দেশের বড় অংশজুড়ে গতকাল বুধবার মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। দুপুরের পর থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হয়। তাতে সাময়িকভাবে তাপ কিছুটা কমে আসে। আজ বৃহস্পতিবার সকালেও কুড়িগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অংশে বৃষ্টি হয়েছে। তারপরও গরম কমছে না। এর পেছনে একাধিক কারণের কথা অবশ্য বলেছেন আবহাওয়াবিদেরা।
গতকাল খুলনা ও বরিশাল বিভাগের প্রায় সর্বত্র এবং এর পাশাপাশি ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়, ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল এই চুয়াডাঙ্গাতেই, ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এখন এই মে মাসের গরমকালের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, তাপপ্রবাহের মধ্যে বৃষ্টি হয়ে সাময়িক স্বস্তি থাকবে। এটি সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয় না।গতকাল এই তাপপ্রবাহের মধ্যেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়। রাজধানীতে তীব্র গরমের মধ্যেই বেলা তিনটার দিকে ঝুম বৃষ্টি হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে এর পরিমাণ ছিল ২৩ মিলিমিটারের বেশি। দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় সিলেটে ১৫৬ মিলিমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.
এভাবে বৃষ্টি হয়ে সাময়িকভাবে গরম কমলেও আবার গরম পড়ছে। এমনটা কেন?
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এখন এই মে মাসের গরমকালের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, তাপপ্রবাহের মধ্যে বৃষ্টি হয়ে সাময়িক স্বস্তি থাকবে। এটি সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয় না। তাই গতকাল বৃষ্টি হয়ে তাপ যে সাময়িকভাবে কমে গেছে, তা দীর্ঘস্থায়ী না-ও হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ। তিনি এর কারণ প্রসঙ্গে বলছিলেন, এই এপ্রিল-মে মাসের বৃষ্টির এটিই বৈশিষ্ট্য। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা অনেক বেশি থাকে। তাই বৃষ্টির পরের প্রশান্তি বেশিক্ষণ থাকে না। আবার গরম পড়ে যায়।
আজ সকালেই ঢাকার বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৮৯ শতাংশ। গতকালের বৃষ্টির সুফল বেশিক্ষণ পাওয়া যায়নি। রাতেই গরম পড়েছিল। সকালে বৃষ্টি বেড়েছে।
এ সময়টা প্রাক্–মৌসুমি বায়ুর সময়। সাধারণত মে মাসের শেষ দিন অথবা ১ জুন দেশে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটে। তার আগে এমন ভ্যাপসা গরম ও বৃষ্টি পাশাপাশি চলে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। অনেক স্থানে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কা আছে।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দেশজুড়ে যে তাপপ্রবাহ চলছে, তা একেবারে চলে যাবে না। কিছু কিছু স্থানে আজ তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে, কিন্তু তারপরও থেকে যাবে। তবে বৃষ্টিও থাকবে সেই সঙ্গে। আজ বরিশাল ও খুলনা বিভাগে তাপপ্রবাহ থেকেই যাবে।
রাজধানীতে আজকের এই গরমের মধ্যেও ভালো খবর হলো, সন্ধ্যায় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এ তথ্য জানান মো. শাহিনুর ইসলাম। ৭ মে থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। কোনো কোনো স্থানে অতি তীব্র তাপপ্রবাহও বয়ে যায়। এরপর গত সোমবার তাপপ্রবাহ কিছুটা কমে আসে, এরপর আবার তা ফিরে আসে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ধ রণত বর শ ল র গরম গতক ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
উপদেষ্টা মাহফুজের সঙ্গে যা হয়েছে, এর জন্য আপনাদের প্রতি ধিক্কার:
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বুধবার (১৪ মে) রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, মাহফুজ আলম শিক্ষা উপদেষ্টা নয়, কিংবা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তারপরও তিনি সেখানে গিয়েছিলেন অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতার একজন প্রতিনিধি হিসেবে। আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে। তিনি নিজের অফিস কিংবা প্রশাসনিক জায়গায় আপনাদেরকে না ডেকে বের হয়ে রাজপথে আপনাদের কাছে গিয়েছেন।
এরপর তার সঙ্গে যে আচরণ হয়েছে, সেটার জন্য আপনাদের প্রতি ধিক্কার।
তিনি আরো লিখেন, আপনাদেরকে পূর্বে কমিটমেন্ট দেয়ার পরও কেন কাজগুলো বাস্তবায়ন হলো না সেটার জন্য আপনাদের তো শিক্ষা সচিবকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। শিক্ষা উপদেষ্টাকে জবাবদিহি করানো উচিত। সেটা না করে যে আপনাদের কথা শুনতে গিয়েছে আপনারা তাকে আঘাত করেছেন!
আরো পড়ুন:
আ.লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না: সারজিস
একজন আরেকজনের প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতি সবার : সারজিস
গতকাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একজন প্রতিনিধি আমার সাথে যোগাযোগ করে। আমি সাথে সাথে মাহফুজ ভাইকে জানাই। তিনি আজকে রাতে নয়টায় আপনাদেরকে মিটিং এর সময় দেন এবং এটাও বলেন যে আগামীকালকে শিক্ষা উপদেষ্টার সাথে মিটিং এর ব্যবস্থা করে দিবেন। তারপর তিনি এটাও বলেছেন- এই দুই জায়গায় সমস্যাগুলোর কাঙ্ক্ষিত সমাধান না পেলে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সাথে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিবেন। তারপরও আপনারা আপনাদের মতো করে কর্মসূচি করেছেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কতিপয় সুশীল উপদেষ্টার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তারা জনগণকে ডিল করতে ভয় পায়। তখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় না হলেও ছাত্র উপদেষ্টাদেরকে পাবলিক ডিলিংস করতে সামনে ঠেলে দেওয়া হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর আগেও একবার মুভমেন্ট করেছে। দাবিগুলো যৌক্তিক। তারপরও কেন আজকে তাদের এই মুভমেন্ট করতে হলো এর জবাবদিহি এই সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে করতে হবে। চাপে পড়লে কাজ করে নাহয় অফিস করে এমন দুর্বল ব্যক্তিত্বের মানুষ অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারে আমরা প্রত্যাশা করি না।
এর আগে তিন দফা দাবিতে ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার রাতে শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনের রাস্তায় অবস্থান নেয়।
পরে সমঝোতা করতে সেখানে উপস্থিত হন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এ সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি চক্র তার ওপরে আক্রমণ করেছে বলেও অভিযোগ করেন উপদেষ্টা মাহফুজ। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একটি পক্ষ ঢুকে আন্দোলনকে স্যাবোটাজ করার চেষ্টা করছে, তারা কারা তাদের নাম বলতে চাই না।
ঢাকা/রায়হান/ফিরোজ