রাবিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ৫ দাবিতে স্মারকলিপি
Published: 7th, May 2025 GMT
ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধসহ পাঁচ দফা দাবিতে প্রক্টর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা সোচ্চার স্টুডেন্ট নেটওয়ার্ক।
বুধবার (৭ মে) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনটির সদস্যরা।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেছেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিনতাই, চুরি এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্টকারী নানা ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না- যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এছাড়া, প্রশাসন থেকে নির্ধারিত খাবারের মূল্য তালিকা থাকার পরো অধিকাংশ দোকানদার তা মানছেন না। আবার খাবারের মানেও কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না।
আরো পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য মাহবুবের গল্প
পেটানোর পরিকল্পনা করা গ্রুপের অ্যাডমিন ছাত্রদল সম্পাদক
সোচ্চারের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- অতিদ্রুত ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ সম্ভব হয়; শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি প্রক্টরিয়াল টিম গঠন করতে হবে, যারা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে নিয়মিত টহল ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।
বাকি তিনটি দাবি হলো- বহিরাগত বাইক ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ও প্রহরী কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের পার্ট টাইম ভিত্তিতে যুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে; প্রক্টরিয়াল বডি ও ভোক্তা অধিকার সংস্থার যৌথ উদ্যোগে একটি মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে, যারা ক্যাম্পাসের খাবারের দোকানগুলো নিয়মিত পরিদর্শন ও মূল্য যাচাই করবে; জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য ২৪ ঘণ্টা চালু থাকা একটি হেল্পলাইন নাম্বার চালু করতে হবে, যার দায়িত্বে থাকবে শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত প্রক্টরিয়াল টিম- যাতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হয়।
এ বিষয়ে সোচ্চার স্টুডেন্টস নেটওয়ার্কের রাবি শাখার সভাপতি সালমান সাব্বির বলেন, “ক্যাম্পাসে ছিনতাই, চুরিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত অনিরাপত্তার মাঝে দিন অতিবাহিত করছেন, যা একটি শিক্ষাঙ্গনের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ও অগ্রহণযোগ্য।”
তিনি আরো বলেন, “শুধু নিরাপত্তা নয়, ক্যাম্পাসের খাবারের দোকানগুলোতেও অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য এবং নিম্নমানের খাবার পরিবেশন এখন একটি নিত্যদিনের সমস্যা। এসব বিষয়ে প্রশাসনের নির্ধারিত নিয়মনীতি থাকলেও তার কার্যকর বাস্তবায়ন চোখে পড়ে না।”
সাধারণ সম্পাদক তাহফিম বলেন, “আমরা ‘সোচ্চার’ এর পক্ষ থেকে প্রক্টর স্যারকে পাঁচ দফা দাবির মাধ্যমে একটি নিরাপদ শৃঙ্খলাপূর্ণ এবং শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের আহ্বান জানিয়েছি। আমাদের দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শুধু নিরাপত্তা নয়, শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি দায়িত্বশীল প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করা সম্ভব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
পেঁয়াজের কেজি ৮০–৮৫ টাকা, সবজিও চড়া
বাজারে পেঁয়াজ ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম হঠাৎ বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে ১৫–২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি পেঁয়াজ। প্রতি ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। এ ছাড়া বেশির ভাগ সবজির দামও আগের তুলনায় চড়া।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। আর ডিমের চাহিদা বেড়েছে, সে তুলনায় সরবরাহ বাড়েনি। এ কারণে পণ্য দুটির দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। সরবরাহ ঠিক হলে দাম কমে আসবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
তাতে গতকাল বিভিন্ন বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে চার–পাঁচ দিন আগেও মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যেত ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। তবে হঠাৎ কেজিতে ১৫–২০ টাকা বেড়েছে। তাতে গতকাল বিভিন্ন বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর কৃষকের ঘরে মজুত থাকা অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। এতে বাজারে পণ্যটির সরবরাহ কমেছে। আবার বৃষ্টির কারণেও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। মূলত এই দুই কারণে পেঁয়াজের দাম এখন বাড়তি।
করলা, কাঁকরোল, বরবটিসহ বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা টমেটোর কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। অন্যদিকে বেগুনের দাম ২০–৩০ টাকা বেড়ে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে।গত দুই–তিন সপ্তাহে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। যেমন গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাসখানেক আগে মরিচের দাম ছিল ৮০ থেকে ১২০ টাকা। এ ছাড়া করলা, কাঁকরোল, বরবটিসহ বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা টমেটোর কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। অন্যদিকে বেগুনের দাম ২০–৩০ টাকা বেড়ে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে।
সপ্তাহখানেকের মধ্যে দাম বেড়েছে মুরগির ডিমের। রাজধানীর খুচরা বাজারে গতকাল ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। পাড়ামহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১২০–১২৫ টাকা। এদিকে তিন সপ্তাহ ধরেই বাজারে আগের চেয়ে বাড়তি দামে মুরগি বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীতে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় ও সোনালি মুরগি ৩০০ থকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগে এ দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা কম ছিল।
ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। পাড়ামহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১২০–১২৫ টাকা।চার মাস পর আবার মূল্যস্ফীতি বাড়লমূল্যস্ফীতি নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। টানা চার মাস কমার পর মূল্যস্ফীতি আবার বেড়েছে। গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়েছে। জুনে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জুলাই মাসের মূল্যস্ফীতি চিত্র প্রকাশ করেছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বর্ষা ও বন্যার মৌসুমের কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।
গত জুন মাসে দেশের যে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল, তা বিগত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিবিএসের হিসাব অনুসারে, জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয় ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। দুই খাতেই আগের মাসের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
রাজধানীতে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় ও সোনালি মুরগি ৩০০ থকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধির কারণ হলো, জুলাইয়ে বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়েছে। শাকসবজির দামও ছিল চড়া।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, বাজারের মৌলিক বিষয়গুলো কাজ করছে না। বিশেষ করে সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। গত মাসে চালের দাম বেড়েছে। এখন চলছে বর্ষা ও বন্যার মৌসুম। এই সময়ে নিত্যপণ্যের ঘাটতি থাকে, যা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিতে পারে। তাই সরকারের উচিত, এখনই প্রস্তুতি নিয়ে পণ্যের চাহিদা ও জোগানে ভারসাম্য আনা। তিনি মনে করেন, শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।