আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না হলে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি হেফাজতে ইসলামের
Published: 10th, May 2025 GMT
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এটি না হলে ঢাকাকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটি।
দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেছেন, ‘যদি এটি করা না হয়, ছাত্র-জনতাকে সাক্ষী রেখে বলছি, বাংলাদেশ থেকে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে।’
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আজ শনিবার বেলা তিনটার পর থেকে ঢাকার শাহবাগ মোড়ে গণজমায়েত শুরু হয়েছে। সাড়ে তিনটা থেকে শাহবাগ মোড়ের ডিজিটাল স্ক্রিনের নিচে সিঁড়ির ওপর অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা।
বিকেল পাঁচটার দিকে সেখানে বক্তব্য দেন আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে, ড.
আওয়ামী লীগকে খুনি, সন্ত্রাসী ও গণহত্যাকারী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে হেফাজতে ইসলামের এই নেতা আরও বলেন, ‘এই দলকে নিষিদ্ধ করতেই হবে। অধ্যাপক ইউনূসকে বলতে চাই, ৯টি মাস অতিক্রান্ত হলেও আওয়ামী লীগের বিচারের কোনো অগ্রগতি নেই। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। যদি না হয়, বাংলাদেশ থেকে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব চ ছ ন ন কর ন ষ দ ধ কর ইসল ম আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
অভ্যুত্থানের চক্রান্তের দায়ে বলসোনারোর ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ শুরুর নির্দেশ
উত্তরসূরির বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চক্রান্ত করার দায়ে গতকাল মঙ্গলবার ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করা শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। অনেক বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আইনি লড়াইয়ের পর এটিকে তাঁর বিতর্কিত রাজনৈতিক জীবনের এক নাটকীয় পরিণতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গতকাল ব্রাজিলের সর্বোচ্চ আদালত বলসোনারোর বিরুদ্ধে মামলার সব কার্যক্রম শেষ করে তাঁর দণ্ডকে চূড়ান্ত হিসেবে ঘোষণা করেন। সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের চার সদস্যের একটি প্যানেলের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন বাকি ছিল। তবে এ মাসের শুরুতেই প্যানেল তাঁর আপিল খারিজ করে দিয়েছেন।
বিচারপতি আলেক্সান্দ্রে দে মোরায়েস বলসোনারোকে ব্রাসিলিয়ায় ফেডারেল পুলিশ সদর দপ্তরে তাঁর সাজা ভোগ শুরু করতে বলেন। গত শনিবার থেকে সেখানে আটক রয়েছেন তিনি। পৃথক একটি মামলায় গৃহবন্দী থাকাকালে তিনি তাঁর ‘অ্যাংকল মনিটর’ (নজরদারিতে ব্যবহৃত বিশেষ যন্ত্র) নষ্ট করেন—অভিযোগে পুলিশ তাঁকে আটক করে।
এ সিদ্ধান্ত বলসোনারোর জন্য আরেক বড় ধাক্কা। ২০১৯ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। সামরিক শাসনের প্রতি অতীত–স্মৃতিনির্ভর আকর্ষণ, জনতুষ্টিবাদী ভাষণ আর বিভাজনমূলক রাজনীতির মাধ্যমে তিনি দেশকে গভীরভাবে দুভাগে ভাগ করে ফেলেছিলেন।
এ সিদ্ধান্ত বলসোনারোর জন্য আরেক বড় ধাক্কা। ২০১৯ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। সামরিক শাসনের প্রতি অতীত-স্মৃতিনির্ভর আকর্ষণ, জনতুষ্টিবাদী ভাষণ আর বিভাজনমূলক রাজনীতির মাধ্যমে তিনি দেশকে গভীরভাবে দুভাগে ভাগ করে ফেলেছিলেন।২০২২ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর বলসোনারো এখন দণ্ডিত, সরকারি পদে নিষিদ্ধ এবং একসময়কার ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাঁর থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। ট্রাম্প ইতিমধ্যে উচ্চ হারে আরোপ করা শুল্কগুলো ব্রাজিলের ওপর থেকে প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। বলসোনারোর বিচার প্রক্রিয়ার শাস্তি হিসেবে এ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে কংগ্রেসম্যান লিন্ডবার্গ ফারিয়াস লিখেছেন, ‘আজ ব্রাজিলের গণতন্ত্রের জন্য স্মরণীয় দিন। আমাদের ইতিহাসে এই প্রথমবার একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জেনারেলদের অভ্যুত্থান চেষ্টার দায়ে গ্রেপ্তার হতে দেখছি।’
বলসোনারোর আইনজীবীদের একজন সেলসো ভিলার্দি বলেন, আদালত মামলাটি দ্রুত শেষ করেছেন এবং আপিলের জন্য আরও সময় দেওয়া উচিৎ ছিল। এরপরও তাঁর আইনজীবী দল রায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।
আজ ব্রাজিলের গণতন্ত্রের জন্য স্মরণীয় দিন। আমাদের ইতিহাসে এই প্রথমবার একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জেনারেলদের অভ্যুত্থান চেষ্টার দায়ে গ্রেপ্তার হতে দেখছি।লিন্ডবার্গ ফারিয়াস, কংগ্রেসম্যান২০২২ সালের নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভার কাছে হারার পর অভ্যুত্থানের পরিকল্পনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে বলসোনারোর বিরুদ্ধে। পরে গত সেপ্টেম্বর মাসে ২৭ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে।
বলসোনারো ব্রাসিলিয়ায় গৃহবন্দী অবস্থায় ১০০ দিনের বেশি সময় কাটিয়েছেন। গৃহবন্দী থাকাকালে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুনব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো কী কারণে আটক হলেন২৩ নভেম্বর ২০২৫‘মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন’
বলসোনারোর ছেলে, কংগ্রেসম্যান এদয়ার্দো বলসোনারো গতকাল রয়টার্সকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে মামলা ‘মনস্তাত্ত্বিক নির্যাতন’ ও ‘একটি সাজানো খেলা’।
আরেক ছেলে, কার্লোস, গতকাল কারাগারে বাবাকে দেখে এসে বলেন, ‘তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
বলসোনারো অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি আগামী বছর আবার প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে তাঁর পরিবার এখন দক্ষিণপন্থী রাজনীতির ওপর নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে এবং ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য একজন বিকল্প রক্ষণশীল প্রার্থী তৈরি করতে কাজ করছে।
আরও পড়ুনবলসোনারো ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্ত১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫সর্বশেষ এক জরিপে দেখা গেছে, সম্ভাব্য সব দক্ষিণপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় লুলা এগিয়ে আছেন। গতকাল প্রকাশিত এক জরিপে তাঁর জনপ্রিয়তা আবারও বাড়তে দেখা গেছে।
আরও পড়ুনব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর ২৭ বছর কারাদণ্ড১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫