গত বছরের বন্যায় নোয়াখালী পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে ৪১ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ১৯৬ কিলোমিটার সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। সম্প্রতি বৃষ্টিতে এসব গর্তে পানি জমায় ভোগান্তির পাশাপাশি প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত বেহাল সড়কগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, শহরের ল’ইয়ার্স কলোনি, কাজি কলোনি ও নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের পূর্ব পাশের সড়কে ছোট-বড় গর্তে ভরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী 
হয়ে পড়ে সড়ক। একই অবস্থা পৌরসভার শান্তিনগর, জেলা কারাগার সড়ক, নতুন বাসস্ট্যান্ড, মাইজদী বাজার-পুলিশ লাইন্স, হরিনারায়ণপুর, লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হাউজিং এস্টেটের সেন্টাল 
সড়ক, আল-ফারুক একাডেমি সড়ক ও বালুর 
মাঠ সড়কের।
এসব সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন সড়ক সংস্কার কাজ না করায় সড়কের মাঝখানে এবং উভয় পাশের গর্তে বৃষ্টির পানি জমে আছে। এসব সড়কে যানবাহন চলে হেলেদুলে। কাদা পানিতে একাকার হয়ে যাওয়া সড়কগুলো দিয়ে হেঁটে চলাও মুশকিল। 
পৌরসভার মাইজদী বাজার এলাকার বাসিন্দা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক জহির উদ্দিন (৩৫) বলেন, পৌরসভার রাস্তাগুলোর বেহাল দশা। ফোর লেন সড়ক ছাড়া শাখা সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। এমনকি, বেশি টাকা ভাড়া পেলেও ওসব সড়কে যেতে সাহস পান না তিনি। 
 পৌরসভার বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো.

শওকত আলী বলেন, অপরিকল্পিতভাবে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণের ফলে নোয়াখালী শহরের সড়কগুলোর বেহাল দশা। নোয়াখালী পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও সেবার মানের দিক থেকে তা তৃতীয় শ্রেণির।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী বেলাল আহমেদ খান বলেন, গত বছরের বন্যায় পৌরসভার সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু সড়ক সংস্কারে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।  আর্থিক সংকটের কারণে সংস্কার কাজে বিলম্ব হচ্ছে।
সড়কের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) ও নোয়াখালী পৌরসভার প্রশাসক জালাল উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন সড়ক সংস্কারের প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক ব হ ল দশ প রসভ র সড়কগ ল ন সড়ক সড়ক র র সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর

শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ফেনী শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। এই সড়কের পাশেই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। একটু ভারী বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়কটি। গত বছরের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের দুই কিলোমিটার অংশ কোমরপানিতে তলিয়ে ছিল পাঁচ দিন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে খানাখন্দ তৈরি হয়। পানি নেমে যাওয়ার পর পাথর ও ইটের সুরকি দিয়ে অস্থায়ী মেরামত করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। এ বছর বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আরও বেহাল হয়েছে সড়কটির দশা। ছোট ছোট গর্তে ভরা এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ফলে সড়কে যানজট লেগেই থাকে।

পৌর শহরের এই প্রধান সড়কে তা–ও যানবাহন চলে কোনোরকমে। শহরের অলিগলি আর অভ্যন্তরীণ সড়কের দশা এর চেয়ে অনেক বেহাল। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক থেকে একটু এগোলে হাসপাতাল মোড় থেকে সালাহ উদ্দিন মোড় পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে, তাতে আগাগোড়াই বড় বড় খানাখন্দ। সড়কটির সাহেববাড়ি অংশে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইট দিয়ে সাময়িক মেরামত করলেও ছোট-বড় গাড়ির চাকা সেসবকে স্থায়ী হতে দেয়নি। এটিসহ পৌরসভার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির বেশি সড়ক এখনো বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৪ সালের বন্যার এক বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ অচিরেই শুরু হবে।

একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।

সরেজমিন ঘুরে শহরের পাঠানবাড়ি সড়ক, মাস্টারপাড়া মুন্সিবাড়ি সড়ক, কদল গাজী সড়ক, বিরিঞ্চি প্রাইমারি স্কুল সড়ক, বিরিঞ্চি রতন সড়ক, সুলতানপুর আমির উদ্দিন সড়ক, গাজী ক্রস রোড, সুফি সদর উদ্দিন সড়ক, আবু বক্কর সড়ক, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি সড়ক, চাড়িপুর মৌলভী আব্দুস সালাম সড়ক, উত্তর চারিপুর বাইতুশ শরিফ সড়ক, পূর্ব বিজয় সিং ছোট হুদা দিঘি সড়ক, মধুপুর মালেক মিয়া বাজার সড়কের বেহাল দশা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে ৩০টি সড়কের সব কটিই এখন বেহাল।

একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।

ফেনী পৌরসভায় ইজিবাইক চালান সুজাউদ্দিন। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে অন্য অনেকের চেয়ে তাঁকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন। ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে সম্প্রতি সুজাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। কথায় কথায় তিনি বলেন, ছোট-বড় গর্ত থাকায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার দশা হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়াও কমেছে তাঁর।

শাহিন একাডেমি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শহরের সড়কগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পর্যাপ্ত নালা নেই। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে। বাড়ির সামনের সড়কের এই হাল হলে আর কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না।

ফেনী পৌরসভার বিসিক–মুক্তার বাড়ি সড়কের মাঝে এমন বড় বড় খানাখন্দ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর