শত শত উপগ্রহের সমন্বয়ে তৈরি ‘গোল্ডেন ডোম’ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নকশা নির্বাচন করলেন ট্রাম্প
Published: 21st, May 2025 GMT
১৭৫ বিলিয়ন (১৭ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের ‘গোল্ডেন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটি নকশা নির্বাচন করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীন ও রাশিয়ার হুমকি প্রতিহত করার লক্ষ্যে এই উচ্চাভিলাষী কর্মসূচির নেতৃত্ব দিতে একজন ‘স্পেস ফোর্স’ জেনারেলকেও নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ কথা জানান।
ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে এ প্রকল্প শুরু করার প্রথম আদেশ দেন। লক্ষ্য হলো, শত শত উপগ্রহ নিয়ে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা, যা ধেয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত, অনুসরণ ও সম্ভব হলে তা প্রতিহত করতে পারবে।
হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, ইউএস স্পেস ফোর্সের জেনারেল মাইকেল গেটলাইন এ উদ্যোগের প্রধান কর্মসূচি ব্যবস্থাপক হবেন। এ প্রচেষ্টাকে ট্রাম্পের সামরিক পরিকল্পনার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন ডলার খরচে নির্মিত এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তাঁর প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদের শেষ, অর্থাৎ ২০২৯-এর জানুয়ারির মধ্যে কার্যকর হওয়া উচিত। তবে শিল্পবিশেষজ্ঞরা এ সময়সীমা ও খরচের ব্যাপারে ততটা আশ্বস্ত নন।‘গোল্ডেন ডোম আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করবে’, বলেন ট্রাম্প। কানাডা এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছে বলেও জানান তিনি।
এক বিবৃতিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির দপ্তর জানিয়েছে, তিনি ও তাঁর মন্ত্রীরা যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে একটি নতুন নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করছেন। এ আলোচনায় স্বাভাবিকভাবেই নোরাড ও গোল্ডেন ডোমের মতো সংশ্লিষ্ট উদ্যোগগুলো শক্তিশালী করার বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে।
ট্রাম্প বলেন, প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন ডলার খরচে নির্মিত এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তাঁর প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদের শেষ, অর্থাৎ ২০২৯-এর জানুয়ারির মধ্যে কার্যকর হওয়া উচিত। তবে শিল্পবিশেষজ্ঞরা এ সময়সীমা ও খরচের ব্যাপারে ততটা আশ্বস্ত নন।
গোল্ডেন ডোম আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করবে। কানাডা এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট‘রোনাল্ড রিগ্যান বহু বছর আগে এটি চেয়েছিলেন, কিন্তু তখন প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ছিল না’, বলেন ট্রাম্প। সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘স্টার ওয়ারস’ নামে পরিচিত প্রস্তাবিত মহাকাশভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা প্রসঙ্গে এ কথা বলেন তিনি।
তবে ট্রাম্পের এই গোল্ডেন ডোম কর্মসূচি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ ও অর্থায়ন–সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার সম্মুখীন।
এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের টম কারাকো বলেন, ‘নতুন তথ্য হলো, ১৭৫ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ খরচ কত বছরের মধ্যে হবে। সম্ভবত এটি ১০ বছরের একটি প্রকল্প।’
চলতি মাসে কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস এক অনুমানে জানিয়েছে, গোল্ডেন ডোম প্রকল্পের ব্যয় আগামী দুই দশকে ৮৩১ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, সিলিকন ভ্যালি ও মার্কিন সফটওয়্যার দক্ষতা ব্যবহার করে অগ্রগতি আনা (প্রতিরক্ষা খাতে) এবং এর পাশাপাশি বিদ্যমান ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলো ব্যবহার করা সম্ভব।
চলতি মাসে কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস এক অনুমানে জানিয়েছে, গোল্ডেন ডোম প্রকল্পের ব্যয় আগামী দুই দশকে ৮৩১ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১৭৫ ব ল য ন প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে চাঁদাবাজির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে যুবক খুন
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় চাঁদাবাজির টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে জাহিদুল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি উপজেলার সনমানিয়া ইউনিয়নের বড়কান্দা গ্রামের মৃত হারিছউদ্দিনের ছেলে।
নিহত জাহিদুলের স্ত্রী শিফা আক্তার জানান, শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে ভাত খাওয়ার পর তার স্বামীকে দুই বন্ধু মুন্না ও মইনুল মোবাইল ফোনে কল করে ডেকে নেন। এরপর রাত ১০টার দিকে জানতে পারেন, জাহিদুলকে কুপিয়ে স্থানীয় আড়াল বাজারের উত্তরপাশে খান বাড়ি এলাকায় ফেলে রাখা হয়েছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে জাহিদুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। সেখানে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শিফা আক্তার আরো জানান, তার স্বামী জাহিদুল বাড়িতে তেমন একটা থাকে না। তার বন্ধু মইনুল, মুন্না, সৈকত ও মারুফ প্রায়ই তাকে ফোন করে বাইরে নিয়ে যেতেন। গত রমজান মাসে তারা জাহিদুলকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তবে সেবার প্রাণে বেঁচে ফিরলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মসমর্পণ
জমি নিয়ে বিরোধে নারীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি জাহানারা বেগম নামের এক নারীর বাড়ি নির্মাণের কাজ থেকে আদায় করা ৫০ হাজার টাকা চাঁদার ভাগাভাগি নিয়ে জাহিদুলের সঙ্গে মইনুল, মুন্না, সৈকত ও মারুফের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জেরে শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে তারা জাহিদুলকে ডেকে নিয়ে যান। পরে বিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে আড়াল বাজারের পাশে পাটক্ষেতে নিয়ে গিয়ে তাকে কুপিয়ে ফেলে রাখা হয়।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সনমানিয়া ইউনিয়নে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নিয়ে মারুফ-বাবু গ্রুপ, মইনুল গ্রুপ ও আমির হোসেন গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ সব সন্ত্রাসীদের ভয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এমনকি আড়াল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্য তাদের হামলার শিকার হয়েছেন। দুই মাস আগেও এই ধরনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এক যুবক গুরুতর আহত হন।
সনমানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য তৌহিদুজ্জামান সরকার তপন বলেন, ‘‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে আহত জাহিদুলকে হাসপাতালে পাঠানোর পর আড়াল পুলিশ ফাঁড়ির দুই সদস্য ফাঁড়িতে ফেরার পথে বর্ণমালা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের ধাওয়ার শিকার হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আব্দুল গাফফার নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। এ সময় অপর দুজন পালিয়ে যায়।’’
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, যারা হত্যা করেছেন এবং যিনি নিহত হয়েছেন, তারা সবাই একই চক্রের সদস্য। তারা এলাকায় মাদক কারবার, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা/রফিক/বকুল