চবির সমাবর্তন: ১৮ হাজার সনদে স্বাক্ষর দিচ্ছেন উপাচার্য
Published: 20th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তন আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর সনদে নিজ হাতেই স্বাক্ষর দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
রবিবার (২০ এপ্রিল) উপাচার্যের সভা কক্ষে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।
বিপুল সংখ্যার সনদ হওয়ায় সিলমোহরের মাধ্যমে স্বাক্ষর করতে পারলেও নিজ হাতেই স্বাক্ষর দিচ্ছেন উপাচার্য। এটি যেমনি সময়সাপেক্ষ, তেমনি কষ্টকরও। তবে শিক্ষার্থীদের ভালোবেসে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
আরো পড়ুন:
চবির অপহৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে সমাবেশ
রাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন বন্ধুর ফোনে পাঠাতে গিয়ে আটক
উপাচার্য বলেন, “১৮ হাজার শিক্ষার্থীর সনদে স্বাক্ষর করতে হবে। এটি সিল বানিয়ে দেওয়া যেত, সেটা করিনি। সমাবর্তীরা এখানে ৫-৬ বছর পড়েছেন। তারা আমাদের অ্যাকাডেমিক সন্তান। আমরা চাই, কষ্ট হলেও তাদের সনদে আমাদের হাতের ছোঁয়া থাকুক।”
এদিকে, উপাচার্যের এমন উদ্যোগে প্রশংসা করছেন শিক্ষার্থীরা।
আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব উল্লাহ বলেন, “এতগুলো সনদ স্বাক্ষরের জন্য তিনি চাইলে এত কষ্ট না করে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করলেন না। তিনি চাচ্ছেন প্রতিটা শিক্ষার্থীদের সনদে তার হাতের ছোঁয়া থাকুক। এটির মাধ্যমে বোঝা যায় আমাদের উপাচার্য কতটা শিক্ষার্থীবান্ধব।”
আগামী ১৪ মে চবির পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এ সমাবর্তনে অংশ নেবেন প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী। চবির সর্বশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালে। এ সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য অন ষ ঠ র সনদ
এছাড়াও পড়ুন:
সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান
জুলাই আগস্ট ২০২৪ এর ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের পর কতিপয় কুচক্রী মহলের তৎপরতায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়।
ফলশ্রুতিতে, সরকারি দপ্তর, থানাসমূহে হামলা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপর আক্রমণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মব জাস্টিস, চুরি, ডাকাতিসহ বিবিধ বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। এ ধরনের সংবেদনশীল ও নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের মনে নিরাপত্তাহীনতার জন্ম নেয়।
এমতাবস্থায়, ঢাকাসহ দেশের প্রায় সকল সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকগণ আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন, করিডোর, বন্দর ও মব নিয়ে যা বললেন সেনাপ্রধান
আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
স্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
বৃহস্পতিবার (২২ মে) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেনাবাহিনীর এই অবস্থান তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়, উদ্ভূত আকস্মিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই বাছাই করার চাইতে তাদের জীবন রক্ষা করা প্রাধান্য পেয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে, ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ০৫ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার পরিজন (স্ত্রী ও শিশু) সহ সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান করা হয়েছিল।
আইএসপিআর বলেছে, সে সময়ে শুধুমাত্র মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন রক্ষা করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। পরিস্থিতি উন্নয়ন সাপেক্ষে, আশ্রয় গ্রহণকারীদের বেশিরভাগই ১/২ দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন এবং এর মধ্যে ০৫ জনকে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ/মামলার ভিত্তিতে, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেনানিবাসে অবস্থানকারী ও আশ্রয় প্রার্থীদের ব্যাপারে গত ১৮ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে আইএসপিআর এর আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং একই দিনে ১৯৩ জন ব্যক্তিবর্গের একটি তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য ব্যতীত) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করা হয়- যা ছিল একটি মীমাংসিত বিষয়। সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থী এসকল ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষার্থে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাময়িক আশ্রয় প্রদান করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য যে, তৎকালীন বিরাজমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়িয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে, জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় গ্রহণকারী ৬২৬ জন ব্যক্তিবর্গের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্যসহ) এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির সাথে সংযুক্ত করা হলো।
আইএসপিআর বলেছে, এমতাবস্থায় সকলকে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার আহবান জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও আস্থার সাথে জাতির পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।
ঢাকা/হাসান/রাসেল