সংস্কার হয়নি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, বেহাল দশা
Published: 25th, May 2025 GMT
গত বছরের বন্যায় নোয়াখালী পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে ৪১ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ১৯৬ কিলোমিটার সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। সম্প্রতি বৃষ্টিতে এসব গর্তে পানি জমায় ভোগান্তির পাশাপাশি প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত বেহাল সড়কগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, শহরের ল’ইয়ার্স কলোনি, কাজি কলোনি ও নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের পূর্ব পাশের সড়কে ছোট-বড় গর্তে ভরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী
হয়ে পড়ে সড়ক। একই অবস্থা পৌরসভার শান্তিনগর, জেলা কারাগার সড়ক, নতুন বাসস্ট্যান্ড, মাইজদী বাজার-পুলিশ লাইন্স, হরিনারায়ণপুর, লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হাউজিং এস্টেটের সেন্টাল
সড়ক, আল-ফারুক একাডেমি সড়ক ও বালুর
মাঠ সড়কের।
এসব সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন সড়ক সংস্কার কাজ না করায় সড়কের মাঝখানে এবং উভয় পাশের গর্তে বৃষ্টির পানি জমে আছে। এসব সড়কে যানবাহন চলে হেলেদুলে। কাদা পানিতে একাকার হয়ে যাওয়া সড়কগুলো দিয়ে হেঁটে চলাও মুশকিল।
পৌরসভার মাইজদী বাজার এলাকার বাসিন্দা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক জহির উদ্দিন (৩৫) বলেন, পৌরসভার রাস্তাগুলোর বেহাল দশা। ফোর লেন সড়ক ছাড়া শাখা সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। এমনকি, বেশি টাকা ভাড়া পেলেও ওসব সড়কে যেতে সাহস পান না তিনি।
পৌরসভার বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো.
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী বেলাল আহমেদ খান বলেন, গত বছরের বন্যায় পৌরসভার সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু সড়ক সংস্কারে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আর্থিক সংকটের কারণে সংস্কার কাজে বিলম্ব হচ্ছে।
সড়কের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) ও নোয়াখালী পৌরসভার প্রশাসক জালাল উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন সড়ক সংস্কারের প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক ব হ ল দশ প রসভ র সড়কগ ল ন সড়ক সড়ক র র সড়ক
এছাড়াও পড়ুন:
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আন্তরিক হোন
মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার এবং এর নিচের সড়কগুলো ঢাকা শহরের প্রবেশমুখে এক ভয়াবহ দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে ফ্লাইওভারটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল যানজট নিরসন করা; অপরিকল্পিত নকশা, দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং আইন না মানার কারণে সেটিই হয়েছে এখন গলার কঁাটা। পদ্মা সেতু থেকে পাওয়া মূল্যবান সময়টুকু ঢাকার প্রবেশপথেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। রাজধানীর উপকণ্ঠে এই যানজট কেবল সময়ের অপচয় নয়, এটি জাতীয় অর্থনীতির ওপরও ফেলেছে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব।
প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই ফ্লাইওভার শনির আখড়া থেকে চানখাঁরপুল পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করলেও এর তিনটি অংশ স্থায়ী যানজটের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে—উঠে আসার অংশ, সায়েদাবাদ অংশ এবং শেষে নামার সময় গুলিস্তান টোল প্লাজা ও চানখাঁরপুল অংশ। গুলিস্তান টোল প্লাজার ধীরগতি এবং সায়েদাবাদে সৃষ্টি হওয়া জট মূলত ফ্লাইওভারের সুফলকে ম্লান করে দিচ্ছে। কিন্তু এই জটের মূল কারণ নিছক বেশি যানবাহন নয়, বরং ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতা।
নগর–পরিকল্পনাবিদদের মতে, আধুনিক পরিবহনব্যবস্থায় অপরিকল্পিত ফ্লাইওভার নির্মাণকে উৎসাহিত করা হয় না, কারণ এটি নিচের রাস্তার ট্রাফিক পরিচালন ক্ষমতাকে অনেক ক্ষেত্রেই কমিয়ে দেয়। হানিফ ফ্লাইওভারের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে ফ্লাইওভারের ওপর চাপ কমাতে নিচের সড়কগুলোর দিকে নজর দেওয়া হয়নি। ফলে নিচের যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ সড়কটি সংস্কারের অভাবে বেহাল এবং রাস্তাজুড়ে গর্ত, পানি আর ধুলার রাজত্ব। ফলে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহনের চাপ গিয়ে পড়ছে ফ্লাইওভারের ওপর, যেখানে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে নামার মুখে।
তবে এই অব্যবস্থাপনার সবচেয়ে বিপজ্জনক দিকটি হলো সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক নৈরাজ্য। ধারণক্ষমতা ৭০০-৮০০ বাস হলেও সেখানে রাখা হয় আড়াই থেকে তিন হাজার বাস। টার্মিনালের বাইরে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে শত শত পরিবহন কাউন্টার। দুর্ঘটনা বা অবৈধ কাউন্টারের কারণে যখন একটি লেনের যানবাহন উল্টো সড়কে চলে আসে, তখন যাওয়া-আসা উভয় পথের গতি রুদ্ধ হয়ে যায়।
যাত্রাবাড়ী এলাকার যানজট কেবল ট্রাফিক আইন অমান্য বা রাস্তার দুর্বলতার ফল নয়, এর জন্য দায়ী পরিবহন খাতে জেঁকে বসা প্রভাবশালী সিন্ডিকেটও। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে সায়েদাবাদ টার্মিনালের সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
প্রতিদিন লাখো যাত্রীর দুর্ভোগ কমাতে হলে এখন শুধু ফ্লাইওভারের ওপর নয়, নজর দিতে হবে এর নিচেও। নিচের ভাঙাচোরা সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করতে হবে। এর ফলে ফ্লাইওভারের ওপরের চাপ কমে আসবে। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, এর আশপাশ এলাকা ও সড়কগুলোকে অবৈধ দখল ও কাউন্টারমুক্ত করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশকে নিচের সড়কগুলোতে নজরদারি বাড়াতে হবে।