ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘পুরো গাজা নিয়ন্ত্রণের’ যে পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন, তা বাস্তবায়নের দিকে এগোচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। উপত্যকাটির ৭৭ শতাংশ ভূখণ্ড এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এতে গাজার ক্ষুদ্র একটি অংশের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন ফিলিস্তিনিরা। অবিরাম হামলা ও অনাহার তাঁদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে।

আজ রোববার গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বেসামরিক ও আবাসিক এলাকায় সরাসরি স্থল অভিযান ও দখলদার বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে গাজার ৭৭ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েল। এসব এলাকা থেকে হয় ফিলিস্তিনিদের চলে যেতে বলা হয়েছে, না হয় গুলি চালানো হচ্ছে। এতে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তাঁরা।

দখলদারি বন্ধে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে গাজার জনসংযোগ কার্যালয়। তারা বলেছে, উপত্যকাটির বেশির ভাগ এলাকায় চলমান জাতিগত নিধন, উপনিবেশবাদ, আগ্রাসন ও দখলদারি এটাই দেখাচ্ছে যে আন্তর্জাতিক সব আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে শক্তি খাটিয়ে একটি ‘চূড়ান্ত সমাধান’ চাপিয়ে দেওয়ার রাজনৈতিক ইচ্ছা রয়েছে ইসরায়েলের।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। মাস দুয়েকের যুদ্ধবিরতির সময় ছাড়া উপত্যকাটিতে নির্বিচার চলছে মানুষ হত্যা। গতকালও গাজায় অন্তত ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ দিন দক্ষিণের খান ইউনিস, উত্তরের জাবালিয়া ও মধ্য গাজার নুসেইরাতে হামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আশরাফ আবু নার মানের এক সাংবাদিক রয়েছেন।

আরও পড়ুননেতানিয়াহুর কাছে জিম্মিদের স্বজনদের প্রশ্ন, ‘আপনি ঘুমাতে পারছেন কীভাবে’৯ ঘণ্টা আগে

গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের হিসাবে, এ নিয়ে সংঘাত শুরুর পর থেকে উপত্যকাটিতে প্রায় ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি। এ সময় আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ।

আরও পড়ুনইসরায়েলের হামলায় গাজায় নারী চিকিৎসকের ৯ শিশুসন্তান নিহত২২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষ হাতে পরিচালনা  করছেন সদর ইউএনও জাফর সাদিক

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী শত ব্যস্ততার মধ্যেও দক্ষতার সঙ্গে একাই পরিচালনা করছেন সদর উপজেলার ২৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা।

একইসাথে বক্তাবলী ইউনিয়নের প্রশাসকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।গত ১১ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ইউএনও জাফর সাদিক অনিয়ম ও দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। 

পূর্ববর্তী সভাপতিদের আমলে যে দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও কোচিং নির্ভরতা ছিল, তা নির্মূল করে শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে নিরলস কাজ করছেন তিনি।

তিনি ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নীতিমালা-২০২৩’ বাধ্যতামূলকভাবে প্রয়োগ করেন। অনিয়ম তদন্তে গঠন করেন ভিন্ন ভিন্ন কমিটি। ফান্ডের অর্থ অপব্যবহার ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

পুনর্জন্ম পেয়েছে পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়

পূর্বে সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠদের দ্বারা পরিচালিত পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে দুর্নীতি, ৮ মাসের শিক্ষক বেতন বকেয়া, জমির রেজিস্ট্রি জটিলতা ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে গত বছর ১৫ আগস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।

ইউএনও জাফর সাদিক যোগদানের পর মাত্র ছয় মাসে ১৭টি সভা করে ফান্ড স্বচ্ছতা, শিক্ষক বেতন পরিশোধ, প্রভিডেন্ট ফান্ড ঋণ শোধ, জমির রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে নেতৃত্ব দেন।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিনা সুলতানা বলেন, “স্যার দুইবার বিদ্যালয় পরিদর্শন করে বাস্তব পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এখন নিয়মিত বেতন হচ্ছে, ড্রেন নির্মাণ চলছে।”

দখলদার উচ্ছেদ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান

ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সাবেক প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারীর আর্থিক অনিয়মের তদন্তে সরাসরি মাঠে নামেন ইউএনও। বিদ্যালয়ের ২০ শতক জমি দখলমুক্ত করে ইটের দেয়াল অপসারণের নির্দেশ দেন। ঘুষের মাধ্যমে দেয়া পুকুর ইজারাও বাতিল করেন।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরোজা বলেন, “ইউএনও স্যারের উদ্যোগে জমি উদ্ধার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনও প্রক্রিয়াধীন।”
বক্তাবলীর কানাইনগর সোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি দখলমুক্ত করতেও সরাসরি পুলিশি সহায়তায় দখলদার উচ্ছেদ করেন ইউএনও।

শিক্ষা সফর ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে নতুন প্রাণ

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিক্ষা সফর, বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুনরায় চালু করে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছেন ইউএনও জাফর সাদিক। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা বেতনে ও অর্ধ-বেতনে পড়ার সুযোগও তৈরি করেছেন।

প্রশংসিত হচ্ছেন সর্বত্র

সদর উপজেলার ৫১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগের সভাপতির দায়িত্বে থেকে ইউএনও জাফর সাদিক যে স্বচ্ছতা, দৃঢ়তা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন, তা এলাকায় প্রশংসিত হচ্ছে। সচেতন মহলের মতে, যেখানে পূর্ববর্তী সভাপতিরা শিক্ষা ফান্ডের অর্থ আত্মসাতে ব্যস্ত ছিলেন, সেখানে কোনো আর্থিক সুবিধা ছাড়াই এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষভাবে পরিচালনা একজন প্রকৃত কর্মবীরের পরিচয় বহন করে।

ইউএনও নির্বাহী অফিসার জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছি।

নিজ কাজের অতিরিক্ত এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে আমি অঙ্গীকারবদ্ধ। সরকার যখন যে দায়িত্ব আমাকে অর্পণ করবেন সেটাকেই জনকল্যাণমুখী করে ভবিষ্যতেও কাজ করে যেতে চাই।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক সপ্তাহে যৌথ অভিযানে আটক ৩৪৫
  • চাঁদাবাজি সন্ত্রাস দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন: নাহিদ ইসলাম
  • ২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষ হাতে পরিচালনা  করছেন সদর ইউএনও জাফর সাদিক