ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মি আলেক্সান্ডার শিগগির মুক্তি পাচ্ছেন: হামাস
Published: 12th, May 2025 GMT
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ইসরায়েলি-আমেরিকান এডান আলেক্সান্ডার খুব শিগগির মুক্তি পাচ্ছেন। হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল রোববার রয়টার্সকে এ কথা বলেছেন।
মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর এই পদক্ষেপকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা আবার শুরু করার ক্ষেত্রে একটি উৎসাহব্যঞ্জক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছে।
২১ বছর বয়সী ইসরায়েলি সেনা এডান আলেক্সান্ডার ঠিক কবে মুক্তি পাবেন, সে বিষয়ে হামাসের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে ঘটনাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার তিনি মুক্তি পেতে পারেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এডান আলেক্সান্ডার হামাসের কাছে থাকা শেষ জীবিত আমেরিকান জিম্মি।
হামাস বলেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোসহ গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ তৈরির অংশ হিসেবে এডান আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি সপ্তাহেই মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন। তাঁর বিশেষ দূত অ্যাডাম বোয়েলার বলেছেন, আলেক্সান্ডারকে যে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, এ খবরটি একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।
অ্যাডাম বোয়েলার আরও বলেন, জিম্মি অপর চার আমেরিকানের মরদেহ ফেরত দেওয়ার জন্য তাঁরা হামাসের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।
আলেক্সান্ডারের মুক্তির পথ খোলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই কৃতজ্ঞতা জানান।
ট্রাম্প লিখেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসরের প্রচেষ্টার প্রতি একটি সদিচ্ছাপূর্ণ পদক্ষেপ। যার লক্ষ্য, এই নৃশংস যুদ্ধের অবসান ঘটানো, সব জীবিত জিম্মি ও নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ তাঁদের প্রিয়জনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি হিসাব অনুসারে, ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এটিকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
অবরুদ্ধ এই উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষ বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। গত মার্চ মাসে ইসরায়েল অবরোধ আরোপ করার পর এই সহায়তা দ্রুত কমে আসছে।
এক যৌথ বিবৃতিতে কাতার ও মিসর বলেছে, হামাস এডান আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা গাজায় যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর ক্ষেত্রে একটি উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ।
এই আলোচনা গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ আছে। কাতার ও মিসর আরও বলেছে, গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়ন, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ চালিয়ে যাবে।
গাজাভিত্তিক হামাসের নির্বাসিত প্রধান খলিল আল-হায়া বলেছেন, এডান আলেক্সান্ডারের মুক্তি নিশ্চিত করতে কাতার, মিসর ও তুরস্ক যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম র ক ন ইসর য় ল পদক ষ প
এছাড়াও পড়ুন:
বাজেট বৈষম্যের প্রতিবাদে জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঐক্য সমাবেশ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটসহ নানা সমস্যা সমাধানে চার দফা দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সমাবেশ করেছেন।
সোমবার (১২ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে 'জবি ঐক্য’ নামে নতুন একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘ইউজিসির কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘মন্ত্রণালয়ের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘বাজেটের বৈষম্য মানি না, মানব না’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, জবিয়ানরা জেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
৬ দফা আদায়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন বাকৃবি শিক্ষার্থীদের
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হলো না, পোড়া দেহ পড়েছিল পুকুরে
ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বলেন, “আমরা যখন শিক্ষকদের পাশে চাই, অনেক শিক্ষক অবজ্ঞা করেন। এতে আমাদের লজ্জা লাগে। অথচ শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বড় লিডার; এটি মনে রাখা উচিত।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জবি শাখার সভাপতি ইভান তাহসিভ বলেন, “আবাসনের দাবিতে আমি ৮ বছর ধরে লড়ছি। আমার আগের ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন করেছে। এটি কেবল জবির নয়, জাতীয় ইস্যু।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নূরনবী বলেন, “প্রতিটি স্তরেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১১টি হলের কথা বলা হলেও বাস্তবে সেগুলো দখলে। প্রশাসন এখনো সেগুলো উদ্ধার করতে পারেনি। বলা হচ্ছে জমিগুলো ভেস্টেড প্রপার্টি (ভিপি)। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক হলই ভিপি জমিতে গড়ে উঠেছে।”
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক বিলাল হোসেন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষণার মতো কাজো বাস ধরার তাড়ায় বাদ দিতে হয়। ক্যাম্পাসে রাত ১০টা বা ১২টা পর্যন্ত কাজ চালানোর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।”
জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দিন বলেন, “অতীতে বহু প্রশাসন বাইরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। আন্দোলনকারীদের দমন করতে চেয়েছে। আবাসন আমাদের ন্যায্য অধিকার। এখন আর কোনো বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শারমিন বলেন, “আমরা ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করছি, যাতে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা বাড়ানো যায়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া।”
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো- বার্ষিক বাজেট বৃদ্ধি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এবং ড. হাবিবুর রহমান হল ও বাণী ভবনের নির্মাণকাজ ১০ মে এর মধ্যে শুরু করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হল ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের অগ্রগতি প্রতি ১৫ দিন অন্তর মুক্তমঞ্চে এসে জানাতে হবে; আগামী ১৫ মে এর মধ্যে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী