ছাত্রদল ও বাম জোটের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ প্রতিবাদ শিবিরের
Published: 31st, May 2025 GMT
ছাত্রদল ও বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে অভিযোগ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। শনিবার সংগঠনটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বিবৃতিতে বলেছেন, নব্য ফ্যাসিবাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে ছাত্রদল ও বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো।
শিবিরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী নিপীড়ন, নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, মাদক বাণিজ্য, ছিনতাই, সিট দখল, অপপ্রচার, ট্যাগিং, র্যাগিং ও হামলাসহ অপরাধমূলক সংস্কৃতি অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা ও কক্সবাজার পলিটেকনিক, সরকারি গ্রাফিক্স আর্টস কলেজ, কুয়েটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে সন্ত্রাস ও অপরাজনীতির উদাহরণ তৈরি করেছে।
চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে ভর্তিচ্ছুদের জন্য স্থাপিত শিবিরের হেল্প ডেস্কে হামলার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করে বিবৃতি বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ইসলামিয়া কলেজ ও রংপুরেও বাঁধা দিয়েছে। শুক্রবার ফরিদপুরে ইভটিজিংয়ে বাঁধা দেওয়ায় কলেজছাত্রীকে নির্যাতন করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। নারীবাদীরা ছাত্রদলের এ ধরনের গুরুতর অপরাধে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকে।
শিবিরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ায় দুই নারী শিক্ষার্থীকে হল ছাড়া করার হুমকি দেয় ছাত্রদল। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঢাকতে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোকে ব্যবহার করে ক্যাম্পাসে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। ছাত্রদল ও বাম জোটের ট্যাগিং ও দায় চাপানোর রাজনীতিও চলছে পুরনো কায়দায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শিবির মারা জায়েজ ছিল, জায়েজ আছে, জায়েজ থাকবে’- লিখে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রদল নেতা আহনাফ তাহমিদ অর্জন। লাশের রাজনীতির বৈধতার বয়ান উৎপাদনে ছাত্র ইউনিয়ন নেতা শাহরিয়ার ইব্রাহিম আবরার ফাহাদের হত্যা জায়েজ ছিল বলে অভিমত দেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল ও ব ম ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশংসা কুড়িয়েছে রাজশাহী কলেজ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রাজশাহী কলেজসহ দেশের ১৩৭টি কেন্দ্রে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষা নিয়ে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ কর্তৃপক্ষের তৎপরতা ছিল নজরকাড়া। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল, শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। কলেজ পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ, কক্ষ বণ্টন, প্রশ্নপত্র বিতরণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবকিছুই ছিল সুপরিকল্পিত ও সময়ানুগ। শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করছেন, সময় মতো প্রকাশিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল হবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ।
আরো পড়ুন:
বহু বছর ধরে তালাবদ্ধ রাজশাহী কলেজের জাদুঘর
১৭ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে রাবি, হল বন্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
রাজশাহী কলেজ কেন্দ্রে এবার মানবিক শাখার অংশ নিয়েছেন ১৫ হাজার ৮৫৭ জন পরীক্ষার্থী। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিক্ষার্থীদের মতে, এমন সুশৃঙ্খল পরীক্ষা তারা আগে দেখেননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা পরীক্ষার্থী মাহমুদা পারভীন বলেন, “স্টেশন থেকে কলেজ পর্যন্ত ছাত্রসংগঠনগুলোর বাইক সার্ভিস সত্যিই অনেক উপকারে এসেছে। তারা পথনির্দেশনা দিচ্ছিল এবং সহযোগিতামূলক আচরণ করছিল।”
বগুড়া থেকে আসা পরীক্ষার্থী তানভীর হাসান জানালেন, “কলেজে প্রবেশের পর স্টলে গিয়ে আমরা পরীক্ষার হলে যাবার দিকনির্দেশনা পেয়েছি। পানি ও কলমের ব্যবস্থা ছিল। এতে মানসিক চাপ কমে গেছে।”
পাবনার শিক্ষার্থী সাবরিনা হক বলেন, “ইসলামী ছাত্রী সংস্থা ও অন্যান্য সংগঠনের স্টলে গিয়ে খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছি। মনে হয়েছে যেন পরিবারের কেউ পাশে আছে।”
আরেক পরীক্ষার্থী জোবায়ের আহমেদ বলেন, “পরীক্ষা খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোনো বিশৃঙ্খলা ছিল না। প্রশ্নপত্র ছিল মোটামুটি সহজ। আশা করছি, রাজশাহী কলেজে ভর্তি হতে পারব।”
পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে আসে রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। এর মধ্যে ছিল রাজশাহী কলেজ ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রী সংস্থা ও ছাত্রদল। তারা কলেজ চত্বরে একাধিক সেবামূলক স্টল স্থাপন করে। পরীক্ষার্থীদের জন্য ছিল ফ্রি পানি, কলম, আসন খোঁজার সহায়তা, বাইক সার্ভিস ও তথ্যকেন্দ্র।
এ উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে অভিভাবকদের কাছেও। নাটোর থেকে আসা অভিভাবক মো. আজিজুল হক বলেন, “ছাত্র সংগঠনগুলোর টেন্টে বসার ব্যবস্থা ছিল, তাতে আমরা অভিভাবকরা পরীক্ষার সময়টা স্বস্তিতে কাটাতে পেরেছি। এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।”
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা শাহনাজ বেগম জানান, তিনি মেয়ে নিয়ে এসেছে। ওদের (ছাত্র সংগঠনগুলো) একজন সদস্য আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছে। এমন সহযোগিতা আর কোথাও পাননি।
রাজশাহীর বাইরের অভিভাবক আব্দুল কাদের বলেন, “ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের ছেলেরা শৃঙ্খলভাবে কাজ করছিল। তারা আমাদের পানি দিয়েছে, বসার জায়গা দেখিয়েছে। এটা শিক্ষাঙ্গনের ইতিবাচক দিক; তাদের উচিৎ রাজনীতি নয়, শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা।”
রাজশাহী কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মাসুম বলেন, “আমরা পরীক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোকে কর্তব্য মনে করি। তাদের যেকোনো সহযোগিতায় আমরা প্রস্তুত ছিলাম। এটা আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ।”
রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন, “এই ধরনের সময়গুলোতে ছাত্ররাজনীতি নয়, মানবিক সেবার জায়গা থেকে কাজ করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা চেষ্টা করেছি, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যেন কোনো ভোগান্তি না হয়।”
ঢাকা/ফারজানা/মেহেদী