হান্নান মাসউদের জিম্মায় ছাড়া পেলেন তিন সমন্বয়ক
Published: 20th, May 2025 GMT
হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার বাসায় মধ্যরাতে ঢোকার চেষ্টার সময় আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।
প্রায় ১৩ ঘণ্টা থানায় আটক থাকার পর মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান ধানমন্ডি থানার ওসি ক্যশৈনু।
ওসি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ ও তাদের পরিবারের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ছাড়া পাওয়া তিনজন হলেন- মোহাম্মদপুর থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বি, ঢাকা মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব ফারহান সরকার ডিনার ও মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও ট্রাফিক সহায়ক মোহাম্মদ জিসান উল্লাহ।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার ডিসি মাসুদ আলম সমকালকে বলেন, আটক তিন সমন্বয়ককে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর যদি আর কখনও এ ধরনের কাজে জড়িত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১১টার পর সিভিল পোশাক পরিহিত একদল লোক ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কের ৩৬/১ এর হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে ‘আওয়ামী দোসরদের ঠাঁই নাই’ বলে নানা স্লোগান দেন। এরপর বাসার দারোয়ানকে ধাক্কা দিয়ে চতুর্থ তলার বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেন তারা।
পরে ৯৯৯-এ কল করে পরিস্থিতি জানিয়ে অভিযোগ করার পর ঘটনাস্থলে আসে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী নেতারা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করতে বলে। কিন্তু পুলিশের কাছে গোলাম মোস্তফা নিজেকে অসুস্থ দাবি করেন এবং রাতে দরজা খুলতে রাজি হননি। এছাড়া মামলা না থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার না করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে বিতর্কে জড়ান সেখানে থাকা উপস্থিত নেতারা। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ঘটনাস্থলে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওই তিন নেতাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
এদিকে হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলছেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের কেউ নই। আমার জানামতে আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও নেই। তবে আমি একজন পাবলিশার হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বা মতাদর্শের বই প্রকাশ করেছি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগেরও অনেক বই আমি প্রকাশ করেছি। শুধু আওয়ামী লীগ নয় বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং জামায়াতে ইসলামীর বইও আমি প্রকাশ করেছি।’
তিনি বলেন, এটা তো আমার ব্যবসা। এজন্য আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর বানিয়ে মধ্যরাতে বাসায় এসে দরজা ভাঙার চেষ্টা, দারোয়ানকে মারধর কিংবা মব সৃষ্টির চেষ্টা কেউ করতে পারে না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমন বয়ক প বল শ র ধ নমন ড
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।
আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।
লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।