ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবায় অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, বৈষম্য ও রোগীদের প্রতি অবহেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে একটি সংগঠন।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নাগরিক সংগঠন ‘ময়মনসিংহ ফোরামের’ উদ্যোগে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের এলাকায় মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সমন্বয়ক এহসান হাবীব, সাঈদ ইসলাম, আহসান উদ্দিন খান, আফজাল হোসাইন, আবু বক্কর সিদ্দিক রুমেল, তানিয়া সুলতানা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহের সমন্বয়ক জেনাস ভৌমিক, তানজিল মুনিম প্রমুখ।

সাঈদ ইসলাম বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসাকাঠামো পুরোদস্তুর ভেঙে পড়েছে। অপরিচ্ছন্নতা, রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার, আনসারদের ঘুষ গ্রহণ ও ট্রলিবয়দের স্বেচ্ছাচারিতা চলছে। উপজেলা থেকে আগত রোগীদের পরীক্ষার জন্য ক্লিনিকে পাঠানো হচ্ছে। সরকারি ওষুধ রোগীরা পাচ্ছে না।

এহসান হাবীব বলেন, হাসপাতালের রোগীদের হয়রানি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ জানাই। হাসপাতালে রোগীদের বিনা মূল্যে ওষুধপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই। ইতিপূর্বে হাসপাতালে বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হলেও বর্তমানে তা ব্যাহত হচ্ছে। এর পেছনে হাসপাতালের এক শ্রেণির অসাধু একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে, এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। আউটডোর সেবার ক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইন রোগীদের ভোগান্তির একটি অন্যতম কারণ। এই ভোগান্তি নিরসন করতে হবে। প্রয়োজনে আউটডোর সার্ভিসের ক্ষেত্রে ডাক্তারদের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

মানববন্ধন শেষে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানোর দাবিতে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেন তারা। স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘ময়মনসিংহ ফোরাম’ হাসপাতালটির স্বাস্থ্যসেবা অনিয়মের কিছু ধরন শনাক্ত করেছে। তার মধ্যে চিকিৎসকদের উদাসীনতা ও রোগীদের প্রতি চরম অবহেলা, কথাবার্তার আন্তরিকতার অভাব, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, আয়া, ওয়ার্ডবয় ও মাস্টাররোল কর্মচারীরা রোগীদের সঙ্গে নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন না করা, রোগী-রোগীর আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ আদায়, বাইরের দালাল সিন্ডিকেটের হাতে রোগী তুলে দেওয়ার মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকা। এ ছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে দালালের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি, হাসপাতালের পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় কর্তৃপক্ষে অবহেলা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা যন্ত্রপাতির রক্ষণাবেক্ষণ ও ত্রুটিযুক্ত যন্ত্রপাতির দ্রুত মেরামতের ক্ষেত্রে অবহেলা, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জটিল রোগীদের জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন না করে ভুল চিকিৎসা, প্রসূতি চিকিৎসায় যথেচ্ছাচারিতা, আউটডোর চিকিৎসায় অবহেলা ও রোগীকে বাইরের নির্দিষ্ট ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করিয়ে আনার অনৈতিক প্রবণতা, প্রয়োজনীয় আধুনিক মানসম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্সের অভাব, রোগীদের জন্য অতি নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের নিমিত্তে দ্রুত জনবলকাঠামো নিয়োগ করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ মোহন কলেজে সিট বরাদ্দ নিয়ে সংঘর্ষ, হল বন্ধ

ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজে হলের সিট বরাদ্দের নবায়ন নিয়ে দুই দল শিক্ষার্থীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অনির্দিষ্টকালের জন্য হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী তিন দিন কলেজের পাঠদান কার্যক্রমও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার (১২ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৮টার দিকে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ। তিন দিন পাঠদান বন্ধ থাকলেও পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা চলবে এবং মেয়েরা হলে থাকবে বলে জানান অধ্যক্ষ।

সংঘর্ষের বিষয়ে হল সুপার শাহজাহান করিম বলেন, হলের সিট বরাদ্দের নবায়ন নিয়ে আবাসিকের সঙ্গে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দুটি পক্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিন বিকেল ৫টা থেকে শুরু হওয়া ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

কোতোয়ালি থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলার সমন্বয়ক আশিকুর রহমান বলেন, হলের শিক্ষার্থীরা কলেজের অধ্যক্ষকে ক্ষমা চাইতে বলে অপমান করায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। অবিলম্বে হলে থাকা ছাত্রলীগের দোসর ও সহযোগীদের বের করতে হবে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ম অনুযায়ী হলের সিট বরাদ্দ দিতে হবে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রদলকে জড়িয়ে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন আনন্দ মোহন কলেজ, জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নেতারা।

এ বিষয়ে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দাউদ রায়হান ও মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহম্মেদ রবিন জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হলের সিট বরাদ্দ নিয়ে গন্ডগোল হয়েছে। কিন্তু একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাত্রদলকে জড়িয়ে অপপ্রচার করছে। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এফডিসিতে শুটিং ফেরাতে নানা উদ্যোগ, থাকছে শর্ত
  • ফ্লোর, ক্যামেরা ও যন্ত্রাংশের ভাড়া কমিয়ে এফডিসিতে শুটিং ফেরানোর উদ্যোগ
  • কিশোরগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহতের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১
  • মেলান্দহে আন্তনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল, তিন ঘণ্টা দেরিতে যাত্রা
  • ময়মনসিংহে একটি মাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা
  • এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরও ৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী, উচ্চতর স্কেল পাবেন ২৮৪২ জন
  • মেহেদি রাঙা দুই হাত, আড়ায় ঝুলছিল শিক্ষার্থীর নিথর দেহ
  • সিট নবায়ন নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আনন্দ মোহন কলেজ বন্
  • আনন্দ মোহন কলেজে সিট বরাদ্দ নিয়ে সংঘর্ষ, হল বন্ধ
  • ‘ছেলেরে তো ফিইরা ফাইতাম না, খুনিগো ফাঁসি চাই’