গোলাম আম্বিয়া খান লুহানী: এক অজানা বিপ্লবীর কাহিনি
Published: 6th, February 2025 GMT
বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে লন্ডনে শ্রমিক আন্দোলন ও সোভিয়েত বিপ্লবের সমর্থনে প্রচার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন এক বাঙালি বিপ্লবী। তারপর প্যারিস, বার্লিন, জেনেভা, মস্কো প্রভৃতি ইউরোপীয় শহর ঘুরে খুঁজে ফেরেন ভারতের মুক্তির দিশা। আরও দুই বিপ্লবীর সঙ্গে মিলে ‘ভারত ও বিশ্ববিপ্লব’ থিসিস লিখে পাঠান রুশ বিপ্লবের নায়ক লেনিনের কাছে। বিয়ে করেন এক ফরাসি ফ্যাশন ডিজাইনার ও মডেলকে, যাঁর পোর্ট্রেট এঁকেছিলেন প্রখ্যাত ইতালীয় শিল্পী আমেদেও মোদিলিয়ানি।
সবশেষে স্থায়ী হন মস্কোতে। গ্রহণ করেন সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ এবং সোভিয়েত নাগরিকত্ব। পৃথিবীর কমিউনিস্ট আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালে (কমিন্টার্ন) নানামুখী কাজের সঙ্গে জড়িত হন।
স্তালিনের শাসনকালে ভিন্নমতের বিরুদ্ধে যখন দমন-পীড়ন চলছিল, তখন রুশ দেশে আরও অনেকের মতো তাঁকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সেটি কার্যকর হয় ১৯৩৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। ভারতের স্বাধীনতার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করা এই বাঙালি বিপ্লবী আর কোনো দিন ফিরতে পারেননি মাতৃভূমিতে। সিরাজগঞ্জের গোলাম আম্বিয়া খান লুহানী নামের এই বাঙালি বিপ্লবীর অজানা কাহিনির নানা দিক উঠে এসেছে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের এই বইয়ে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাউলদের ওপর হামলা মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে পরিকল্পিত দমননীতির অংশ
দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাউল–ফকিরদের ওপর হামলা পরিকল্পিত দমননীতির অংশ বলে মনে করছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে সংগঠনটি।
মানিকগঞ্জের ঘিওরে বাউলশিল্পী আবুল সরকারকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়ে এ বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার ও তাঁর ভক্তদের ওপর হামলার ঘটনা সারা দেশে বাউল-ফকির, লোকসংস্কৃতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর পরিকল্পিত দমননীতিরই অংশ। এটি দেশব্যাপী মাজারে হামলা, বাউল-ফকিরদের ওপর হামলা-হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনেরই ধারাবাহিকতা।’
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলেছে, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, বিভিন্ন এলাকায় বাউলদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে, যন্ত্রপাতি নষ্ট করা হয়েছে এবং হুমকি দেওয়া হয়েছে। অথচ এই হামলাকারীদের ধরা হচ্ছে না, বরং ভুক্তভোগীদেরই হয়রানি করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দনীয়। অভ্যুত্থানের পরও ভিন্নমতকে দমন এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।’
বিবৃতিতে অধিকার কমিটি বলেছে, ভিন্নমত দমনের লক্ষ্যেই চার ঘণ্টা থেকে কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও কেটে অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আল্লাহর বিরুদ্ধে কটূক্তি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। উগ্র ধর্মীয় ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠীগুলো বাউলদের বিতর্কিত করে দমন-পীড়নের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, বাউলদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, যা ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাউল-ফকিরদের ওপর এ রকম বিদ্বেষ ও হামলা নতুন নয়। শেখ হাসিনার আমলেও টাঙ্গাইলের বাউল রীতা দেওয়ানের বিরুদ্ধে একইভাবে একাধিক মামলা করা হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অতিডানপন্থীদের আস্ফালন বেড়েছে। সরকারের দিক থেকে আশকারাও তারা পেয়েছে।
অবিলম্বে বাউল আবুল সরকারের নিঃশর্ত মুক্তি, তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে তাঁর সমর্থক বাউলদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।