আভেলানেদা শহরের বাসিন্দাদের জন্য গত বৃহস্পতিবার সকালটা ছিল ব্যতিক্রম। সেদিন তাঁদের ঘুম ভাঙে তীব্র দুর্গন্ধে। কোথা থেকে এই গন্ধের উৎপত্তি—প্রথমে বুঝে উঠতে পারছিলেন না তাঁরা। শেষমেশ দেখতে পান, শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট নদীটির পানি টকটকে লাল রং ধারণ করেছে। সেখান থেকেই বের হচ্ছে গন্ধ।
আভেলানেদা শহরের অবস্থান আর্জেন্টিনায়—রাজধানী বুয়েনস এইরেস থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। নদীটির নাম ‘সারান্দি’। সেখানকার বাসিন্দা ৫২ বছর বয়সী মারিয়া ডুকমলস বলেন, ‘গন্ধে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। দিনের বেলায় নদীর দিকে তাকিয়ে দেখি, এটি পুরো লাল হয়ে গেছে। দেখে মনে হচ্ছিল, রক্তে নদী ঢেকে আছে। এটা ভয়াবহ।’
নদীর পানির লাল রঙে অনেকটা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন আভেলানেদার বাসিন্দারা। এর জন্য আপাতত দূষণকে দুষছেন তাঁরা। কারণ জানতে নদী থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করেছে বুয়েনস এইরেস প্রদেশের আবহাওয়া মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, সম্ভবত ‘জৈব রঞ্জকের’ কারণে পানি রক্তবর্ণ ধারণ করেছে।
নদীর যে অংশটি শহরের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে, সেখানে টেক্সটাইল ও চামড়া প্রক্রিয়াকরণের কারখানা রয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, সকাল থেকে পানির লাল রং দেখা গেলেও বিকেলের শেষ নাগাদ এই রং ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতে শুরু করে। আগের রূপে ফিরে আসতে থাকে নদীর পানি।
আভেলানেদা শহরে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন মারিয়া ডুকমলস। নদীদূষণের জন্য কলকারখানাগুলোকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘এটা ভয়াবহ। সারান্দি নদী কতটা দূষণের শিকার, তা দেখার জন্য আপনাকে সরকারি পরিদর্শক হতে হবে না।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মনসুর নামে এক ব্যক্তির পোষা বিড়াল হত্যার ঘটনায় একই এলাকার বাসিন্দা আকবর হোসেনের (শিবলু) বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন এজাজ হোসাইন মারওয়ান নামের এক ব্যক্তি।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল হক এ সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষীকে জেরা করেন। জেরা শেষে আদালত আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির জন্য আগামী ১২ জানুয়ারি দিন রাখেন।
এ মামলায় চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করেছেন আদালত। বাদীপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন জানান, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দণ্ডবিধি আইনে ৪২৮ ধারায় সর্বোচ্চ সাজা দুই বছরের কারাদণ্ড রয়েছে। আসামির সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন এই আইনজীবী।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিপলস ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ারের পক্ষে মামলার আবেদন করেন নাফিসা নওরীন চৌধুরী। ওই দিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানা–পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
পরে মোহাম্মদপুর থানা–পুলিশ আসামি আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর গত ১৪ জুলাই আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি দুপুরের দিকে মোহাম্মদপুরের মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের ৯ম তলার মনসুর নামে এক ব্যক্তির বিড়াল হারিয়ে যায়। পরে ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আসামি আকবর হোসেন বিড়ালটিকে এলোপাতাড়ি ফুটবলের মতো লাথি মারছেন। আসামির লাথির আঘাতে বিড়ালটির নিথর দেহ পড়ে থাকার পর পা দিয়ে পাড়া দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।