Samakal:
2025-09-18@04:06:32 GMT

হ্যাকার যুদ্ধে ডিডস

Published: 18th, May 2025 GMT

হ্যাকার যুদ্ধে ডিডস

ভারত-পাকিস্তানের আড়াই হাজারের বেশি সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের সার্ভারে গত এক মাসে ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অব সার্ভিস (ডিডস) হামলা চালিয়েছে সুপরিচিত ও বিদেশি হ্যাক্টিভিস্ট চক্র। আবার এ নিয়ে কিছু মিথ্যা তথ্যও ছড়াচ্ছে। লিখেছেন সাব্বিন হাসান

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পেহেলগাম ঘটনার পর থেকেই কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে সাংঘর্ষিক আর মুখোমুখি রূপ ধারণ করে।
অন্যদিকে শুরু হয় আরেক যুদ্ধ– সাইবার যুদ্ধ, যা এখনও চলছে। কারণ ছাড়াই বিদেশি সাইবার চক্র নিজেদের কারিগরি দক্ষতার পরীক্ষায় নেমেছে। সারাবিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এমন যুদ্ধে
অংশ নেয় আগ্রহীরা।

আপাতত যুদ্ধ থেমে গেলেও দুই দেশের সাইবার যুদ্ধ এখনও চলমান। সাইবার জগতে এখনও বন্ধ হয়নি বিরোধী মতবাদের হ্যাকার চক্রের গুপ্ত হামলা। অন্যদিকে, ভারত-পাকিস্তানে থেমে নেই বিদেশি সাইবার হামলা। ভারত-পাকিস্তান হ্যাকার সামলাতে বহুগুণ দূরদর্শী সাইবার শক্তি প্রয়োগ ও নিয়োগ করেছে বলে জানা গেছে। সঙ্গে রয়েছে বহু বিদেশি হ্যাকার চক্রের অর্থের বিনিময়ে সময়োপযোগী উৎপাত। দুই দেশের সম্পর্ক অবনতিতে যা আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে। যারা উত্তপ্ত কূটনৈতিক আবহে কারণ ছাড়াই হামলা করছে। ভারত-পাকিস্তানের সরকারি-বেসরকারি ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার হচ্ছে সাইবার হামলার মূল লক্ষ্য। যার মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়, সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর ও জাতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো জনসেবামূলক দপ্তর, রেল ও বিমান সংস্থার মতো পরিবহন পরিষেবা দপ্তর– সবই রয়েছে আক্রমণের লক্ষ্য। সবখানে আক্রমণ হয়েছে দফায় দফায়। ফলে সাইবার সুরক্ষায় নিয়োজিত দপ্তর রীতিমতো নির্ঘুম রয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের ভেতরে স্থিরতা দৃশ্যমান হলেও সাইবার জগৎ কিন্তু উত্তপ্তই রয়েছে। সাইবার সুরক্ষায় নিয়োজিত কয়েকটি সংস্থা বলছে, গত ২২ এপ্রিল থেকে ১০ মে সময়ের মধ্যে অন্তত হাজারের বেশি সাইবার হামলা হয়েছে দুটি দেশেই। যার পেছনে কাজ করেছে বিদেশি হ্যাকার চক্র। আরেক সাইবার সুরক্ষা সংস্থা ফ্যালকনফিডস (ডট) আইও দাবি করেছে, দুই দেশের কমপক্ষে আড়াই হাজারের বেশি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সার্ভারে ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অব সার্ভিস (ডিডস) হামলা চালিয়েছে সুপরিচিত আর বিদেশি হ্যাক্টিভিস্ট চক্র। সর্বাধিক হামলা পরিচালনা করা হয় ৭ থেকে ১০ মে সময়ের মধ্যে। যার মধ্যে বেশির ভাগ টার্গেট ছিল সরকারি পরিষেবার সব প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে, দুই দেশেরই শিক্ষাক্ষেত্রে ৮ শতাংশ, ফিন্যান্স খাতে ৭ শতাংশ, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ৬ শতাংশ এবং টেলিকম খাতে হামলার গ্রাফ ছিল উল্লেখযোগ্য।

ঠিক কোন জায়গা থেকে হামলা পরিচালনা করা হয়েছে, ওই তালিকায় ভারত-পাকিস্তান ছাড়াও বিদেশি সূত্রে পাওয়া যাচ্ছে মরোক্কান সোলজার্স, টিম আর৭০ (রাশিয়া), লুলজসেক আরবস (পশ্চিম এশিয়া), ইসলামিক হ্যাকার আর্মি (ইরাক) এবং টিম আজারেল-অ্যাঞ্জেল অব ডেথের (প্যালেস্টাইন) মতো সাইবার চক্রের নাম।
হ্যাকার সূত্রের অনুসন্ধানে অবাক করার মতো তথ্য পেয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ওই সব সাইবার হামলা পরিচালনা করা চক্রের অধিকাংশই হ্যাকার সিন্ডিকেটের অংশ নয়; বরং বেশির ভাগই বিদেশি স্ক্রিপ্ট কিডজ বা তরুণ হ্যাকার, যারা প্রি-রিটেন স্ক্রিপ্ট ও টুলস ব্যবহার করে সাইবার লড়াইয়ে কারণ ছাড়াই অংশ নিয়েছে নিজেদের পরিচিত করতে। হামলার আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল দক্ষতার যাচাই করা।

সারাবিশ্ব যখন মুখিয়ে ছিল, তখন নিজেদের তাবৎ মিডিয়ার কাছে জাহির করতেই ঘটেছে এমন বহুমাত্রিক বিদেশি হামলা।
সাইবার সুরক্ষা সংস্থা ক্লাউডসেক অবশ্য বলছে, ওই সব স্ক্রিপ্ট কিডজরা টাকার জন্য হ্যাক করতে উদ্যত হয়েছে, তা ঠিক বলা যাবে না। বরং তাদের অধিকাংশই মতাদর্শ প্রদর্শনের স্বার্থে সাইবার হামলা করেছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেটে এসব হামলার সংখ্যা, সক্ষমতা ও পরিসর নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, তা বহুলাংশে মিথ্যা।
তাই খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো তেমন কারণ দেখছেন না সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। তবে সাইবার জগতে এমন লড়াই নতুন মাত্রা পাবে,
তা প্রায় নিশ্চিত করেই বলেছেন বিশ্লেষকরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত