সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য শিক্ষার্থীকে খয়রাতি মার্ক দেয়া হবে না : শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 31st, May 2025 GMT
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, আমরা উচ্চশিক্ষার দিকে যাবো। একই সাথে সেকেন্ডারী এবং হায়ার সেকেন্ডারীতেও আমরা মনোনিবেশ করবো। কিন্তু একটার পর একটা ক্রাইসিসের কারণে যে সকল কাজ করতে চাচ্ছি সেগুলো থেকে অন্যদিকে ধাবিত হচ্ছি।
বোর্ড পরীক্ষায় এ প্লাস এবং গোল্ডেন জিপিএ সয়লাব হয়ে যায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন টেস্টে ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী ফেল করে। এমনভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে ছাত্র যে মার্ক অর্জন করেছে তাই পাবে। রাষ্ট্র তাকে খয়রাতি কোনো মার্ক দিবে না। আমরা এই সস্তা জনপ্রিয়তা নেয়ার জন্য সেটা করবো না।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরে শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
এ সময় অধ্যাপক আবরার আরও বলেন, সবাইকে নিয়েই আমরা এমন কিছু নীতি প্রণয়ন করব। আসুন, আমরা সবাই মিলে এমন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এমন আকর্ষণীয় স্থান গড়ে তুলি, যাতে করে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই ভাবতে পারে কখন তারা স্কুলে যাবে। তারা ছুটির দিনগুলোতে কেন ভাববে না, কেন আজকে স্কুল বন্ধ? আমরা আমাদের বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাব। আমরা স্কুলে খেলাধুলা করব।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
আমরা আশা করি ভবিষ্যতে যারা রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবেন, তারা এই বিষয়গুলো যত্নের সাথে দেখবেন, যাতে স্কুলগুলো যেন শিক্ষার কেন্দ্রভূমিতে পরিণত হয়, তার জন্য তারা যত্নশীল থাকবেন।
তিনি বলেন, তরুণ সমাজ আমাদের নাগরিক হিসেবে পুন:প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমাদের যে নাগরিক অধিকার সেটা পুন:প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেছে এই তরুণ সমাজ। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম জীবদ্দশায় প্রজা হিসেবেই মৃত্যু হবে।
কিন্তু আবার নতুন করে নাগরিক হিসেবে বাঁচার সুযোগ পেয়েছি সেটা তরুণ প্রজন্ম এবং শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলনের কারণে হয়েছে। সে কারণে আমরা দায়বদ্ধ।
অধ্যাপক আবরার বলেন, শিক্ষক যে সম্মানের দাবীদার যে মর্যাদার দাবীদার সেটাকে আমরা নিশ্চিত করবো। অনেক সময় পেনশন পেতে ঘুরতে হয় সেগুলো আমরা দেখবো। আপনাদেও মর্যাদার বিষয়গুলো নিশ্চিত করবো। এগুলো আমাদের দায়িত্ব। আমরা সমস্ত স্কুলকে ভালো স্কুলে পরিণত করতে চাই।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ র জন য আম দ র আবর র
এছাড়াও পড়ুন:
তাজউদ্দীন থেকে সালেহউদ্দিন: ৫৪টি বাজেট কে, কখন, কীভাবে দিলেন
দেশের প্রথম বাজেট ছিল ছোট আকারের। আর ৫৪ বছর পর সেই বাজেটের কলেবর বড় হয়েছে, বেড়েছে প্রবৃদ্ধি। যত বাজেট দেওয়া হয়েছে, তার আকার কত ছিল, কে আর কবে তা উপস্থাপন করেছিলেন, পেশ করার সময় কী বলেছিলেন, তারই একটি বিবরণ দেওয়া হলো এখানে। বলে রাখা ভালো, বাজেট উপস্থাপন পদ্ধতির অনেক বদল হয়েছে। বাজেট পরিসংখ্যান প্রকাশের পদ্ধতিরও পরিবর্তন আনা হয়েছে। সরকারের আয় ও ব্যয়ের খাতে নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপির বাইরে নতুন নতুন উন্নয়ন ব্যয়ের খাত যুক্ত হয়েছে। ফলে এডিপির তুলনায় উন্নয়ন বাজেট আরও বড় হয়েছে।
১. মুজিবনগর সরকার, ১৯ জুলাই ১৯৭১
রাজস্ব আয় ৭,৭৪, ১৮,৯৯৮ টাকা, ব্যয় ৮,৬২, ৪৮,২০৪ টাকা। বাজেট ঘাটতি ৮৮,২৯, ২০৬ টাকা।
প্রথম বাজেটটি দিয়েছিল মুজিবনগর সরকার। তখন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এম মনসুর আলী। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এর অনুমোদন দিয়েছিলেন। সেই বাজেটের ব্যাখ্যামূলক টিকায় বলা ছিল, ‘আমাদের এখন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য দরকারি, অপরিহার্য ব্যয় মেটাতে বাজেট তৈরি করতে হচ্ছে। যেটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুদ্ধ প্রক্রিয়ায় সাহায্য করবে। বাজেট জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর, ১৯৭১- এই তিন মাস সময়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই আশায় এটা করা হয়েছে যে আমরা এই সময়ের মধ্যেই দেশকে স্বাধীন করতে পারব।’
২. তাজউদ্দীন আহমদ, ১৯৭২ / ১৯৭১-৭২ ও ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর, শনিবার, ৩০ জুন, ১৯৭২
একই সঙ্গে দুই অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হয়েছিল। ১৯৭১-৭২ অর্থবছরের বাজেটের মেয়াদকাল ছিল ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে ৩০ জুন, ১৯৭২।
ক.১৯৭১-৭২ অর্থবছর: রাজস্ব আয় ৪৮.৫২ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৯৯.১৩ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ৫১.৪৬ কোটি টাকা
খ.১৯৭২-৭৩ অর্থবছর: রাজস্ব আয় ২৯১.৫৮ কোটি, রাজস্ব ব্যয় ২১৮.৪৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৭৩.১৫ কোটি, উন্নয়ন, পুনর্নির্মাণ ও পুনর্বাসন ব্যয় ৫০১ কোটি টাকা, এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ৩১৮.৩০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৭১৯.৪৩ কোটি, মোট আয় ২৮৫.৩৮ কোটি, মোট ঘাটতি ৪২৭.৮৫ কোটি টাকা।
সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট দিয়েছিলেন দেশের প্রথম অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ। প্রথম বাজেট বক্তৃতা তেমন দীর্ঘ ছিল না। পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের পরিকল্পনার কথাই বেশি বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে এই বাজেট প্রচার না করে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের সামনে উপস্থাপন করতে পারলে আমি সুখী হতাম। তবে আমি আশা করি যে এর পরে আর কোনো দিন এইভাবে আমাদের বাজেট প্রচার করতে হবে না।’
তাজউদ্দীন আহমদ