সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

ভারতে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে ভারত সরকারের কোনো দায় নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা ভাষণ দিয়েছেন নিজ দায়িত্বে এবং ভারত সরকারের অবস্থানের সঙ্গে এটিকে মিলিয়ে দেখার সুযোগ নেই।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে ভারতে বাংলাদেশি ডেপুটি হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলবের পর এক বিবৃতিতে এ কথা জানান রণধীর।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মুখপাত্র বলেন, ভারতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মো.

নূরুল ইসলামকে আজ বিকেল ৫টায় বিদেশ দপ্তরের সাউথ ব্লকে তলব করা হয়েছিল। তাকে জানানো হয়েছে, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক চায়। যা সাম্প্রতিক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে। তবে, দুঃখজনকভাবে অভ্যন্তরীণ শাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলোর জন্য আমাদের দায়ী করে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের নিয়মিত বিবৃতি ভারতকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করছে। বাংলাদেশের এসব বিবৃতি প্রকৃতপক্ষে ক্রমাগত নেতিবাচক পরিস্থিতির জন্য দায়ী।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভাষণ দিয়েছেন নিজ দায়িত্বে। তিনি মন্তব্য করেছেন তার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে, যেখানে ভারতের কোনও ভূমিকা নেই। শেখ হাসিনার বক্তব্যের সঙ্গে ভারত সরকারের অবস্থানকে এক করে ফেললে তা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো ইতিবাচক মাত্রা যোগ করতে সহায়ক হবে না।

বিবৃতিতে রণধীর জয়সওয়াল আরও বলেন, ভারত সরকার যখন পারস্পরিক স্বার্থে সহায়ক সম্পর্কের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবে, তখন আমাদের প্রত্যাশা থাকবে বাংলাদেশও পরিবেশের অবনতি যেন না হয়, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্বার্থে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

বিএইচ

উৎস: SunBD 24

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় অপরাধ কর্মকান্ডে ড্রোন ব্যবহারের অভিযোগ কিলার বাবুর বিরুদ্ধে

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পেশাদার ছিনতাইকারী বাবু ওরফে কিলার বাবুর নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ একটি ছিনতাই চক্র ড্রোন ব্যবহার করে নতুন কৌশলে অপরাধ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এলাকাবাসী জানায়,চক্রটি প্রথমে ড্রোন উড়িয়ে আশপাশে পুলিশি টহল বা সন্দেহজনক অবস্থান আছে কিনা তা নিশ্চিত হয়। পরিস্থিতি ‘নিরাপদ’ মনে হলে তারা রাস্তায় নেমে ছিনতাই সংঘটিত সটকে পরে।চক্রটির এই নতুন কৌশলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ ও আতঙ্ক।

তথ্য মতে, ফতুল্লার ছাত্রলীগ ক্যাডার ৫ টি হত্যা সহ একাধিক বৈষম্যবিরোধী মামলার আসামী বাবু ওরফে কিলার বাবু প্রতি রাতেই বিসিক নতুন সড়কে অবস্থিত একটি গার্মেন্টেসের ছাদে অবস্থান করে ড্রোন উড়িয়ে পুলিশের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সময় সুযোগ বুঝে একাধিক দলে বিভিক্ত হয়ে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের পঞ্চবটী বাস স্ট্যান্ড মোড় থেকে পুলিশ লাইন লোহার মার্কেট পর্যন্ত ছিনতাই করে নিরাপদে পালিয়ে যায়।

ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের পঞ্চবটী বাস স্ট্যান্ড, বিসিক নতুন রাস্তা,পাচঁতলা, কলোনী,লোহার মার্কেট  এবং পুলিশ লাইন এলাকায় সম্প্রতি এ ধরনের ড্রোন দেখার ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় বাসিন্দারা। কয়েকজন পথচারী জানিয়েছেন, ড্রোন দেখার কিছুক্ষণ পরই একাধিক মোটরসাইকেল আরোহী এসে মোবাইল, টাকা-পয়সা এবং মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েকটি স্থানে অজানা ড্রোন উড়তে দেখা যায়। ড্রোনটি প্রথমে এলাকার আশপাশে পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি আছে কিনা, রাস্তায় মানুষের চলাচল কেমন—সে বিষয়ে পর্যবেক্ষণ চালায়। পরিস্থিতি ‘ঝুঁকিমুক্ত’ মনে হলেই কিছুক্ষণ পরেই একই এলাকায় ছিনতাই সংঘটিত হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী আকাশে একটি ড্রোন উড়তে দেখতে পেয়ে তারা আতংকিত হয়ে পরে। এক পর্যায়ে তারা সংঘটিত হয়ে ড্রোনের উৎস খুজতে গিয়ে দেখতে পায় যে বিসিক নতুন রাস্তার এস,কে টাওয়ারের উপর থেকে শির্ষ যুবলীগ ক্যাডার বাবু ওরফে কিলার বাবু ড্রোন উড়িয়ে সেখানে অবস্থান করছে।

এমন সংবাদ পেয়ে সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী এস,কে টাওয়ারের সামনে এগিয়ে গেলে টাওয়ারটির নিচে অপেক্ষামান কিলার বাবুর সহোযোগিরা দৌড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয় জনতা তখন এস,কে টাওয়ার চতূর্দিক ঘিরে রাখে এবং কিলার বাবুর কে গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ করতে থাকে।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে এস,কে টাওয়ারের ভবনে থাকা গার্মেন্টসের ভিতরে পুলিশ প্রবেশ করতে চাইলে কতৃপক্ষ গেইট খুলতে অস্বীকার করে। পরে স্থানীয় জনতার বিক্ষোভের মুখে গার্মেন্টস কতৃপক্ষ প্রায় দেড়ঘন্টা পর গেইট খুলে দিলে পুলিশ ভিতরে প্রবেশ করে তল্লাশি চালায়। তবে কিলার বাবুকে তারা পায়নি।

কিলার বাবুকে না পেলেও তার সহোযোগি ফেলে যাওয়া বেশ কিছু দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। নাম প্রকাশ করার না শর্তে অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশের এক সদস্য জানায়, আমরা গার্মেন্টসের বিভিন্ন কক্ষে খুঁজেছি কিন্ত পাইনি।

এই গার্মেন্টেসে একজন, দুইজন লোক ফেব্রিক্স ও কোন কার্টনের ভিতরে লুকিয়ে থাকলে কারো পক্ষে সম্ভব নয় খুজে বের করা। তিনি আরো বলেন আমরা গার্মেন্টসের ভিতরের সিসি ক্যামেরা দেখতে চেয়েছিলাম কিন্ত তারা সেটা দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করে। 

সোহান নামের এক  ভুক্তভোগী বলেন, গত কয়েক দিন পূর্বে রাত তিনটার দিকে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে  পঞ্চবটী বন বিভাগের সামনের রাস্তায় মিশুক করে যাওয়ার পথে ন, আকাশে ড্রোন উড়তে দেখি।ড্রোন দেখে ভাবলাম কেউ হয়তো ভিডিও করছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তিনজন এসে আমার ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।”

স্থানীয়দের দাবি—এটি কোনো সাধারণ ছিনতাই নয়, পরিকল্পিত এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিচালিত একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা দ্রুত পুলিশের টহল বৃদ্ধি এবং ড্রোন শনাক্ত করতে বিশেষ নজরদারি চাইছেন।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান,“বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। ড্রোন ব্যবহার করে অপরাধের চেষ্টার ঘটনার বিষয়ে তিনি অবগত নন।

আইনশৃঙ্খলা বিশেষজ্ঞরা বলছেন—ড্রোন এখন কেবল বাণিজ্যিক নয়, অপরাধীদের হাতেও পৌঁছে গেছে। তাই নজরদারি, রেজিস্ট্রেশন ও মনিটরিং আরও কঠোর করা জরুরি।

এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন, ড্রোন নজরদারি চালিয়ে ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ আরও বেড়ে যেতে পারে যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ