চট্টগ্রামে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি সম্মাননা ও আহতদের সংবর্ধনা’ দিয়েছে সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম। আজ রোববার বিকেল ৩টার দিকে থিয়েটার ইন্সটিটিউটে জুলাই আন্দোলনে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২৮ জুলাই শহীদ পরিবারের হাতে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি সম্মাননা স্মারক’ এবং আহত ১০০ জনকে ‘জুলাই যোদ্ধা সম্মাননা স্মারক’ প্রদান করা হয়।

অধ্যাপক ডা.

মো. আব্বাস উদ্দিন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহদাত হোসেন। অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতা, শহীদদের পরিবার, আন্দোলনকারী ও নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।  

প্রধান অতিথি ডা. শাহাদাত হোসেন সন্তান ও অভিভাবক ফোরামকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে স্বৈরাচারী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে বিভক্তি এড়িয়ে সুন্দর বাংলাদেশে গড়ার অনুরোধ জানান তিনি। 

জুলাই শহীদ পরিবার সোসাইটির চেয়ারম্যান গোলাম রহমান আন্দোলনে শহীদ ছেলে নাফিজকে স্মরণ করেন। তিনি ছেলে হত্যার বিচারে অগ্রগতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।  এর জন্য সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য আন্দোলন গড়ে তোলাও আহ্বান জানান তিনি।

জুলাই যোদ্ধা সাইফুদ্দিন এমদাদ গণহত্যাকারী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি তাদের সহায়তাকারীদেরও বিচারের দাবি জানান। 

হাসান আলী ১০ মাসেও ছেলে শহীদ আলভীর বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। বিচার নিয়ে প্রহসন না করার আহবান জানান তিনি।

শহীদ ইমামের ভাই রবিউল আউয়াল ভুঁইয়া সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত জোর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

শহীদ সৈকতের বোন শারমিন আফরোজ সেবন্তি জুলাই’২৪ এর আন্দোলনে এলোপাতাড়ি গুলি, হাত-পা হারানো অসংখ্য যোদ্ধা, বাবা-মায়ের অসহায়ত্ব তুলে ধরেন।গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে সরকারের গড়িমসি ও চালাকি করছে বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি। 

জুলাই যোদ্ধা ডা. জুনায়েদ রায়হান বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার এখনও না হওয়ায় হতাশা হয়েছি। 

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রতি মাসের ১৮ তারিখ আমাদের জন্য বেদনাদায়ক। এ তারিখে হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বেড়ে যায়।’

শহীদ আহনাফের মা জারতাজ পারভীন বলেন, ‘আমার সন্তানের হত্যাকারীরা এখনও বাইরে। তারা কার মদদে এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে? তারা কীভাবে এখনও দেশের বাইরে যাচ্ছে?’  

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শহীদ ওয়াসিমের বাবা শফি আলম, শহীদ শ্রাবণের বাবা নেসার আহমেদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম  মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহ নেওয়াজ, চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক এস এম নসরুল কদির, সন্তান ও অভিভাবক ফোরামের সমন্বয়ক  ডা. শাকিল আরিফ চৌধুরী, ডা. দলিলুর রহমান, আহত যোদ্ধা আরিফুল ইসলাম ফরহাদ, জিসান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডা. ইশরাত জাহান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য অন ষ ঠ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস

সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছে দেশটির এল–ফাশের শহরের পতনের পর সেখানকার বাসিন্দারা ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা শহরটিতে আটকা পড়েছেন। গতকাল শনিবার ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের লড়াই চলছে। গত ২৬ অক্টোবর এল-ফাশের দখল করে নেয় আধা সামরিক বাহিনীটি। শহরটির পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুনসুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে২২ ঘণ্টা আগে

এল–ফাশের শহর থেকে যাঁরা পালিয়ে কাছের তাউইলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা চালানোর কথা বলেছেন। তাঁদের ভাষ্য, এল–ফাশেরে মা–বাবার সামনে সন্তানদের হত্যা করা হচ্ছে। মানুষজন শহরটি থেকে পালানোর সময় তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, ২৬ অক্টোবর থেকে ‍৬৫ হাজারের বেশি মানুষ শহরটি থেকে পালিয়েছেন।

শনিবার ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, এল–ফাশেরের বিপুল মানুষ ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছে। তাদের শহরটি ত্যাগ করতে দিচ্ছে না আরএসএফ ও তাদের সহযোগীরা। সংস্থাটির জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল ওলিভিয়ার লাচেরিটে বলেন, এল–ফাশের থেকে যাঁরা নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁরা কোথায়? সম্ভাব্য উত্তরটা হলো—তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।

গত শুক্রবার জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরএসএফের হামলায় এল–ফাশেরে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। তবে সুদানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুই হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, এল–ফাশেরে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

সুদান ‘মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতির’ মধ্যে রয়েছে বলে শনিবার উল্লেখ করেছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়েডফুল। বাহরাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বেসামরিক লোকজনকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আরএসএফ। এরপরও এমন নৃশংসতার জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। একই সংবাদ সম্মেলনে সুদানের পরিস্থিতি ‘ভয়ংকর’ বলে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার।

আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেঞ্চুরির অপেক্ষায় মুশফিকুর, তিন দিনেই জয় রাজশাহীর
  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটি পুনর্বহাল
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • সিলেটে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় পর্যটক নিহত, আহত ৫
  • ক্রিকেট ম্যাচের দায়িত্ব পালন করতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা, আহত ২৭ নারী পুলিশ সদস্য