ঝালকাঠিতে প্রস্তাবিত ধানসিঁড়ি ন্যাশনাল ইকোপার্ক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। ঝামেলার শুরু ভূমি ও বন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে। পরে ৩৫ একর জমির মালিকানা দাবি করে সাবেক মেয়রপুত্র মামলা করলে অনিশ্চয়তা বেড়ে যায়। একের পর এক জটিলতায় আটকে যাওয়া প্রকল্পটি আদৌ আলোর মুখ দেখবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
ঝালকাঠি শহরের গাবখান সেতুসংলগ্ন ধানসিঁড়ি, গাবখান, সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চরে ৪৫ একর জমি নিয়ে ২০০২ সালে ধানসিঁড়ি ন্যাশনাল ইকোপার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ পার্কে লাক্সারি থ্রিস্টার রেস্টহাউস, নদী ও লেক ঘুরে দেখার জন্য উন্নতমানের প্যাডেল বোট, আন্ডারগ্রাউন্ডে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান, নদীর গাইডওয়াল, দুর্লভ বৃক্ষ, দর্শনার্থীর বসার বেঞ্চ, অভ্যন্তরীণ ছোট ছোট রাস্তা ইত্যাদি থাকবে। বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। এ লক্ষ্যে ধানসিঁড়ি ফাউন্ডেশন নামে একটি ট্রাস্টও গঠন করা হয়েছিল, যা বেঙ্গল ট্রাস্ট আইন ১৮৯২-এর আওতায় রেজিস্ট্রেশন করা হয়।
কিন্তু ২৩ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি পার্কটি। প্রথমে জমির মালিকানা নিয়ে ভূমি ও বন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। ভূমি মন্ত্রণালয় জমির মূল্য ১৮ কোটি টাকা নির্ধারণ করে মালিকানাবিহীন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বন মন্ত্রণালয়কে অনুমতি দেয়। পরবর্তী সময়ে গাবখান নদের ড্রেজিংয়ের বালু দিয়ে প্রকল্প এলাকা ভরাট করা হয়। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে প্রকল্পের জন্য চার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এ সময় শুরু হয় আরেক জটিলতা। একটি চক্র প্রকল্প এলাকার প্রায় ৩৫ একর জমির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা করেন সাবেক মেয়রপুত্র মনিরুল ইসলাম তালুকদার। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই জমিতে পার্ক নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত চলে যায়। ঝালকাঠির পাঁচ নদীর মোহনায় প্রস্তাবিত ইকোপার্ক রক্ষায় জনস্বার্থে মামলা করা হয়েছে। ঝালকাঠির প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলাটি করে ঝালকাঠির ইকোপার্ক রক্ষা, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন কমিটি।
ইকোপার্ক রক্ষা ও নদী খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির দাবি, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পঞ্চনদী ও দেশের সর্বোচ্চ গাবখান সেতুর সঙ্গে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের একটি মিলনক্ষেত্র হওয়ার পাশাপাশি এটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠত। পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে এটি হতো দক্ষিণাঞ্চলের আয়বর্ধক ও মনোরম পরিবেশে অবসর বিনোদন কাটানোর অন্যতম স্থান। পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নেও এটি ভূমিকা রাখত। কিন্তু সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার ও তাঁর পুত্র মনিরুল ইসলাম তালুকদার খাস এ জমি তাদের দাবি করে দখলের পাঁয়তারা করছিলেন।
এ কমিটির সভাপতি আল আমিন বাকলাই বলেন, মেয়র ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে হয়রানি করেছে। নিম্ন আদালতে তারা পরাজিত হয়েছে। আশা করি, পরবর্তী রায়েও জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। আমরা দমব না। ইকোপার্ক রক্ষা ও বাস্তবায়নে শেষ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, প্রকল্পের সব জমি সরকারের দখলে রয়েছে।
আইনি জটিলতা কেটে গেলে দ্রুত ইকোপার্ক নির্মাণকাজ শুরু হবে।
বন কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি এখন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অধীনে রয়েছে। আমরা দায়িত্ব বুঝে পেলে কাজ শুরু করব।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের তালিকা দিলো আইএসপিআর
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেনানিবাসে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৬২৬ জন আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। বৃহস্পতিবার আইএসপিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
আইএসপিআর থেকে ওই ৬২৬ জনের তালিকাও দেওয়া হয়েছে। তালিকাটি দেখতে ক্লিক করুন।