দেশে সংকট চলছে, উত্তরণে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য : গণতন্ত্র মঞ্চ
Published: 25th, May 2025 GMT
দেশ এখন সংকটময় অবস্থা পার করছে। জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভাজন বাড়ছে। সরকারের সঙ্গেও রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব বাড়ছে। এ থেকে উত্তরণে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিভাজনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং দলীয় স্বার্থ ত্যাগ করে জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও ভূমিকা রাখতে হবে।
আজ রোববার দুপুরে গণতন্ত্র মঞ্চের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা উঠে আসে। দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর তোপখানা রোডে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশ জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্টের পরে যত দিন যাচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। এটাই বর্তমান সংকট।
এমন পরিস্থিতিতে দলীয় স্বার্থ ত্যাগ করে জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, জাতীয় স্বার্থ বাস্তবায়নের প্রধান দায়িত্ব সরকারের, তারপর রাজনৈতিক দলগুলোর। সরকারকে এমন ভূমিকা নিতে হবে, যাতে কোনো একটি বিশেষ পক্ষের প্রতিনিধি মনে না হয়।
হাসনাত কাইয়ুম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বা এর আগে স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোকে ব্যবহার করে গুম, খুন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার; সাংবিধানিক ও ক্ষমতা কাঠামোর সংস্কার এবং নির্বাচন ব্যবস্থাকে একটি নিয়মিত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিণত করতে হবে। কিন্তু এসব আকাঙ্ক্ষার কোনো কোনোটিকে এগিয়ে আনা বা পেছনে ফেলার জন্য কোনো কোনো রাজনৈতিক দল অশুভ অপতৎপরতা চালিয়েছে। এর ফলে বিভাজনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকারের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংযোগ থাকতে হবে। জাতীয় রাজনৈতিক কাউন্সিল গঠন করতে হবে। জাতীয় ঐক্য রক্ষার জন্যও এসব লাগবে। এটি না হওয়ায় বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব বাড়ছে।
আগামী জুলাই মাসের মধ্যে সরকারকে জুলাইয়ের সনদ বা জাতীয় সনদ প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটি করতে হবে। আর দ্বিমতের বিষয়গুলো মীমাংসা করার জন্য নির্বাচন দরকার। সে জন্য নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) থাকতে হবে। ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত নয়, সুনির্দিষ্ট সময়সীমা লাগবে। কারণ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতির বিষয়ও রয়েছে।
সংবিধান সংশ্লিষ্ট সংস্কারগুলো টেকসই করার জন্য সরকারকে রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্রীয় অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, দেশ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সে জন্য সরকারকে দলনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রাখতে হবে। যেসব বিষয়ে বিতর্ক আছে, সেসব বিষয়ে বিশেষ করে প্রয়োজনবোধে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।
আগামী এক মাসের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে জুলাই সনদ দেওয়ার বিষয়ে সরকারকে দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সাইফুল হক আগামী তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনের বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়ার আহাবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার, ঢাকা ভাসানী জনশক্তি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মেহেদী হাসান তালুকদার তপন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত সরক র র র জন য র র জন
এছাড়াও পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
ঢাকা-৮ আসনে দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান। তিনি বলেন, “ভোটের অধিকার জনগণের পবিত্র আমানত, এটি সচেতনভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জননেতা সাইফুল হক-এর ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন।
গণসংযোগের শুরুতে ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়।
সেখানে আকবর খান বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে অবিলম্বে ভোটের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে—২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে—ঢাকা-৮ আসনের বহু নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যে তরুণের এখন বয়স ২৫ বা ২৬, তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি, ভোট কী তা জানে না- এটি গণতন্ত্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমাদের নেতা সাইফুল হক জনগণের ভোটাধিকারের আন্দোলনে রাজপথে সংগ্রাম করে আসছেন। এর জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেও তিনি থেমে থাকেননি। ভোটাধিকার গণমানুষের দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগের ফসল। এই অধিকার ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।”
আকবর খান বলেন, “জননেতা সাইফুল হক গণমানুষের পরীক্ষিত নেতা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ যেন তাকে ভোট দিয়ে নিজেদের সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার কথা ও দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস সংসদে তুলে ধরার সুযোগ করে দেন- এটাই আমাদের আহ্বান।”
গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল, কমলাপুর, ফকিরাপুল, কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগরে এসে শেষ হয়। এতে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, কবি জামাল সিকদার, ফাইজুর রহমান মুনির, বাবর চৌধুরী, মহানগর নেতা যুবরান আলী জুয়েল, সালাউদ্দিন, রিয়েল মাতবর, আরিফুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু, গোলাম রাজিব, মাহমুদুল হাসান খান, ফয়েজ ইবনে জাফর, নান্টু দাস, শিবু মহন্ত ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
ঢাকা/এএএম/এস