রূপান্তরের আভাস দিয়ে আনচেলোত্তির ব্রাজিল দল ঘোষণা
Published: 27th, May 2025 GMT
বিশ্বকাপের পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, এবার ব্রাজিল দলের হাল ধরেছেন এক ইউরোপীয় ঘরানার মাস্টারমাইন্ড কার্লো আনচেলোত্তি। জুনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচগুলো সামনে রেখে তার ঘোষিত প্রথম স্কোয়াড দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এই ইতালীয় কোচ বড় ধরনের কৌশলগত রূপান্তরের দিকে হাঁটছেন।
ব্রাজিলের ২৬ সদস্যের এই দল দেখলেই চোখে পড়ে কিছু নতুন নাম, কিছু চেনা মুখের অনুপস্থিতি। সবচেয়ে বড় কথা, এই তালিকায় নেই চোট থেকে ফেরা নেইমার। এ নিয়ে জল্পনা থাকলেও আনচেলোত্তি পরিষ্কার করেছেন, ‘‘নেইমারের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে, সে সেরে উঠলে ফিরে আসবে।’’
নেইমারের অনুপস্থিতি একদিকে যতটা বিস্ময়, রদ্রিগোর বিশ্রাম ঠিক ততটাই কৌশলগত। ক্লান্ত রদ্রিগোকে বিশ্রামে রাখার সিদ্ধান্তটা এসেছে কোচ ও খেলোয়াড়—দুজনের বোঝাপড়ায়।
আরো পড়ুন:
চিকিৎসক প্রেসিডেন্ট ও কোচিং কিংবদন্তিতে নতুন অধ্যায় ব্রাজিলে
আনচেলত্তির স্বপ্নদল: ঘোষণার আগেই ১২ তারকার নাম ফাঁস
তবে হতাশার ভিড়ে আশার আলোও আছে। মিডফিল্ডে ফিরেছেন কাসেমিরো, যিনি দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। পাশাপাশি দলে জায়গা করে নিয়েছেন বেশ কিছু উদীয়মান প্রতিভা, যাদের মধ্যে পালমেইরাসের এস্তেভাও অন্যতম চমক।
আক্রমণভাগে থাকছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রিচার্লিসন ও মার্তিনেল্লির মতো পরিচিত নাম। উইং থেকে জ্বলে উঠতে পারেন অ্যান্টনি ও রাফিনিয়া। গোলবারে আছেন লিভারপুলের আলিসন, অভিজ্ঞ ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে। ডিফেন্সে ভরসা মারকিনিয়োস, বেরালদো ও ওয়েসলির উপর।
ব্রাজিল আগামী ৫ জুন খেলবে ইকুয়েডরের মাঠে। এরপর ১০ জুন নিজভূমে প্যারাগুয়ের মুখোমুখি হবে সেলেসাওরা।
দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আপাতত ১৪ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ব্রাজিল অবস্থান করছে চতুর্থ স্থানে। শীর্ষ ছয় দল সরাসরি যাবে বিশ্বকাপে, আর সপ্তম স্থানের দল পাবে প্লে-অফের সুযোগ। সুতরাং, প্রতিটি পয়েন্ট এখন স্বর্ণমূল্য!
এখন প্রশ্ন হলো, এই রূপান্তরাত্মক স্কোয়াড কি ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে নতুন চেহারায় দেখতে দেবে? আনচেলোত্তির এই ভিন্নধর্মী সিদ্ধান্ত কি সঠিক পথে এগোচ্ছে? না কি বড় কিছু চাওয়া-পাওয়ার মাঝপথে হারিয়ে যাবে ব্রাজিলের ঐতিহ্য? উত্তর মিলবে মাঠে।
২৬ সদস্যের ব্রাজিল দল:
গোলরক্ষক:
আলিসন (লিভারপুল), বেন্তো (আল নাসর) ও উগো সুজা (করিন্থিয়ানস)।
ডিফেন্ডার:
আলেক্স সান্দ্রো, দানিলো, লিও ওরতিজ ও ওয়েসলি (সব ফ্ল্যামেঙ্গো), বেরালদো ও মারকিনিয়োস (পিএসজি), আলেক্সসান্দ্রো (লিল), কার্লোস আলগুস্তো (ইন্টার মিলান) ও ভ্যান্ডারসন (মোনাকো)।
মিডফিল্ডার:
আন্দ্রেয়াস পেরেইরা (ফুলহাম), ব্রুনো গিমারাইস (নিউক্যাসল), আন্দ্রেই সান্তোস (স্ত্রাসবুর্গ),
কাসেমিরো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), এদেরসন (আতালান্তা) ও গেরসন (ফ্ল্যামেঙ্গো)।
ফরোয়ার্ড:
এস্তেভাও (পালমেইরাস), অ্যান্টনি (বেতিস), গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি (আর্সেনাল),
মাতেউস কুনিয়া (উলভস), ভিনিসিয়ুস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ), রাফিনিয়া (বার্সেলোনা) ও রিচার্লিসন (টটেনহাম)।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আনচ ল ত ত ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী মোদির
কলকাতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৬তম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন (সিসিসি) উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেনা সম্মেলন একটি দ্বিবার্ষিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত শীর্ষস্তরীয় মতবিনিময়ের আসর।
অপারেশন সিঁদুরে’র পর এটিই প্রথম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, তিন বাহিনীর প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান, প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধানও।
আরো পড়ুন:
অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি নরম হওয়ার দিন শেষ: ট্রাম্প
আসামে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, ৫ বাংলাদেশি ছাত্রকে বহিষ্কার
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড সদর দপ্তর কলকাতার বিজয় দুর্গে তথা ফোর্ট উইলিয়ামে আগামী তিনদিন এই সম্মিলিত সেনা সম্মেলন চলবে।
এই সম্মেলন সেনার তিন বাহিনীর সর্বোচ্চ চিন্তাভাবনামূলক ফোরাম, যা দেশের শীর্ষ অসামরিক ও সামরিক নেতৃত্বকে ধারণাগত ও কৌশলগত স্তরে মতামত বিনিময়ের জন্য আয়োজন করা হয়েছে ৷ কলকাতার আগে সর্বশেষ সম্মিলিত সেনা সম্মলেন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২৩ সালে ভোপালে। অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপটে, এই বছরের সম্মেলন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এবারের সম্মেলনে সংস্কার, রূপান্তর, পরিবর্তন এবং অপারেশনাল প্রস্তুতির উপর জোর দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, ‘সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দু সশস্ত্র বাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, সংহতিকরণ এবং প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণে বিশেষ জোর দেওয়া। একই সঙ্গে শীর্ষস্তরের একাধিক ক্ষেত্রে অপারেশনাল প্রস্তুতির উপরও জোর দেওয়া হবে। তিনদিনের এই সম্মেলন সশস্ত্র বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা করা হবে, যাতে ক্রমবর্ধমান জটিল ভূ-কৌশলগত পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়।’
রবিবার আসাম সফর সেরে নির্ধারিত সময়ের থেকে বেশ কিছুটা পর দমদম বিমানবন্দরে নামেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা এবং উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। দলীয় কোনো কর্মসূচি না থাকলেও মোদিকে দেখতে ভিড় ছিল বিজেপি সমর্থকদের। ভিড় দেখে গাড়ি থামিয়ে হাত নেড়ে জনসংযোগ সারেন মোদি। সেখান থেকে তার ২৪ গাড়ির কনভয় পৌঁছায় রাজভবনে। সেখানেই রাত্রিবাস করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। তিনি রাত কাটান ফোর্ট উইলিয়ামে।
চলতি বছরে এই নিয়ে চতুর্থবার পশ্চিমবঙ্গে এলেন নরেন্দ্র মোদি। সকাল ৯ টাতেই রাজভবন থেকে ফোর্ট উইলিয়ামের দিকে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ফোর্ট উইলিয়ামে ছিলেন মোদি। দেড়টার পরে কলকাতা থেকে বিহারের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
একদিকে বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি। অন্যদিকে অস্থির চিন সীমান্ত। তার মধ্যে আবার নেপালে পালাবদল। দিনকয়েক আগে বাংলাদেশের উত্তরে চিন বিমানঘাঁটি তৈরি করতে চলেছে বলে একটি খবর ছড়ায়। ঘাঁটিটি নাকি আবার তৈরি হবে চিকেনস নেকের কাছেই। সবমিলিয়ে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিরাট এক জটিল সমীকরণ তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় কলকাতার বিজয় দুর্গে সেনা সম্মেলনের আয়োজন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ