অঘটনের আশঙ্কা থাকলে, সে বিষয়ে প্রশাসনকে জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের ১০ সিগন্যাল ব্যাটেলিয়নে ভাষানটেক আর্মি ক্যাম্প আয়োজিত শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। এ সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ১০ সিগন্যাল ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদ বলেন, দুর্গাপূজার সময় কিছু দুষ্কৃতিকারী পরিস্থিতি নস্যাৎ করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা কাউকে সেই সুযোগ দেবো না।

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু প্রতিমা ভাঙচুর নয়, পূজায় আসা ব্যক্তিদের হয়রানি বা অসম্মান করা অপরাধ। কেউ এমন ঘটনায় জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী—আর্মি, পুলিশ, বিজিবি—সবাই মিলে কাজ করছে।’

আরও পড়ুনদুর্গাপূজায় নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থায় থাকবে পুলিশ: আইজিপি১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সভায় ভাষানটেক থানা জামায়াতে ইসলামীর নেতারা জানান, গত বছরের মতো এবারও দুর্গাপূজায় এলাকাবাসীর জন্য মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করবে সংগঠনটি। নেতারা জানান, চার-পাঁচ দিন পূজামণ্ডপ এলাকায় ভিড় থাকে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই আমরা চিকিৎসক ও ওষুধসহ মেডিকেল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করব।

এ প্রসঙ্গে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদ বলেন, যে কোনো উদ্যোগ পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে নিতে হবে। কারণ, এটি তাঁদের আয়োজন, তাঁদেরই জানাতে হবে যে, তাঁরা কোন ধরনের সহায়তা চান।

আরও পড়ুনসবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে: ডিএমপি কমিশনার৯ ঘণ্টা আগে

লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদ আরও বলেন, ‘আমরা ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত আছি। কোনো সমস্যা হলে জানাবেন। সবাই মিলে যেন সুন্দরভাবে এ আয়োজন শেষ করতে পারি।’

মতবিনিময় সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগ ও ভাষানটেক থানার কর্মকর্তা, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনপূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্থানীয় নেতা–কর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ