সিলেটে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, এখনো বিপৎসীমার নিচে
Published: 21st, May 2025 GMT
সিলেটে টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। তবে কোনো নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। বৃষ্টি ও ঢল অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরে সিলেটের নদ-নদীতে ক্রমাগত পানি বেড়েই চলছে। ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলই পানি বাড়ার মূল কারণ। ভারতে বৃষ্টি কমে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এ ছাড়া সিলেটে টানা ভারী বর্ষণও পানি বাড়ার অন্যতম কারণ।
পাউবোর তথ্যমতে, আজ সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদ-নদীতে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে পানি বাড়ছে।
এদিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে উপজেলার নদ-নদীর পানি। গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। একইভাবে কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরেও পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে।
আরও পড়ুনসিলেটে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে নগরবাসী১৯ ঘণ্টা আগেগোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী সকাল ৯টার দিকে জানান, তাঁর উপজেলার কোনো গ্রাম এখনো প্লাবিত হয়নি। তবে নদ-নদীর পানি বেড়েই চলছে। হাওরেও পানি ঢুকেছে। তাই আগাম বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কায় স্থানীয় প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পানি বৃদ্ধি পেলেও কারও পানিবন্দী অবস্থায় থাকার খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে। পাশাপাশি জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যোগাযোগ করলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কোনো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে স্থানীয় প্রশাসন ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে স্বেচ্ছাসেবী, সরকারি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাৎক্ষণিক সব ধরনের উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নদ নদ র প ন পর স থ ত উপজ ল র ব পৎস ম
এছাড়াও পড়ুন:
অব্যাহত ‘মব সন্ত্রাস’ করে বিচার-সংস্কার ও নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস চলছে: বাম গণতান্ত্রিক জোট
অব্যাহত ‘মব সন্ত্রাস’ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস চলছে বলে মনে করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। শুক্রবার জোটের এক যৌথ বিবৃতিতে এ মন্তব্য করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের পটিয়া, কুমিল্লার মুরাদনগর, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, ফরিদপুরসহ সারা দেশে অব্যাহত মব সন্ত্রাস, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা ও নীরবতায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানিয়ে এই বিবৃতি দেওয়া হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী এই যৌথ বিবৃতি দেন।
নির্বাচনে যত বিলম্ব হবে, সংকট তত বাড়বে মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি হতে চলেছে। দেশবাসীর প্রত্যাশা গণ–অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচন করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু অব্যাহত মব সন্ত্রাস করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস চলছে। নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, সংকট তত বাড়তে থাকবে।’
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, অভ্যুত্থানের পরে মাজার ভাঙা, বাউল আখড়া, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর হামলা, আদিবাসীদের ওপর নির্যাতন, নারীদের পোশাক নিয়ে মোরাল পুলিশিং ও সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন, ভাস্কর্য, ম্যুরাল ভাঙা হয়েছে এবং তা অব্যাহত রয়েছে, যা খুবই উৎকণ্ঠার বিষয়।
বিবৃতিতে বাম নেতারা বলেন, শুধু মব সন্ত্রাস নয়, কোনো কোনো দল ও নেতৃবৃন্দের বক্তব্য–বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধকে চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান দিয়ে প্রতিস্থাপনের কথাও বলা হচ্ছে,Ñযা দেশকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেবে এবং যা চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।
সরকার মবকে প্রশ্রয় দিচ্ছে কি না—এমন প্রশ্ন তুলে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারের প্রেস সচিব যেভাবে মবকে প্রেশার গ্রুপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং তথ্য উপদেষ্টা কর্তৃক মবকে গণ–আদালত, গণজাগরণ মঞ্চসহ অন্যান্য গণ–আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করেছেন, এতে জনমনে প্রশ্ন হতে পারে যে তাহলে সরকার কি মবকে প্রশ্রয় দিচ্ছে?’
বিবৃতিতে সারা দেশে মব সন্ত্রাস বন্ধে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা ও নীরবতার কঠোর সমালোচনা করে অবিলম্বে মব বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং মব সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।