Samakal:
2025-07-08@08:16:03 GMT

মামলায় আটকে আছে ইকোপার্ক

Published: 20th, April 2025 GMT

মামলায় আটকে আছে ইকোপার্ক

ঝালকাঠিতে প্রস্তাবিত ধানসিঁড়ি ন্যাশনাল ইকোপার্ক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। ঝামেলার শুরু ভূমি ও বন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে। পরে ৩৫ একর জমির মালিকানা দাবি করে সাবেক মেয়রপুত্র মামলা করলে অনিশ্চয়তা বেড়ে যায়। একের পর এক জটিলতায় আটকে যাওয়া প্রকল্পটি আদৌ আলোর মুখ দেখবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
ঝালকাঠি শহরের গাবখান সেতুসংলগ্ন ধানসিঁড়ি, গাবখান, সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চরে ৪৫ একর জমি নিয়ে ২০০২ সালে ধানসিঁড়ি ন্যাশনাল ইকোপার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ পার্কে লাক্সারি থ্রিস্টার রেস্টহাউস, নদী ও লেক ঘুরে দেখার জন্য উন্নতমানের প্যাডেল বোট, আন্ডারগ্রাউন্ডে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান, নদীর গাইডওয়াল, দুর্লভ বৃক্ষ, দর্শনার্থীর বসার বেঞ্চ, অভ্যন্তরীণ ছোট ছোট রাস্তা ইত্যাদি থাকবে। বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। এ লক্ষ্যে ধানসিঁড়ি ফাউন্ডেশন নামে একটি ট্রাস্টও গঠন করা হয়েছিল, যা বেঙ্গল ট্রাস্ট আইন ১৮৯২-এর আওতায় রেজিস্ট্রেশন করা হয়।
কিন্তু ২৩ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি পার্কটি। প্রথমে জমির মালিকানা নিয়ে ভূমি ও বন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। ভূমি মন্ত্রণালয় জমির মূল্য ১৮ কোটি টাকা নির্ধারণ করে মালিকানাবিহীন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বন মন্ত্রণালয়কে অনুমতি দেয়। পরবর্তী সময়ে গাবখান নদের ড্রেজিংয়ের বালু দিয়ে প্রকল্প এলাকা ভরাট করা হয়। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে প্রকল্পের জন্য চার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এ সময় শুরু হয় আরেক জটিলতা। একটি চক্র প্রকল্প এলাকার প্রায় ৩৫ একর জমির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা করেন সাবেক মেয়রপুত্র মনিরুল ইসলাম তালুকদার। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই জমিতে পার্ক নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত চলে যায়। ঝালকাঠির পাঁচ নদীর মোহনায় প্রস্তাবিত ইকোপার্ক রক্ষায় জনস্বার্থে মামলা করা হয়েছে। ঝালকাঠির প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলাটি করে ঝালকাঠির ইকোপার্ক রক্ষা, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন কমিটি।
ইকোপার্ক রক্ষা ও নদী খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির দাবি, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পঞ্চনদী ও দেশের সর্বোচ্চ গাবখান সেতুর সঙ্গে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের একটি মিলনক্ষেত্র হওয়ার পাশাপাশি এটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠত। পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে এটি হতো দক্ষিণাঞ্চলের আয়বর্ধক ও মনোরম পরিবেশে অবসর বিনোদন কাটানোর অন্যতম স্থান। পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নেও এটি ভূমিকা রাখত। কিন্তু সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার ও তাঁর পুত্র মনিরুল ইসলাম তালুকদার খাস এ জমি তাদের দাবি করে দখলের পাঁয়তারা করছিলেন।
এ কমিটির সভাপতি আল আমিন বাকলাই বলেন, মেয়র ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা  মামলা দিয়েছে। নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে হয়রানি করেছে। নিম্ন আদালতে তারা পরাজিত হয়েছে। আশা করি, পরবর্তী রায়েও জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। আমরা দমব না। ইকোপার্ক রক্ষা ও বাস্তবায়নে শেষ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, প্রকল্পের সব জমি সরকারের দখলে রয়েছে। 
আইনি জটিলতা কেটে গেলে দ্রুত ইকোপার্ক নির্মাণকাজ শুরু হবে।
বন কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি এখন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অধীনে রয়েছে। আমরা দায়িত্ব বুঝে পেলে কাজ শুরু করব।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসির পর বিদেশে পড়াশোনা, এসওপি-বৃত্তি পেতে কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি

উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পড়তে যেতে চাইলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা-পরবর্তী সময় উত্তম সময়। দেশে স্নাতক করে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় কোর্স আউটলাইনসহ অনেক সময় নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু স্নাতক স্তর থেকে বিদেশে পড়াশোনা শুরু করা গেলে পরবর্তী পর্যায়গুলোতে আর এ অসামঞ্জস্যতার আশঙ্কা থাকে না। তাই এইচএসসির পরপরই বিদেশে পড়তে যাওয়া সম্ভব হলে দূর ভবিষ্যতে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামগুলোতে প্রবেশ প্রক্রিয়া সহজ হয়ে ওঠে। দীর্ঘ মেয়াদে এই সুফলের জন্য দেশে থাকা অবস্থাতেই কিছু প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। এইচএসসির পরপরই বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিতে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক—

প্রবেশিকা পরীক্ষা

বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন একাডেমিক পর্যায়ের প্রোগ্রামগুলোতে ভর্তির জন্য অতিরিক্ত প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়। এগুলোর ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করা হয়। এর মধ্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এবং সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য পরীক্ষাগুলো হলো এসএটি (স্কলাস্টিক অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট) এবং এসিটি (আমেরিকান কলেজ টেস্টিং)। এ পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর রিডিং, রাইটিং ও গাণিতিক বিশ্লেষণের মতো প্রাথমিক দক্ষতাগুলো যাচাই করা হয়। স্যাটে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ স্কোর তুলতে হয়, সেখানে শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির জন্য এসিটিতে ২৫ থেকে ৩০ স্কোর প্রয়োজন হয়। যুক্তরাজ্যের জন্য ইসিএএস (ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজেস অ্যাডমিশন সার্ভিস) ট্যারিফ বা এ লেভেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।

এ ছাড়া বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নের জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পৃথক কিছু পরীক্ষার ফলাফলকেও গুরুত্ব দেয়। যেমন যুক্তরাজ্যে মেডিকেল সায়েন্সের জন্য বিএমএটি (বায়োমেডিকেল অ্যাডমিশন টেস্ট) অথবা ইউসিএটি (ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক্যাল অ্যাপটিটিউড টেস্ট) পরীক্ষা দিতে হয়।

ভাষা দক্ষতার পরীক্ষা—

আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। এই আবশ্যকীয় যোগ্যতাটি যাচাইয়ের জন্য বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত বেশ কিছু পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে। যেমন—

আইইএলটিএস (ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম)

টোয়েফেল (টেস্ট অব ইংলিশ অ্যাস ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ)

পিটিই (পিয়ার্সন টেস্ট অব ইংলিশ)

ডুওলিঙ্গো

এগুলোর মধ্যে আইইএলটিএস ও টোয়েফেল বহু বছর ধরে ইংরেজি ভাষাভাষীসহ অন্য ভাষার দেশগুলোতেও অগ্রাধিকার পেয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইইএলটিএস স্কোর সাধারণত ৬ থেকে ৭ দশমিক ৫-এর মধ্যে থাকলে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে আবেদন করা যায়।

অপর দিকে টোয়েফেলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৮০ থেকে ১০০-এর মধ্যে স্কোর দেখাতে হয়। কিছু ইউরোপীয় দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এইচএসসির মিডিয়াম অব ইনস্ট্রাকশন (এমওআই) বা পাঠদানের মাধ্যম ইংরেজি ভাষায় হলেই ভর্তি নিয়ে নেয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি মূলত শুধু ইংলিশ মিডিয়াম ও ইংরেজি ভার্সন কলেজগুলোর জন্য প্রযোজ্য।

ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষার দেশগুলোতে অধ্যয়নের জন্য সেখানকার স্থানীয় ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য আলাদা পরীক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন জার্মানির ক্ষেত্রে টেস্টডিএএফ (টেস্ট অব জার্মান অ্যাস আ ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ) বা ডিএসএইচ (জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ এক্সামিনেশন ফর ইউনিভার্সিটি এনট্রান্স) পাস করতে হয়। একইভাবে ফ্রান্সে গুরুত্ব দেওয়া হয় ডিএএলএফ (ডিপ্লোমা ইন অ্যাডভান্সড ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ) পরীক্ষার ফলাফলকে।

আরও পড়ুনতুরস্কে বিলকেন্ট ইউনিভার্সিটির বৃত্তি, আইইএলটিএসে ৬.৫ হলে আবেদন ০৮ মার্চ ২০২৫উচ্চশিক্ষা ও অভিবাসনের প্রয়োজনীয় নথি তৈরি—

শিক্ষার জন্য বিদেশ যেতে কিছু দরকারি নথি প্রয়োজন হয়। প্রথমটি হচ্ছে স্টেটমেন্ট অব পার্পাস (এসওপি)। এখানে আবেদনকারীর একাডেমিক লক্ষ্য, দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিয়ার পরিকল্পনা এবং নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বা তার প্রোগ্রাম নির্বাচনের কারণগুলো উল্লেখ করতে হয়।

এরপরেই আসে লেটার অব রিকমেন্ডেশন (এলওআর)। এটি হচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীর যোগ্যতার ব্যাপারে সুপারিশনামা। সাধারণত মাধ্যমিক ও উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা এই সুপারিশ করে থাকেন। সংগত কারণেই এই লেটারের কয়েকটি কপি তৈরি করে রাখতে হয়। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ থেকে ৩টি এলওআর সরবরাহের প্রয়োজন হয়।

এসওপি ও এলওআরের সঙ্গে একটি সিভি বা রেজুমি ও কাভার লেটার বা পারসোনাল স্টেটমেন্ট যুক্ত করা হলে আবেদনটি আরও শক্তিশালী হয়। সিভি বা রেজুমিতে শিক্ষার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা থেকে শুরু করে একাডেমিক ও একাডেমির বাইরের যাবতীয় অর্জনগুলো লিপিবদ্ধ থাকে। পারসোনাল স্টেটমেন্টের আরও একটি নাম মোটিভেশনাল লেটার। এখানে অধ্যয়নের জন্য নির্বাচিত কোর্সটিকে ঘিরে শিক্ষার্থীর আবেগের বিষয়টি পেশাগত কায়দায় ফুটিয়ে তুলতে হয়।

সর্বোপরি, এসব নথি তৈরির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়, যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে।

ফাইল ছবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরবর্তী সরকারের কাছে সংস্কারের ভার ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নই: আখতার হোসেন
  • শাহপরীর দ্বীপ জেটির ‘অবৈধ’ টোল আদায় বন্ধ
  • মন্ডলপাড়ায় নাসির শেখ হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
  • শরীর , শিল্প ও স্থিতি: ফ্রিদা কাহলো
  • এইচএসসির পর বিদেশে পড়াশোনা, এসওপি-বৃত্তি পেতে কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি
  • কুবিতে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ
  • কারবালার ঘটনার সারসংক্ষেপ