জাল নোট তৈরি এবং বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত থাকায় ঢাকা ও পঞ্চগড়ে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গত মঙ্গলবার ও বুধবার এসব অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে ৮২ হাজার ৩০০ টাকা মূল্যমানের জাল নোট, জাল নোট বিক্রির ২ লাখ ১৪ হাজার টাকা এবং জালনোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন সাইফুল ইসলাম (২৮), রেজাউল করিম ওরফে রেজা (৪৩), মো.

সোহেল (৪০),  সাইদুর রহমান (২৮), সোহেল মাহমুদ (২৪) ও শাহ আলম।

বৃহস্পতিবার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবির সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন দল রাজধানীর মহাখালী পুলিশ বক্সের সামনে অভিযান চালায়। সেখান থেকে জাল নোট বেচাকেনায় যুক্ত সাইফুল ও রেজাউলকে আটক করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে চার হাজার টাকা মূল্যমানের জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

এরপর তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাতে পঞ্চগড় সদর থানার ব্যারিস্টার বাজার এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাইদুর, সোহেল, সোহেল মাহমুদ ও শাহ আলমকে আটক করা হয়। সবুজ আর সোহেল মাহমুদের স্বীকারোক্তি পেয়ে তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৭৮ হাজার ৩০০ টাকা মূল্যমানের জাল নোট, জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ও জাল নোট বিক্রির নগদ ২ লাখ ১৪ হাজার টাকা উদ্ধার করে ডিবি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আটক হওয়া ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে জাল নোট তৈরি করে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছিলেন। তাঁরা কোরবানি ঈদ সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ জাল নোট তৈরি ও সরবরাহের পরিকল্পনা করছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে নিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে রোগীর ভিড়, মুখে নেই মাস্ক

গত বুধবার সকাল ৮টা। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর জটলা। সবাই চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করছেন। কারও মুখে মাস্ক নেই। আবার যে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে এবং চিকিৎসকরা যে সবাইকে মাস্ক পরে বাইরে বেরুতে বলেছেন, সে ব্যাপারে তাদের কোনো ধারণা নেই।
লক্ষ্মীপুর জেলায় ইতোমধ্যে ছয়জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও ওই রোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেই কর্তৃপক্ষের। নমুনা পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেই কিটের। আক্রান্তরা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা হলেও সবার নমুনা  ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে ছয়জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আক্রান্তরা বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন ছয়জন আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালে পৃথক কর্নার, নমুনা পরীক্ষা কিংবা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিরও কোনো উদ্যোগ নেই। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং সীমিত তদারকির কারণে ঝুঁকিতে রয়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ। আক্রান্ত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁর শরীরে জ্বর ছিল না, তবে প্রচণ্ড কাশি ছিল। আরও ছিল বুক ব্যথা, মাথা ব্যথা ও গলা ব্যথা। এসব উপসর্গের কারণে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য কিট বা প্রয়োজনীয় উপকরণ গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পৌঁছায়নি। ফলে জেলাভিত্তিক নমুনা পরীক্ষা বা চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. অরূপ পাল বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার জন্য কিটসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। রোগীরা মূলত ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত হচ্ছেন।’
এদিকে, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে কিছু সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হলেও তা  খুবই সীমিত। দুইদিন মাইকিং করা হয়েছে, এরপর আর কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা চোখে পড়েনি। জনসচেতনতা তৈরিতে ঘাটতি রয়েছে, মানুষজনের মধ্যে এখনও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না।
জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে যেহেতু নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা ঢাকা থেকে হচ্ছে, তাই স্থানীয় পর্যায়ে শনাক্তে কিছুটা সময় লাগছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই শরীর ব্যথা নিয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তার নমুনা পাঠানো হয় ঢাকায় এবং সেখান থেকেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বাকি আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও একইভাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাসপাতালে রোগীর ভিড়, মুখে নেই মাস্ক
  • ফুলপুরে বাস-মাহিন্দ্রার সংঘর্ষে নিহত ৬
  • ময়মনসিংহে পৃথক দুই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯