হায়দরাবাদে ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আট শিশুসহ নিহত ১৭
Published: 18th, May 2025 GMT
ভারতের হায়দরাবাদে আইকনিক চারমিনারে কাছের এক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নারী-শিশুসহ অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত তা জানা যায়নি।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দমকল বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, আজ রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান দমকল বাহিনীর সদস্যরা। তিনি আরও বলেন, আগুন নেভাতে ১১টি ফায়ার ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, যে ভবনে আগুন লেগেছে সেটির নাম ‘গুলজার হাউজ’। বাড়িটির নিচে সোনার অলঙ্কারের বেশ কয়েকটি দোকান ছিল। দোকানদারদের পরিবারের সদস্যরা থাকতেন উপরতলায়।
এনডিটিভি লিখেছে, যে এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেখানে সারি সারি জুয়েলারি দোকান আছে, এসব দোকানের অনেকগুলো শতাব্দীপুরনো এবং একে অপরের গা ঘেঁষে অবস্থিত।
তেলেঙ্গানার মন্ত্রী পুনম প্রভাকর জানিয়েছেন, সব মৃতদেহ উদ্ধার করে সেগুলো হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অগ্নিকাণ্ড নিয়ে রাজ্য সরকার শিগগিরই সব তথ্য জানাবে।
এ ঘটনায় শোক জানিয়ে নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভবনটিতে উদ্ধারকাজ এখনও চলছে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেসের রাজ্যসভা সদস্য এম অনিল কুমার যাদব। তিনি বলেন, ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এটি একটি বাজার এলাকা। আমি দমকল ও অন্যান্য বিভাগকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, তারা সর্বোচ্চ যতটুকু করা যায়, ততটুকু করেছে। আগুন নেভানো হয়েছে।’
উদ্ধারকাজ চলছে, ভবনটির ভেতরে এখনও কয়েকজন আটকে আছেন বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয় পদক্ষেপে সমস্যা হলে আলোচনা করে সমাধান: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, ভারতের পদক্ষেপের বিষয়ে আমরা এখনও অফিসিয়ালি কিছু জানি না। ফরমালি জানার পর ব্যবস্থা নিতে পারবো। সরকারি সংস্থাগুলো বিশ্লেষণ করে উপলব্ধি করার চেষ্টা করছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা করণীয় নির্ধারণ করবো। সেখানে যদি সমস্যা দেখা দেয় বা তৈরি হয় তাহলে উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবো
রবিবার (১৮ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নিজেদের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। দেশটি গতকাল শনিবার জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে শুধু নাভা শেভা এবং কলকাতা সমুদ্র বন্দর দিয়ে এসব পণ্য আনা যাবে। তবে ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে যেসব পণ্য রপ্তানি করা হবে সেগুলোর ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।
ভারতের এমন পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে আপনারা কী ভাবছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা এখনও অফিসিয়ালি ভারতের পদক্ষেপের বিষয়ে কিছু জানি না। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ও নিউজ থেকে আমরা জানি তারা স্থলবন্দর বিশেষ করে আখাউড়া, ডাউকিস্থল বন্দরসহ কিছু সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা ফরমালি জানার পর ব্যবস্থা নিতে পারবো। তবে আমাদের বিশ্লেষণ চলছে, সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলো সেটা করছে। আমরা উপলব্ধি করার চেষ্টা করছি, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা করণীয় নির্ধারণ করবো।’’
এই সিদ্ধান্তের প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশ থেকে খুব বেশি যে সব কিছু যায় তা কিন্তু না। গার্মেন্টস শিল্পের একটা বড় পরিমাণ যায়। আপনারা এটা জানেন যে, প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জনই আমাদের বড় লক্ষ্য। এটা দুই জনের জন্য লাভজনক বিষয়। আমরা নিশ্চয়ই মনে করি ভারত নিজেও একটা টেক্সটাইল বা বস্ত্র শিল্পে সমৃদ্ধ দেশ। এরপরও যখন আমাদের দেশ থেকে এসব পণ্য রপ্তানি হয় সেটা আমাদের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করেই। তবে আমরা আশা করি উভয় দেশের ভোক্তা ও উৎপাদনের স্বার্থে এটা চলমান থাকবে।’’
ট্রান্সশিপমেন্ট এবং রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘ট্রান্সশিপমেন্টের প্রভাব আমাদের নেই। আমরা নিজেদের সক্ষমতা ব্যবহার করে নিজস্বভাবেই এই সমস্যার সমাধান করেছি।’’
‘‘অবশ্যই, এটা তো প্রতিযোগিতায় সক্ষমতার বিষয়। বিভিন্ন সময় আপনারা দেখছেন আমরা যেহেতু ভৌগোলিকভাবে কানেক্টেড একটা দেশ। আমাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা, পরিবহন ব্যয়সহ অন্যান্য জিনিসগুলো নির্দিষ্ট। এক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন সময় আমাদের কৃষিপণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করি, ভারতও করে। সেটা চলমান একটা প্রক্রিয়া। এটা বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়া আমরা। এ বিষয়েও কাজ করছি।’’
‘‘আমাদের বেশ কিছু বন্দর এখনও চালু আছে। আমাদের সংস্থাগুলো কাজ করছে। আমি এখনও রিপোর্ট দেখিনি। আপনারা যেমন সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখেছেন আমিও সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখেছি। আমাদের আরো দুই একদিন সময় লাগবে, পুরো পরিস্থিতিটা জানার জন্য আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। আজ না হয় কালকের মধ্যে তথ্য পেয়ে যাবো, তখন আমরা আরো ভালোভাবে জানতে পারবো।’’
ভারতের সঙ্গে কী তাহলে আলোচনায় যাবেন এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘প্রয়োজনে সব কিছু করবো। তবে এ বিষয়টি আমাদের এখনও অফিসিয়ালি জানানো হয়নি।’’
যে দুটি সিদ্ধান্ত আমরা দেখলাম সেটা কি সাম্প্রতিক দুই দেশের সম্পর্কের কারণে হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমার কাজ বাণিজ্য আমি এটাতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাই। সবসময় যেটা বলে এসেছি আমি উদার বাণিজ্যে বিশ্বাসী। আমার কাছে বাণিজ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমার দেশের ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য বাণিজ্য উদারিকরণ ও বাণিজ্য ইনক্লুশন ছাড়া আর কোনো রাস্তা আমি দেখি না।
সরকার বলছে আমরা বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়ন করবো, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় করবো অথচ পরিস্থিতি উল্টো দেখা যাচ্ছে, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এই জিনিসগুলোই আলোচনায় নিয়ে আসবো। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন ভারতের সঙ্গে আমাদের যে বাণিজ্য সেটা ভারতের দিকেই অধিক ভারী। আমরা নিশ্চয়ই এই অবস্থানগুলো তুলে ধরবো। একই সঙ্গে আশা করছি এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
এই ধরনের সিদ্ধান্তে ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি বাড়বে সেটা কীভাবে কমিয়ে আনবেন এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, এটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, এক দিনে তো আর বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারবেন না। আমরা যেটা ভারত থেকে রিসোর্স করি সেটা পার্শ্ববর্তী অঞ্চল হিসেবে, ভারতও সেটা করে। সেটা প্রাকৃতিক বিষয়ের কারণেই হয়ে আসছে। আমরা আমাদের বৈচিত্র্য করণের মাধ্যমে ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা বাণিজ্য বৃদ্ধি করবো।
ঢাকা/হাসনাত//