রাজবাড়ীতে চুরি ও ভিডিও করার অপবাদ দিয়ে এক যুবককে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলা হলেও বাদী জানেন না বলে দাবি করেছেন। 
গত শুক্রবার রাতে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে সামসুদ্দিন বিশ্বাস ওরফে সাম বিশ্বাসের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহীন শেখ (২৭) একই গ্রামের জিন্নাহ শেখের ছেলে। প্রতিবেশী সামসুদ্দিন ও তাঁর স্বজনরা শাহীনকে হত্যা করেছেন বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের। সামসুদ্দিন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক রাজবাড়ী শাখায় অফিস সহকারী পদে চাকরি করেন।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা হয়। বাদী নিহত শাহীনের মামা কালাম মোল্লা মামলার ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। এতে মামলার এজাহার নিয়ে ধোঁয়শার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ রাতেই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা একই গ্রামের জহিরুদ্দিন বিশ্বাস, মৈজদ্দি বিশ্বাস, ফরহাদ বিশ্বাস ও মুন্নু মোল্লা।
শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্ত সামসুদ্দিনের বাড়িতে গেলে তাঁর স্ত্রী রাহেলা পারভীন দাবি করেন, তাদের বাড়ির মোটর চুরি করেছেন শাহীন। এ ছাড়া পরিবারের এক সদস্যের ভিডিও করেছেন। এ জন্য তাঁর ছেলে ও অন্যরা শাহীনকে মারধর করে। বাড়ির ভেতরে তখন অনেক লোক ছিল। শাহীন গণপিটুনিতে মারা গেছেন বলে দাবি তাঁর।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শাহীনের দূরসম্পর্কের নানি আমেনা খাতুন বসন্তপুর ইউনিয়নের একজন গ্রাম পুলিশ।  তিনি জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় সালিশ বসার আগেই সামসুদ্দিনের স্বজনরা বাড়ি থেকে শাহীনকে ধরে নিয়ে যান। শাহীনকে সামসুদ্দিনের বাড়িতে আটকে রেখে বেধড়ক পেটানো হয়। এ সময় তিনি (আমেনা) এর প্রতিবাদ করে বলেন, দেশে আইন-কানুন আছে। সামসুদ্দিনের ভাই মুক্তার বিশ্বাস জবাব দেন, আইন-কানুন পরে দেখা যাবে। এর কিছুক্ষণ পর শাহীনকে ঘর থেকে অচেতন অবস্থায় বের করা হয়। তারা একজন গ্রাম্য চিকিৎসককে ডেকে শাহীনকে দেখায়। পরে তারাই শাহীনকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
নিহত শাহীনের ভগ্নিপতি আবু তাহের জানান, শাহীনের অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই। বাটন ফোন আছে। তা দিয়ে ভিডিও করা যায় না। অথচ তারা ভিডিওর অপবাদ দিয়েছে। শাহীনের দুটি মেয়ে আছে। ওদের এখন কী হবে?
নিহত শাহীনের বাবা জিন্নাহ শেখ জানান, তিন মাস আগে সামসুদ্দিনের একটি মোটর হারিয়ে যায়। তিনি এতদিন পর ভিডিওর কথা বলে তাঁর ছেলেকে ধরেছেন। এ হত্যার সঙ্গে সামসুদ্দিন, তাঁর ভাই মুক্তার, রাসেল, কচি, রাফিজুল ও সৌরভ জড়িত। যে চারজনকে পুলিশ ধরেছে, তারা সালিশ করতে গিয়েছিলেন। রাতে পুলিশ তাঁর শ্যালক কালামকে নিয়ে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়। পরে শোনেন মামলা হয়েছে। তিনি কালামকে মামলা করতে বলেননি।
মামলার বাদী কালাম মোল্লা জানান, মামলার বিষয়টি তিনি জানেন না। পুলিশ তাঁকে স্বাক্ষর করতে বলায় তিনি করেছেন।
সামসুদ্দিনের কর্মস্থলে গিয়ে জানা যায়, অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি ছুটি নিয়েছেন। তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি। 
মামলার বিষয়টি বাদীর না জানা প্রসঙ্গে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মাহমুদুর রহমান বলেন, এটি হয়তো ভয়ে বলছেন। শাহীনের বাবার অভিযোগের বিষয়ে বলেন, মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও সাত-আটজন রয়েছে। চারজনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত ন হত শ হ ন শ ক রব র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাহিত্যের এক দিকপাল ও দিশারি

সাহিত্যিক মাহবুব–উল আলম (১৮৯৮-১৯৮১) বহুদিন ধরেই ইতিহাসে ঠাঁই নিয়েছেন, যদিও তাঁর সৃষ্ট সাহিত্য অন্তত আত্মজৈবনিক উপন্যাস মোমেনের জবানবন্দী (১৯৪৬), উপন্যাসিকা (অনেকের বিচারে বড় গল্প) মফিজন (১৯৪৬), স্মৃতিকথা পল্টনজীবনের স্মৃতি (১৯৪০) এবং কয়েকটি ছোটগল্প বহু সমালোচকের মতে কালোত্তীর্ণ রচনা। ইদানীং তাঁর বই দুষ্প্রাপ্য, কিছু বই পারিবারিকভাবে প্রকাশিত হলেও, তা বিতরণ-বিপণনে পিছিয়ে এবং তাই পাঠে ও আলোচনায় প্রায় অনুপস্থিত বললেই চলে। দুর্ভাগ্য, বাংলাদেশ তার একজন শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পীকে ভুলেই থাকল।

এ রকম একটা সময়ে তাঁকে নিয়ে গবেষক-প্রাবন্ধিক মোরশেদ শফিউল হাসানের চারটি প্রবন্ধের একটি সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। এই লেখক তাঁর বিভিন্ন লেখা ও বইয়ের মাধ্যমে ইতিমধ্যে সাহিত্যবিচারে নিজের যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। আমি মাহবুব–উল আলমের দৌহিত্র হলেও অপক্ষপাত থেকেই নিঃসংশয়ে তাঁর সাহিত্যিক উচ্চতা এবং সেই সঙ্গে মোরশেদের তাঁকে বিচারের যোগ্যতা উভয় বিষয়েই গভীর আস্থা পোষণ করি।

মোরশেদের বইটির মূল শিরোনাম মাহবুব–উল আলম এবং উপশিরোনাম একজন সত্যসন্ধ লেখকের প্রতিকৃতি। শুরুর প্রবন্ধটি তাঁর জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং তাই ১৯৯৮ সালে রচিত। সূচনাতেই মাহবুব-উল আলমকে ‘আমাদের পুরোধা শিল্পী’ আখ্যায়িত করে মোরশেদের মূল্যায়ন: ‘আমাদের কথাসাহিত্যের সাবালকত্ব প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও এককভাবে তাঁর অবদান মনে হয় সর্বাধিক।’ কিন্তু তবু কেন তিনি পাঠক-সমালোচকের মনোযোগ পেলন না, তার তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন লেখক। রাজধানীর বাইরে বসবাস, কোনো দল বা গোষ্ঠীভুক্ত না হওয়া এবং তৃতীয় কারণটি উদ্ধৃত করে জানাচ্ছি, ‘জীবনবোধ ও শিল্পদৃষ্টির দিক থেকে তিনি ছিলেন সেই মহতের লেখক, সমকাল কমই যাঁদের বুঝতে পারে।’

মোরশেদ শফিউল হাসানের আলোচনা পড়তে পড়তে মনে হয় মাহবুব-উল আলমের গদ্যশৈলীর বৈশিষ্ট্য, ভাবের গভীরতা ও প্রকাশের বাক্সময় গতি যেন তাঁর লেখায়ও ভর করেছে। পল্টনজীবনের স্মৃতি সম্পর্কে মোরশেদের মন্তব্য, ‘একজন সৈনিকের স্মৃতিচারণ মাত্র নয়, বাঙালি মুসলমানের আত্মবিশ্বাসের ইতিহাস সম্পর্কে বীরত্বগাথাও বটে।’ তাঁর সঙ্গে এ মন্তব্যেও আমি একমত যে সমগ্র বাংলা সাহিত্যের প্রেক্ষাপটেও তাঁর আত্মজৈবনিক উপন্যাস মোমনের জবানবন্দী, উপন্যাসোপম বড় গল্প মফিজন কিংবা স্মৃতিকথা পল্টনজীবনের স্মৃতিকে বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকৃতী হিসেবেই গণ্য করা যায়। অন্নদাশঙ্কর রায় বন্ধু মাহবুবকে চিঠিতে (৪ জুলাই ১৯৫২) লিখেছেন, ‘পূর্ববঙ্গে যে সাহিত্য জন্ম নেবে, তার দিকে আমরা বুকভরা প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে আছি। আপনি তার একজন দিকপাল ও দিশারী। আমার মতে আপনার চেয়ে বড় ওখানে আর কেউ নেই।’ (আলাপ)

মাহবুব-উল আলম নিজেও স্বীকার করেছেন এবং অন্নদাশঙ্কর রায়ও লিখেছেন যে তাঁর সাহিত্য এলিমেন্টাল প্রকৃতির মতো খোলামেলা তার বর্ণনা এবং তাঁর সৃষ্ট সাহিত্যের মুখ্য চরিত্রগুলোও চলে ও বলে খোলামনে। নাগরিক কৃত্রিমতা থেকে মুক্ত সহজ স্বচ্ছন্দ সাবলীল মানব–মানবীই তাঁর লেখার উপজীব্য। তাঁর অনুসন্ধান এবং বয়ানও মাটি বা জল–হাওয়ার মতোই স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ত। সহজে তিনি খোলস পরান না কাউকে, কোনো ঘটনাকেও না। বরং আলো যেভাবে ছায়া ও অন্ধকারের খোলস সরিয়ে নগ্ন বাস্তবকে তুলে ধরে, তাঁর লেখাও যেন আলোকোজ্জ্বল সাবলীলতায় নগ্ন সত্যকে উদ্‌ঘাটিত করে। তাতে অনেক সময় আদিরস বা অশ্লীলতার অভিযোগ তাঁকে শুনতে হয়েছে। সেটা মোমেনের জবানবন্দীর জন্য যেমন, তেমনি মফিজন–এর জন্যও। জবানবন্দী প্রসঙ্গে মোরশেদ লিখেছেন, ‘কিন্তু এ “নিষিদ্ধ”, “যৌনতা গন্ধী” বিষয়গুলোর ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে গিয়ে আমার মনে হয় রচনাটির সত্য ও সৌন্দর্যমূল্যকে খানিকটা উপেক্ষাই করেছি।’ এ কারণে তাঁর মতে, ‘বইটি আজও তার প্রাপ্য মূল্য পায়নি।’ মফিজন–এর বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগের সোজাসাপ্টা জবাব দিয়েছেন আলোচ্য গ্রন্থের লেখক ‘আমাদের মধ্যযুগের কবি বা ইউরোপের রেনেসাঁস যুগের শিল্পীদের মতই মফিজন-এর স৶ষ্টাও মানবদেহকে বন্দনা করেছেন পবিত্র ও সুন্দর জ্ঞানে।’

সাধারণত মাহবুব-উল আলমের সাহিত্যকর্ম, বিশেষত আলোচিত তিনটি বই ও কিছু ছোটগল্পের বাইরে অন্যান্য সৃষ্টি নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। এর কারণ হয়তো তিনি প্রথম জীবনেই মূলত সৃষ্টিশীল সাহিত্য রচনা করেছেন এবং উত্তরকালে স্থানীয় ইতিহাস রচনা ও সামাজিক দায় পালনে অধিকতর মনোযোগী ছিলেন। এর ফলে তিনি নিজের সাহিত্যে সৃষ্টির ক্ষতি করেছেন এমন অভিযোগ জানিয়েছেন অন্নদাশঙ্কর রায়সহ সমকালীন ও পরবর্তীকালের অনেক সাহিত্যিক ও সাহিত্যের অনেক পাঠক।

মাহবুব-উল আলমের সমাজ ও সংস্কৃতিচিন্তা বিভিন্ন লেখায় প্রকাশ পেয়েছে। এ বিষয়ে তাঁর প্রথম বই সংকট কেটে যাচ্ছে (১৯৫৪), যেখানে কুমিল্লা প্রগতি মজলিস আয়োজিত সাহিত্য সম্মেলনে ও ঢাকায় তমদ্দুন মজলিস আয়োজিত সেমিনারে পঠিত প্রবন্ধসহ কয়েকটি লেখা সংকলিত হয়েছে। তাতে তাঁর পর্যবেক্ষণ, অভিজ্ঞতা এবং তা প্রকাশে দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তার মৌলিকত্ব, স্বকীয়তা এবং তাই স্বাতন্ত্র্য ও বৈচিত্র্য মনোযোগ দাবি করে। তবে এদিক থেকে বহুকাল দুষ্প্রাপ্য এবং অধুনা বিস্মৃত ভিন্নধর্মী বই মাহবুব-উল আলম ও অন্নদাশঙ্কর রায়ের পত্রালাপের সংকলন আলাপ (১৯৫২)। বইটি নিয়ে মোরশেদের বিস্তারিত আলোচনা সাতচল্লিশের দেশ ও সময়ের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে বলে আমার মনে হয়। দুই বঙ্গের দুই ধর্মের মুক্তমনের মৌলিক চিন্তার সংবেদনশীল দুই বর্ষীয়ান সাহিত্যিকের আলাপে উঠে এসেছে দেশভাগ, হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মতো অতি প্রাসঙ্গিক, স্পর্শকাতর, অপরিহার্য বিষয়ে স্পষ্ট, সৎ, বলিষ্ঠ অভিমত।

এ আলোচনায় বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁরা মতান্তরে জড়ান, কিন্তু আলোচনা থেকে সরে যান না, পরস্পরের প্রতি প্রীতি ও শ্রদ্ধাও হারান না। সংলাপ যে গুরুত্বপূর্ণ এবং তাতে যে একে অপরের ভুল ধারণা যেমন কাটাতে পারছেন, তেমনি কিছু কিছু বিষয়ে দ্বিমত সত্ত্বেও বন্ধুত্ব ও সহযাত্রাও যে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, তা স্বীকার ও তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন এই দুই মনীষী। চিঠিতে একধরনের চাপান-উতোর চলতে থাকে প্রধানত হিন্দু-মুসলমানের পার্থক্য এবং পার্থক্য সত্ত্বেও মিলনের সম্ভাবনার পথগুলো নিয়ে। এর মধ্যেই নানা বিষয়ে অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলিষ্ঠ মতামত প্রকাশ করেছেন দুজনেই। এ লেখাটি মূলত মাহবুব-উল আলম সম্পর্কে বলেই তাঁর কথাই তুলে ধরার চেষ্টা করছি। একটি আধুনিক রাষ্ট্রে ধর্ম প্রসঙ্গে মাহবুব-উল আলম লিখেছেন, ‘যে কোন আধুনিক রাষ্ট্রে ধর্ম একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। ভারত ও পাকিস্তানেও ইহার ব্যতিক্রম হইতে পারে না। কারণ আধুনিক পৃথিবীতে ধর্ম অপেক্ষাও বড় এবং আশু সমস্যা হইতেছে মানুষের পেটের ভাত এবং পিঠের কাপড় এবং রাষ্ট্রগুলি এই সমস্যার সমাধানেই এখন পর্যন্ত গলদ্ঘর্ম।’ তবে এই প্রসঙ্গে সংকট কেটে যাচ্ছে গ্রন্থে ব্যক্ত তাঁর বক্তব্য বিবেচনায় রাখা দরকার ‘পেটের ক্ষুধা, পিঠের কাপড় আর যৌন-বোধই মানুষের সবখানি নয়। অবশ্য, মানুষের বস্তুতান্ত্রিক চেহারার এইগুলিই প্রধান উপাদান। কিন্তু, এরও আড়ালে এবং উপরে রয়েছে যে মানুষ নৈতিক জয়ের মাধ্যমে যে মানুষ সৃষ্টি থেকে আজ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন অগ্রগতির ইতিহাস লিখে চলেছে সে মানুষকে আমরা যেন ক্রমেই ভুলে যাচ্ছি। সাহিত্যেও তার দেখা মিলছে ক্বচিৎ।’

এ কথা সত্যি মানবের বামনায়ন চলছে একালে। একদিকে নানা কৃত্রিম ভাবনা, আভরণ, আচার, প্রথা এবং অন্যদিকে অবিশ্বাস, সন্দেহ, ঘৃণা, সংঘাত উভয়ই কেবল বাড়ছে। এর আড়ালে মানুষের সত্যরূপ, শাশ্বত ভূমিকা, মহৎ উদ্ভাস বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মাহবুব-উল আলমের চরিত্রে যুগপৎ ‘অন্তরের সবল প্রসন্নতা’ (কাজী আবদুল ওদুদ ১৮৯৪-১৯৭০) এবং ‘চিত্তের অসাধারণ দৃঢ়তা’র (আহমদ শরীফ ১৯২১-১৯৯৯) সমন্বয় ঘটেছিল। আর অন্নদাশঙ্কর রায় (১৯০৪-২০০২) পেয়েছেন তার মধ্যে আদিম প্রকৃতির নিরাভরণ বলিষ্ঠ সততার নিদর্শন। তাঁর কিছু বিশ্বাস, ব্যাখ্যা, দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সহমত না হলেও মাহবুব-উল আলমের চারিত্রিক মাহাত্ম্য ও সাহিত্যিক সততা এবং নৈতিক মানবতা একালের পাঠককেও আকৃষ্ট ঋদ্ধ করবে বলেই আমাদের ধারণা। মোরশেদ শফিউল হাসানের পরিশ্রমের মূল্য পরিশোধ হবে তখনই, যখন এ বইয়ের সূত্রে হলেও, একালের পাঠক আমাদের সাহিত্যের এক ‘দিকপাল’ ও ‘দিশারির’ (অন্নদাশঙ্কর রায়) প্রতি দৃষ্টি ফেরাবে।

মাহবুব-উল আলম: একজন সত্যসন্ধ লেখকের প্রতিকৃতি

মোরশেদ শফিউল হাসান, 

প্রকাশক: টইটম্বুর, ঢাকা

প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দাম: ২৫০ টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দেখেন ২২৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়
  • নৃত্যশিল্পীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
  • চুরির অপবাদ দিয়ে যুবককে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা
  • ভ্যাটিকানে কেন একজন আমেরিকান পোপ
  • সাহিত্যের এক দিকপাল ও দিশারি
  • রাজবাড়ীতে চুরির অভিযোগে তরুণকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪
  • রাজধানীতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থীসহ ২ যুবক খুন
  • সোনারগাঁয়ে ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়
  • বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় জামিন, কাশিমপুর‌ কারাগার থেকে মুক্ত ২৭ জন