নাহিদ-সারজিস-হাসনাতদের কে কোথায় ঈদ করছেন
Published: 30th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সংঘটিত আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এ আন্দোলনের শুরু থেকে আলোচনায় আছেন নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা। সম্প্রতি তারা রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। আত্মপ্রকাশের পর প্রথমবারের মতো পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে যাচ্ছে তাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে এনসিপি। বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ঈদকে সামনে রেখে জনসংযোগে বস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। ঈদের দিনে নিজ নিজ এলাকার জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন এনসিপির নেতাকর্মীরা।
ঢাকায় ঈদ করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। নাহিদ ইসলামের নির্বাচনি আসনকেন্দ্রিক জনসংযোগ তৎপরতা এখনো দৃশ্যমান না হলেও ঢাকা-১১ আসন থেকে তার নির্বাচন করার সম্ভাবনা আছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। বাড্ডা, ভাটারা, রামপুরা, বনশ্রী এলাকা (ঢাকা দক্ষিণ সিটির ২১, ২২, ২৩, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ড) নিয়ে গঠিত এ আসন। নাহিদের বাড়ি ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রীতে। এবার সেখানেই ঈদ করবেন নাহিদ ইসলাম।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ঈদ করবেন রংপুরে। এ লক্ষ্যে গত ২৭ মার্চ রংপুরে গেছেন তিনি। রংপুরের কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের পর শহীদদের কবর জিয়ারত করে তিনি শহীদ পরিবারের সঙ্গে সময় দেবেন। তারপর নানা ধরনের গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করবেন আখতার হোসেন।
সম্প্রতি শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে নিজের জেলায় নির্বাচনি প্রচারে গিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা নিয়ে গঠিত পঞ্চগড়-১ সংসদীয় আসন থেকে তিনি নির্বাচন করতে চান। এখন নির্বাচনি আসনের বিভিন্ন এলাকায় উঠোন বৈঠক ও জনসংযোগ করছেন সারজিস। ঈদেও সারজিসের এ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। আপাতত পঞ্চগড়েই আছেন সারজিস আলম।
দেবীদ্বার উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৪ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। গত কয়েক মাসে নিজ এলাকায় বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন হাসনাত। সর্বশেষ দেবীদ্বার উপজেলার সুজাত আলী সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দেবীদ্বার আসনকে এনসিপির একক আসন হিসেবে গড়ে তুলতে চান তিনি। হাসনাত নির্বাচনি এলাকার মানুষের সঙ্গেই ঈদ করবেন বলে জানা গেছে।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে বেশ সক্রিয়। এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানীয় সমস্যা সমাধানেও তিনি কাজ করছেন। এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে সমাবেশ করছেন মাসউদ। ঈদকে কেন্দ্র করে জনসংযোগ জোরদার করছেন তিনি। হাতিয়ায় ঈদ উদযাপন করবেন আবদুল হান্নান মাসউদ।
ঢাকা/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম ঈদ করব ন এনস প র জনস য গ এল ক য় করছ ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের ও অস্থির একটি দিন ছিল
গতকাল ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার—এই দিনটা আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের ও অস্থির একটি দিন ছিল। সকাল থেকেই আবহাওয়া ছিল অস্বাভাবিক। আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা, ঠান্ডা বাতাস বইছিল। মনে হচ্ছিল, ঝড়-বৃষ্টি আসবেই। তবু আমার এক আত্মীয় অসুস্থ হওয়ায় আমাকে ধানমন্ডি থেকে উত্তরা যেতে হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল, সকালে বের হয়ে দুপুরের মধ্যেই ফিরে আসব। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ছিল তার উল্টো।
সকাল ৯টায় রওনা দিলেও গাড়ি পাইনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে একটা সিএনজি অটোরিকশা পেলাম। কিন্তু বের হতেই দেখি সড়কে পানি জমে আছে। রিকশা, সিএনজি, প্রাইভেট কার—সব থেমে আছে। যানজট এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ১৫ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিতে এক ঘণ্টা লেগে যায়। এর মধ্যেই শুরু হয় বৃষ্টি। প্রথমে হালকা, পরে তা মুষলধারে শুরু হয়।
আমি যখন কলাবাগান পেরিয়ে র্যাব অফিসের কাছে আসি, তখন দেখি একটি অ্যাম্বুলেন্স আটকে আছে জ্যামে। সাইরেন বাজছে, কিন্তু গাড়িগুলো সরতে পারছে না। এই দৃশ্য দেখে আমি কষ্ট পেয়েছি। একটি অসুস্থ মানুষ যখন অ্যাম্বুলেন্সে, তখন তার জন্য সময়ের মূল্য কতটা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বৃষ্টির পানি এতটাই জমেছে যে অনেক জায়গায় রিকশাও চলতে পারছে না। বাধ্য হয়ে সিএনজি থেকে নেমে রিকশায় উঠি। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি রিকশা আর চলতে পারছে না, তখন হাঁটা শুরু করি। ভিজে যাচ্ছি, শরীর কাঁপছে, হাতে ফোন, পকেটে ভিজে যাচ্ছে টাকা—একটা অসহায় অবস্থা।
রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে অনেক ধরনের মানুষের মুখোমুখি হয়েছি। কেউ অফিস থেকে ফিরছে, কেউ আবার ফ্লাইট ধরতে ব্যস্ত, কেউ ছোট শিশুকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাসের জন্য। সবাই যেন একটা যুদ্ধ করছে এই দুর্যোগের মধ্যে।
উত্তরায় যখন পৌঁছাই তখন বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা। আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে দেখি, তার অবস্থাও ভালো না। পাশে বসে তার খোঁজ নিতে নিতে মনে হচ্ছিল, এত কষ্ট করে আসাটা সার্থক হয়েছে, কিন্তু শহরের এই দুরবস্থা নিয়ে কিছু একটা করা দরকার।
আরও পড়ুনতাঁদের ট্রমা এখনো কাটেনি১ ঘণ্টা আগেএই অভিজ্ঞতা আমাকে শেখাল, আমাদের নগর ব্যবস্থাপনায় এখনো অনেক ঘাটতি আছে। শুধু উন্নত ভবন বানালেই হয় না, বৃষ্টি হলে পানি জমে না এমন রাস্তা, সঠিক ড্রেনেজ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা—সবকিছু উন্নত করা জরুরি।
২৯ মে ২০২৫ আমার জীবনে একটা বড় শিক্ষা হয়ে থাকবে। এমন দিনে মানুষ কতটা অসহায় হয়, তা আমি নিজের চোখে দেখেছি এবং শরীর দিয়ে অনুভব করেছি।
মিরাজ
ঢাকা, বাংলাদেশ