চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার এলাকায় টিনের বসতঘর বিদ্যুতায়িত হয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মো. মন্টু ঢালী (৭০) ও মো. আনোয়ার হোসেন খান (৫৫) নামে দুইজন মারা গেছে।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুরান বাজার দুই নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম জাফরাবাদ গ্রামের ঢালী বাড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। মন্টু ঢালী ওই বাড়ির মৃত আব্দুল ঢালীর ছেলে এবং আনোয়ার একই এলাকার খান বাড়ির আমিন খানের ছেলে।

মন্টু ঢালীর ছেলে আল আমিন ও তার স্ত্রী ফাহিমা বেগম জানান, ধারণা করা হচ্ছে আর্থিং সমস্যা থেকে বসতঘর বিদ্যুতায়িত হয়েছিল। ওই সময় আনোয়ার খান নতুন আত্মীয়তার বিষয়ে কথা বলে চলে যাচ্ছিলেন। ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় তিনি ঘরের বেড়ার টিনের মধ্যে হাত দিলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। 
তাকে বাঁচাতে গিয়ে মন্টু ঢালীও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরে দু’জনকেই আহত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.

আসিবুল আহসান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তারা দুইজন মৃত্যুবরণ করেছেন।

এদিকে খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহসীন আলম উভয় মরদেহের সুরতহাল তৈরি করেন।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, এই ঘটনায় নিহত দুই পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই। থানায় দুটি পৃথক অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। স্বজনরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (এডিএম) কাছে আবেদন করায় দুটি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ