বিপিএলে পিচেও বল রাখতে পারছে না-এরা কারা, কোত্থেকে এল এরা
Published: 11th, January 2025 GMT
চোখের ব্যথা নিশ্চয়ই কমেনি? বিপিএলে গতকাল শুবম রঞ্জনরা যে বোলিং দেখিয়েছেন, তাতে নিয়মিত ক্রিকেট দেখা চোখগুলো একটু ব্যথা করাই স্বাভাবিক। বল ফেলা হচ্ছে পিচের বাইরে, স্টাম্পের বাইরে একের পর এক লং হপ, বিমার—স্বীকৃত টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে এক বোলারের কাছে থেকে এমন অপ্রত্যাশিত সব ‘বৈচিত্র্য’ তো আর প্রতিদিন দেখা যায় না!
গতকাল ঢাকা ক্যাপিটালসের বোলার শুবম এমন ভানুমতির খেলাই দেখালেন। শুধু শুবমই নন, আরও আছেন, যাঁদের দেখে প্রশ্নটি উঠতেই পারে, ‘এরা কারা? কোত্থেকে এল এরা?’
শুবমের চেয়ে তবু ফারমানউল্লাহ ভালো। আফগান এই অলরাউন্ডার অন্তত পিচে প্রতিটি বল রাখতে পারেন। বল ব্যাটসম্যানদের পর্যন্ত ঠিকভাবে যাবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য দর্শকদের চিন্তায় থাকতে হয় না!
দলটির এতটাই দুরবস্থা যে তাঁদের দিয়ে বোলিং কোটা পূরণ করাতে হয়। ঢাকায় কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমানও আছেন। তবে ঢাকার বোলাররা যে ভয়াবহ বোলিং করছেন, এর বিজ্ঞাপন হয়ে উঠছেন শুবমরাই। শুবমদের কার্যকলাপ যেহেতু বলা হচ্ছে, কিন্তু তাঁদের চেনানোরও বোধ হয় দরকার আছে।
ভারতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা শুবম এখন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে খেলছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ আসরে সিরিজসেরা ক্রিকেটার তিনি। এই টুর্নামেন্টে ২৭৭ রান করার পাশাপাশি ৮ উইকেট নিয়েছেন। খেলেছেন মেজর লিগ ক্রিকেটে।
আরও পড়ুনযত রেকর্ড নিয়ে বিদায় নিলেন তামিম ৫০ মিনিট আগেযুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে এটিই সবচেয়ে বড় ঘরোয়া টুর্নামেন্টে। মানের দিক থেকেও ভালো। সেখানে ১২ ম্যাচে তাঁর রান ১৫১। এই ১২ ম্যাচে শুবম বোলিং করেছেন মাত্র ১ ওভার। সেই তাঁকেই কিনা শিশিরস্নাত বিপিএলে ৪ ওভার করে বোলিং করাতে হচ্ছে। আফগানিস্তান ‘এ’ দলে খেলা অলরাউন্ডার ফারমানউল্লাহ তো আফগানিস্তানের বাইরে কোনো দলেই খেলেননি।
উইলিয়াম বোসিস্টো.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।