Samakal:
2025-06-29@05:15:33 GMT

হজের পূর্বপ্রস্তুতি

Published: 8th, May 2025 GMT

হজের পূর্বপ্রস্তুতি

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরের মতো এবারও হাজিদের নিয়ে ফ্লাইট যাত্রা শুরু করেছে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজ করতে যাবেন। তার মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন যাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। এবার হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক ও সহজ করতে হাজিদের জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এতে হাজিদের জন্য যোগাযোগ সুবিধা, হজ প্রিপেইড কার্ড এবং মোবাইল সিমের রোমিং সুবিধাও রাখা হয়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা। 

কোনো মুসলিম ব্যক্তির যদি পরিবারের আবশ্যকীয় খরচ বাদে মক্কা শরিফ থেকে হজ করে বাড়িতে ফিরে আসা পর্যন্ত আর্থিক সামর্থ্য থাকে, তাহলে তার ওপর হজ আদায় করা ফরজ। হজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। শারীরিক ও আর্থিক সক্ষমতার সমন্বয়ে এই ইবাদত পালন করা হয়। পবিত্র কোরআনের সুরা আল-ইমরানের ৯৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, ‘এই ঘরে হজ করা মানুষের ওপর আল্লাহর প্রাপ্য– যে লোকের সামর্থ্য রয়েছে এ পর্যন্ত পৌঁছার।’ প্রতিবছর হজে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখ লাখ মুসলমান সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে একত্র হন। ৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত মোট পাঁচ দিন চলে হজের মূল কার্যক্রম।

হজ সফরের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে হাজিদের শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতে হয়। এ ছাড়াও হজযাত্রীদের সৌদি আরবের আইনকানুন জেনে নেওয়া এবং তা মেনে চলা এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকাও অত্যন্ত জরুরি। হজের সফরে যথেষ্ট হাঁটাচলা করতে হয়। যাতায়াতের জন্য যখন-তখন যানবাহন পাওয়া যায় না। তাই কাবা শরিফ তাওয়াফ, সায়ি, মিনা, জামারায় পাথর নিক্ষেপ, মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে হজের তাওয়াফ ইত্যাদি করতে প্রচুর হাঁটাচলা করতে হয়। এসবের জন্য মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা জরুরি। হজের সময় ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ গলায় ঝুলিয়ে রাখা প্রয়োজন, যেখানে পাসপোর্ট, ভিসার কপি, টিকিট, হজের বই, প্রয়োজনীয় জিনিস থাকবে।
হজে যাওয়ার আগে অবশ্যই এর যাবতীয় নিয়ম জেনে নেওয়া কর্তব্য। হজ সফরে কোথায়, কখন ও কোন আমলগুলো ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ইত্যাদি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। হজ-সংক্রান্ত বই পড়েও জেনে নেওয়া যায়।

হজ বিশ্ব মুসলিমের বার্ষিক মিলনমেলা। আল্লাহতায়ালা দিনে পাঁচবার জামাতে কিছুসংখ্যক লোকের; এর পর সপ্তাহে একবার জুমার দিনে আরও বেশি লোকের; এর পর বছরে দু’বার আরও বেশি লোকের; এর পর বছরে একবার হজে আরাফাতের মাঠে বিশ্বের সব মানুষকে একত্র হওয়ার সুব্যবস্থা করেছেন। হজ মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক। 
আল্লাহর পবিত্র ঘর দেখা থেকে শুরু করে বিদায়ী তাওয়াফ পর্যন্ত প্রতিটি কাজই আল্লাহর একত্ববাদ, বিশ্ব মুসলমানের ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য ও সংহতির প্রশিক্ষণ। হজের মাধ্যমে একজন হাজি নিজেকে জান্নাতে যাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তোলেন। তাই মহানবী (সা.

) বলেন, ‘মকবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সে জন্য হজ যাতে রাসুল (সা.)-এর নির্দেশিত পথে যথাযথভাবে আদায় করা যায়, সেই প্রস্তুতি ও নিয়ত থাকা জরুরি। মদিনায় মহানবীর (সা.) রওজা জিয়ারতের আনুষ্ঠানিকতাও হাজিদের মাথায় রাখতে হয়। হজের নির্দিষ্ট দিনের জরুরি আনুষ্ঠানিকতা যেন আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করা যায়, সে জন্য প্রস্তুত থাকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি মক্কা ও মদিনায় কাটানো অন্য সময়ের সদ্ব্যবহারও গুরুত্বপূর্ণ। পুরো হজের সফর সাফল্যমণ্ডিত করতে তাই হাজিদের শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

ড. মো. শাহজাহান কবীর: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ত ত ব যবস থ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়র হওয়ার দৌড়ে আরও এগোলেন মামদানি 

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে নির্বাচনে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন কুইন্স কাউন্টির জনপ্রিয় ডেমোক্রেটিক নেতা জোহরান মামদানি। তিনি প্রার্থিতার দৌড়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক নির্বাচনেও জিতেছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে ৭০ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন। আগামী ৪ নভেম্বর মেয়র পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। 

নিউইয়র্কের দুটি শক্তিশালী শ্রমিক ইউনিয়ন ও নার্সদের বৃহৎ সংগঠন মামদানিকে সমর্থন দিয়েছে। সংগঠনগুলো হলো– হোটেল অ্যান্ড গেমিং ট্রেডস কাউন্সিল (এইচটিসি), সার্ভিস এমপ্লয়িজ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন (এসইআইইউ, ৩২বিজে) এবং নিউইয়র্ক স্টেট নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (এনওয়াইএসএনএ)। নিউইয়র্ক শহরে ৩২ বিজে এসইআইইউর ৮০ হাজার, এইচটিসির ৪০ হাজার ও এনওয়াইএসএনএর ৩০ হাজার সদস্য রয়েছে।   

এসব সংগঠনের নেতারা বলছেন, ভোটে তারা গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক নেতা মামদানির পক্ষে কাজ করবেন, যিনি প্রচারণায় শ্রমিকদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। নভেম্বরের নির্বাচনে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের বিপরীতে তারা মামদানিকে বেছে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।   

হোটেল অ্যান্ড গেমিং ট্রেডস কাউন্সিলের সভাপতি রিচ মারোকো বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে, সদস্যদের যে কোনো সমস্যায় মামদানি আমাদের পাশে থাকবেন। এ জন্যই আমরা তাঁকে নিউইউয়র্কের মেয়র হিসেবে দেখতে চাই।’ অ্যান্ড্রু কুওমোকে সমর্থনকারী কিছু শ্রমিক নেতাও বলেছেন, শ্রমিকদের স্বার্থের পক্ষে মামদানির যেসব প্রচেষ্টা রয়েছে, তাতে আমরা কুওমোর শিবির ত্যাগ করতে রাজি আছি। 

সংগঠনগুলোর সমর্থন পাওয়ার পর মামদানি বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষ প্রতিদিন লড়াই করে। আমি তাদের সমর্থন পেয়ে সম্মানিত। শ্রমজীবীরা সামর্থ্য অনুযায়ী চাকরি পাওয়ার যোগ্য। তাদের মর্যাদা ধরে রাখাই লড়াইয়ে আমার সমর্থন ঘোষণা করছি।’ 

ডেমোক্রেটিক নেতা ক্যাথি হোচুল, সিনেটর চাক শুমার, প্রতিনিধি হাতিক জেফ্রিসসহ রাজ্যের বেশির ভাগ নেতা মামদানিকে প্রকাশ্যে সমর্থন না দিলেও তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অবশ্য প্রাইমারিতে বিজয়ের পর মেয়র অ্যাডামসের তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছেন মামদানি। ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস শোতে তিনি মামদানিকে ‘সাপের তেল বিক্রেতা’ বলে নিন্দা করেন। সিএনএন উপস্থাপক ডন লেমন মেয়রকে জিজ্ঞাসা করেন, মামদানিকে তিনি ইসরায়েলবিরোধী বলে মনে করেন কিনা। মেয়র জবাবে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি তা মনে করি।’ গত বছরের অক্টোবরে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন মামদানি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ