ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ইসরায়েলি-আমেরিকান এডান আলেক্সান্ডার খুব শিগগির মুক্তি পাচ্ছেন। হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল রোববার রয়টার্সকে এ কথা বলেছেন।

মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর এই পদক্ষেপকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা আবার শুরু করার ক্ষেত্রে একটি উৎসাহব্যঞ্জক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছে।

২১ বছর বয়সী ইসরায়েলি সেনা এডান আলেক্সান্ডার ঠিক কবে মুক্তি পাবেন, সে বিষয়ে হামাসের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে ঘটনাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার তিনি মুক্তি পেতে পারেন।

ধারণা করা হচ্ছে, এডান আলেক্সান্ডার হামাসের কাছে থাকা শেষ জীবিত আমেরিকান জিম্মি।

হামাস বলেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোসহ গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ তৈরির অংশ হিসেবে এডান আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি সপ্তাহেই মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন। তাঁর বিশেষ দূত অ্যাডাম বোয়েলার বলেছেন, আলেক্সান্ডারকে যে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, এ খবরটি একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।

অ্যাডাম বোয়েলার আরও বলেন, জিম্মি অপর চার আমেরিকানের মরদেহ ফেরত দেওয়ার জন্য তাঁরা হামাসের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।

আলেক্সান্ডারের মুক্তির পথ খোলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই কৃতজ্ঞতা জানান।

ট্রাম্প লিখেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসরের প্রচেষ্টার প্রতি একটি সদিচ্ছাপূর্ণ পদক্ষেপ। যার লক্ষ্য, এই নৃশংস যুদ্ধের অবসান ঘটানো, সব জীবিত জিম্মি ও নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ তাঁদের প্রিয়জনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি হিসাব অনুসারে, ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এটিকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

অবরুদ্ধ এই উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষ বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। গত মার্চ মাসে ইসরায়েল অবরোধ আরোপ করার পর এই সহায়তা দ্রুত কমে আসছে।

এক যৌথ বিবৃতিতে কাতার ও মিসর বলেছে, হামাস এডান আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা গাজায় যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর ক্ষেত্রে একটি উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ।

এই আলোচনা গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ আছে। কাতার ও মিসর আরও বলেছে, গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়ন, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ চালিয়ে যাবে।

গাজাভিত্তিক হামাসের নির্বাসিত প্রধান খলিল আল-হায়া বলেছেন, এডান আলেক্সান্ডারের মুক্তি নিশ্চিত করতে কাতার, মিসর ও তুরস্ক যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র ক ন ইসর য় ল পদক ষ প

এছাড়াও পড়ুন:

ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড ডাকছে এই ব্রাজিলিয়ানকে

১৯৯৭ ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ। সেবার ঘানাকে হারিয়ে ছোটদের এই বিশ্বকাপ প্রথম জিতেছিল ব্রাজিল। কার্লোস সিজার রামোসের সেই দলে ছিলেন রোনালদিনিও, জিওভান্নি, ফাবিও সান্তোস, ফাবিও পিন্তোরা। শুধু রোনালদিনিও-ই এই দল থেকে পরে বড় মাপের তারকা হয়েছেন। অন্যরা সেভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি—কথাটি ঠিক আবার ভুলও!

আরও পড়ুনইন্টারের বিদায়ের পর মার্তিনেজের কড়া বার্তা, লড়তে না চাইলে চলে যাও১৯ ঘণ্টা আগে

ব্রাজিলের সেই অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপজয়ী দলের একজন এখনো খেলে যাচ্ছেন। বয়স তাঁকে ৪৪ বছরে নিয়ে এসে দাঁড় করালেও গ্লাভসজোড়া তুলে রাখার যেন কোনো ইচ্ছাই তাঁর নেই। বরং তারকা না হয়েও এ বয়সে তাঁর ম্যাচ খেলার পরিসংখ্যান দেখলে কুঁড়ি-পঁচিশের ফুটবলাররাও চমকে যেতে পারেন। ২০২২ সাল থেকে ফ্লুমিনেন্সের হয়ে এ পর্যন্ত ২২২ ম্যাচ তিনি খেলেছেন! আগের তিনটি মৌসুমের একেকটিতে ৬০টির বেশি ম্যাচ খেলেছেন। এ মৌসুমে সংখ্যাটা একটু কমে এখন পর্যন্ত ৩৫।

নাম তাঁর ফাবিও দেভিসন লোপেজ মাসিয়েল। ব্রাজিলিয়ান লিগ কিংবা ক্লাব বিশ্বকাপে চোখ রাখলে শুধু ‘ফাবিও’ নামে তাঁকে চিনতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ক্লাব বিশ্বকাপে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় ফাবিও। যদিও ফ্লুমিনেন্স–সমর্থকেরা তাঁর এ পরিচয়ে আপত্তি তুলতে পারেন। ফাবিও ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটির গোলকিপার, সেটাও যেনতেন গোলকিপার নন; এই তো মাত্র পাঁচ দিন আগে গ্রুপ পর্বে পাচুকার বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ে দারুণ এক রেকর্ড গড়েন ফাবিও। ইতালিয়ান কিংবদন্তি জিয়ানলুইজি বুফনকে পেছনে ফেলে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে (৫০৭) ক্লিনশিট রাখার রেকর্ড গড়েন।

৪৪ বছর বয়সেও পোস্টের নিচের নিয়মিত দেখা যায় ফাবিওকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ