চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তন আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর সনদে নিজ হাতেই স্বাক্ষর দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। 

রবিবার (২০ এপ্রিল) উপাচার্যের সভা কক্ষে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।

বিপুল সংখ্যার সনদ হওয়ায় সিলমোহরের মাধ্যমে স্বাক্ষর করতে পারলেও নিজ হাতেই স্বাক্ষর দিচ্ছেন উপাচার্য। এটি যেমনি সময়সাপেক্ষ, তেমনি কষ্টকরও। তবে শিক্ষার্থীদের ভালোবেসে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান তিনি। 

আরো পড়ুন:

চবির অপহৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে সমাবেশ 

রাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন বন্ধুর ফোনে পাঠাতে গিয়ে আটক

উপাচার্য বলেন, “১৮ হাজার শিক্ষার্থীর সনদে স্বাক্ষর করতে হবে। এটি সিল বানিয়ে দেওয়া যেত, সেটা করিনি। সমাবর্তীরা এখানে ৫-৬ বছর পড়েছেন। তারা আমাদের অ্যাকাডেমিক সন্তান। আমরা চাই, কষ্ট হলেও তাদের সনদে আমাদের হাতের ছোঁয়া থাকুক।”

এদিকে, উপাচার্যের এমন উদ্যোগে প্রশংসা করছেন শিক্ষার্থীরা।

আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব উল্লাহ বলেন, “এতগুলো সনদ স্বাক্ষরের জন্য তিনি চাইলে এত কষ্ট না করে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করলেন না। তিনি চাচ্ছেন প্রতিটা শিক্ষার্থীদের সনদে তার হাতের ছোঁয়া থাকুক। এটির মাধ্যমে বোঝা যায় আমাদের উপাচার্য কতটা শিক্ষার্থীবান্ধব।”

আগামী ১৪ মে চবির পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এ সমাবর্তনে অংশ নেবেন প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী। চবির সর্বশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালে। এ সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য অন ষ ঠ র সনদ

এছাড়াও পড়ুন:

তফসিলের পরদিন ‘প্রার্থী’ গুলিবিদ্ধ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকায় দিনের বেলায় গুলি করা হলো ভোটে সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে (৩৩)। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন এবং বেশ কিছুদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছিলেন। হাদি ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের আহ্বায়ক।

গুলি করার পর আহত হাদিকে রিকশায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুলি তাঁর মাথায় লেগেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাতে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। তবে নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

দুর্বৃত্তদের গুলিতে ওসমান হাদির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে গতকাল জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

হাদির বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করার পর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি। পাশাপাশি সক্রিয় ছিলেন বিভিন্ন আন্দোলনে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখার পর ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে আলোচনায় আসেন হাদি। সাংস্কৃতিক এই প্ল্যাটফর্ম তাদের লক্ষ্য ঠিক করে, ‘সমস্ত আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ’। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী বক্তব্য হাদিকে আলোচনায় আনে। ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার সময় হাদি সক্রিয় ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলা ভেঙে দিতে বলেছিলেন।

ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনী তহবিলের হিসাব প্রকাশ এবং তাঁর ওপর ময়লা পানি নিক্ষেপের ঘটনায় ‘অসুবিধা নেই’ উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েও আলোচনায় আসেন হাদি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল জুমার নামাজের পর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে একটি ব্যাটারির রিকশায় ছিলেন হাদি ও তাঁর সঙ্গী এক ব্যক্তি। তাঁদের পেছনে পেছনে আসে একটি মোটরসাইকেল। বেলা ২টা ২৪ মিনিটে চলন্ত অবস্থায় সেই মোটরসাইকেল থেকেই একাধিক গুলি করা হয় হাদিকে।

ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি। দ্রুত ঘটনা ঘটিয়ে তাঁরা ওই মোটরসাইকেলে সেখান থেকে চলে যান

সম্পর্কিত নিবন্ধ