পুরুষের পদোন্নতি হলে যোগ্যতার, নারীর ক্ষেত্রে সেটা শরীরের বিনিময়: স্বস্তিকা
Published: 15th, January 2025 GMT
কলকাতার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি মানেই যেনো আলোচনার। অভিনয়ের বাইরে ‘ঠোঁটকাটা’ স্বভাবের তিনি সর্বদাই চর্চায় থাকেন। এজন্যই হয়ত মাঝে মধ্যেই খবরের শিরোনামের উঠে আসেন এই অভিনেত্রী। এবার নারী ও পুরুষের কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি বিষয় নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তিনি। স্বস্তিকা মতে, পুরুষের পদোন্নতি হলে পরিশ্রমের ফল, নারীদের ক্ষেত্রে সেটা হয়ে যায় শরীরের বিনিময়।
বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য দেখা যায়। বিশেষ করে নারী-পুরুষ শিল্পীদের ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে স্বস্তিকা বলেন, ২০২৫ সালেও কর্মক্ষেত্রে আমাদের নারী অধিকার নিয়ে লড়াই করতে হয়। কোনও পুরুষের যদি পদোন্নতি হয়, সে ক্ষেত্রে বলা হয় পরিশ্রমের জোরে যোগ্যতা দিয়ে পদোন্নতি হয়েছে। কিন্তু একজন নারীর ক্ষেত্রে বলা হয়, অনুচিত পন্থায় রফা করেছেন বা তার শরীরের বিনিময়, সৌন্দর্যের নিরিখে পদোন্নতি হয়েছে। সেটা তো রয়েছেই। নারীদের দক্ষতা, কাজের প্রতি অনুরাগ উপেক্ষা করা হয় সর্বতোভাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজ ও দেশের অবস্থা খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয়। আরজি করের ঘটনার পরে মনে হয়েছিল কত কিছু বদলাবে! সম্প্রতি মেট্রো স্টেশনে চুমুর ঘটনাটা নিয়েও তো কত কাণ্ড! মানসিকতার যে কোনও রদবদলই হয়নি তা স্পষ্ট। এই পুরো ঘটনায় দোষী এক জনই, যিনি চুমু খাওয়ার ভিডিও করেছিলেন আর ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাকে নিয়ে তো কোনও কথাই হল না। তার অন্যায়টা নিয়ে কেউ কথা বলল না, উল্টো ভালবেসে কেউ কিছু করলে সেটা নিয়ে হইচই করা হয়। মেয়েটি চুমু খেয়ে যত অপরাধ করল!’
স্বস্তিকার কথায়, ‘অভিনয় শেষ কথা। তবে আমার যদি কখনও ইচ্ছে হয় আমি বোটক্স করাব। সবাই করাচ্ছে তাই আমাকেও করাতে হবে এমন নয়। যদি কখনও আমার মনে হয়, এই পাতলা ঠোঁট ভাল লাগছে না অথবা, কপালে অত্যধিক ভাঁজ পড়ে যাচ্ছে, তা হলে করাব। মানুষ এত দিনে জেনে গিয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে ভাল দেখতে। ওটা নতুন কিছু নয়। আমার সাজ, সৌন্দর্য মানুষ দেখে নিয়েছেন এই ২৫ বছরে। তা সে শাড়ি হোক অথবা বিকিনি। যা দেখেননি তা হল নতুন চরিত্রের মাধ্যমে আমার অভিনয়। সেটা আমায় দেখাতে হবে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইডিপাস: না জেনে নিজের মাকে বিয়ে করেছিলেন
ইডিপাস থিবসের পৌরাণিক রাজা, যিনি সফোক্লিসের বিখ্যাত বিয়োগান্ত নাটক ‘ইডিপাস দ্য কিং’-এর কেন্দ্রবিন্দু থিবস। গ্রিক পুরাণের একজন বিয়োগান্তক চরিত্র, যিনি না জেনে তার পিতাকে হত্যা করেন এবং নিজের মাতাকে বিবাহ করেন। তার কাহিনী সফোক্লিস রচিত বিখ্যাত নাটক ‘ইডিপাস রেক্স’-এ (রাজা ইডিপাস) বর্ণিত হয়েছে।
ইডিপাসের মূল গল্প
আরো পড়ুন:
‘সাগরের জলদস্যু’ বলা হয় যে পাখিকে
অতিরিক্ত হাঁচি হলে শরীরে যেসব পরিবর্তন দেখা দিতে পারে
থিবসের রাজা লাইয়াস এবং রানী জোকাস্টার সন্তান হিসেবে ইডিপাসের জন্ম হয়। জন্মের আগেই এক দৈববাণীতে বলা হয়, এই সন্তান বড় হয়ে তার পিতাকে হত্যা করবে এবং মাতাকে বিয়ে করবে।
এই ভয়াবহ পরিণতি এড়াতে, রাজা লাইয়াস শিশু ইডিপাসকে এক মেষপালকের কাছে দেন এবং তাকে মেরে ফেলতে বলেন। মেষপালক দয়াপরবশ হয়ে শিশুটিকে না মেরে করিন্থের রাজা পলিবাসের কাছে হস্তান্তর করে, যিনি ইডিপাসকে নিজের সন্তান হিসেবে লালন-পালন করেন।
বড় হয়ে ইডিপাস যখন তার নিজের ভাগ্য সম্পর্কে জানতে পারেন, তখন তিনি মনে করেন করিন্থের রাজা ও রানীই তার আসল বাবা-মা। তাদের ক্ষতি এড়াতে তিনি করিন্থ ছেড়ে চলে যান।
যাত্রাপথে এক সংকীর্ণ রাস্তায় এক বৃদ্ধের রথের সাথে তার বিতর্ক হয় এবং রাগের বশে তিনি সেই বৃদ্ধকে হত্যা করেন, যিনি আসলে ছিলেন তার আসল পিতা রাজা লাইয়াস। এরপর তিনি থিবসের উপকণ্ঠে পৌঁছান, যা তখন স্ফিংস নামক এক দানবীর দ্বারা আক্রান্ত ছিল।
স্ফিংস পথচারীদের একটি ধাঁধা জিজ্ঞেস করত ‘এমন কোন প্রাণী আছে যার একটি কণ্ঠস্বর হওয়া সত্ত্বেও কখনও দুই পা, কখনও তিন পা, আবার কখনও চার পা থাকে, এবং যখন তার সবচেয়ে বেশি পা থাকে তখন সে সবচেয়ে দুর্বল হয়?’। ইডিপাস সঠিক উত্তর দেন ‘মানুষ’ যে শৈশবে চার পায়ে হামাগুড়ি দেয়, যৌবনে দুই পায়ে চলে এবং বার্ধক্যে লাঠির সাহায্যে তিন পায়ে হাঁটে। স্ফিংস পরাজিত হয়ে আত্মহত্যা করে।
শহরকে বাঁচানোর পুরস্কার হিসেবে ইডিপাস থিবসের রাজা হন এবং বিধবা রানী জোকাস্টাকে বিয়ে করেন। তাদের চারটি সন্তান হয়।
অনেক বছর পর যখন থিবস শহরে প্লেগ দেখা দেয়, তখন দৈববাণীতে জানা যায় যে, রাজ্যের প্রাক্তন রাজার হত্যাকারী শহরেই বাস করছে। ইডিপাস হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার প্রতিজ্ঞা করেন। সত্য উদ্ঘাটনের এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন যে তিনি নিজেই তার পিতাকে হত্যা করেছেন এবং নিজের মাতাকে বিয়ে করেছেন। এই সত্য জানার পর জোকাস্টা লজ্জায় ও হতাশায় আত্মহত্যা করেন এবং ইডিপাস নিজের চোখ অন্ধ করে শহর ছেড়ে নির্বাসনে যান।
উল্লেখ্য, অস্ট্রিয়ান মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েড ইডিপাসের এই কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘ইডিপাস কমপ্লেক্স’ তত্ত্বটি প্রস্তাব করেন।
সূত্র: ব্রিটানিকা
ঢাকা/লিপি